রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং পশ্চিমাদের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা

ইউক্রেন আক্রমণকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা অথবা ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে মস্কোতে তেমন একটা প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। জীবন গতি স্বাভাবিকই চলছিলো মানুষের মধ্যেও উদ্বেগ তেমন লক্ষ্য করা যায়নি ।কিন্তু বিশ্বের ব্যাংক লেনদেনের ব্যবস্থা সুইফট থেকে একের পর এক রুশ ব্যাংককে বহিষ্কার করা শুরু হলে মস্কোবাসীর মধ্যে বিশেষ উদ্বেগ লক্ষ্য করা গেছে।কেবল অর্থনৈতিকভাবেই রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি।সামাজিক, সাংস্কৃতিক নানাভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।পশ্চিমাদের সঙ্গে এ অর্থনৈতিক যুদ্ধের শুরুটা করেছিল রাশিয়া এবং এর সঙ্গে ইউক্রেনও জড়িত ছিল। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ইউরোমাইডান বিক্ষোভ(ইউক্রেনের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ভিক্তর ইয়ানুকোভিচের সরকার) ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন-ইউক্রেন অ্যাসোসিয়েশন অ্যাগ্রিমেন্ট শীর্ষক একটি চুক্তি করতে যাচ্ছিল। কিন্তু রাশিয়ার চাপে পড়ে সে চুক্তি থেকে সরে আসায় ইউক্রেনবাসী রাজধানী কিয়েভের ইউরোমাইডান এলাকায় যে বিক্ষোভ শুরু করে, সেটি ‘ইউরোমাইডান বিক্ষোভ’ নামে পরিচিতি পায়) যখন তুঙ্গে,তখন মস্কো ভিক্তর ইয়ানুকোভিচের রাশিয়াপন্থী সরকারকে ৩০০ কোটি ডলারের অত্যন্ত জটিল শর্তযুক্ত ঋণ দিয়েছিল। ওই ঋণের চুক্তির ধারায় ইউক্রেনের ভবিষ্যৎকে উন্নত করে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাশিয়া। বর্তমানে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের বিরুদ্ধে ফ্রাঙ্কফুর্টে বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা আন্তর্জাতিক লেনদেনের প্রধান ব্যবস্থা ‘সুইফট’ থেকে রাশিয়াকে বাদ দেওয়ার দাবি জানান রাশিয়া ও পশ্চিমাদের মধ্যে আট বছর ধরে থেমে থেমে ‘অর্থনৈতিক সংঘর্ষ’ চলছে। এখন পর্যন্ত এ অর্থনৈতিক টানাপোড়েন রাশিয়ার ওপর কিছু উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিল, কিন্তু তা বাকি বিস্তৃত বিশ্ব অর্থনীতিতে খুব কমই প্রভাব ফেলেছিল। তবে বিনা উসকানিতে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার চলমান আগ্রাসী অভিযান,সে অবস্থা পাল্টে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছে

এমনকি এই চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমারা নতুন নতুন নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। এসব নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া হিসেবে রাশিয়া যেসব ব্যবস্থা নেবে, তার নেতিবাচক প্রভাব সমগ্র বিশ্ববাসীর ঘাড়ে এসে পড়বে। সবারই কম বেশি জানা,প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মানুষ পালিয়েছে ইউরোপ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে। ফিলিস্তিনের দেশহীন ঘরহীন মানুষের রক্তাক্ত ইতিহাস ৭৫ বছরের। ষাটের দশকে ঘর ছেড়ে পালাতে হয়েছিল ভিয়েতনামের মানুষকে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়েছে মানুষ। যশোর রোডই যেন পৃথিবীর পৌনঃপুনিক ইতিহাস। ২০০৩ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ পালিয়েছে ইউরোপে। মানব ইতিহাসের দুই সমৃদ্ধ নগর বাগদাদ ও দামেস্কও সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ থাকেনি গত দুই দশকে। এই চক্রের শেষে নতুন করে ইউরোপের মানুষের দিগ্‌বিদিক ছুটে চলার নতুন ইতিহাসের শুরু হলো।ইতিহাসের কী নির্মম পুনরাবৃত্তি! প্রায় ৮১ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ১৯৪১ সালে হিটলার বাহিনী কিয়েভ আক্রমণ করেছিল এমনই এক ভোরে। পৃথিবীর সব স্বৈরাচার ও সাম্রাজ্যবাদীর সামরিক ভাষা যেন অভিন্ন। যুদ্ধ ও আগ্রাসনের মুখে পড়ে পালানোর ইতিহাসও যেন ঘুরে ফিরে আসে।ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসনে বিভিন্ন মহাদেশে ক্ষমতাবান পরাশক্তিগুলোর দুর্বল প্রতিবেশী দেশের মর্যাদা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে বাঁচার অধিকার সংকুচিত হওয়ার বিরাট আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই আশঙ্কা থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। আটলান্টিকের দুই তীর থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের দুই তীরে, পশ্চিম থেকে পুবে ভূরাজনীতি ও বাণিজ্যযুদ্ধের যে আগমনী দামামা, তাতে নতুন দুশ্চিন্তা শুধু বাড়ন্তই।স্বৈরাচারশাসিত মেরুগুলো ছোট দেশগুলোর ওপর বহুপক্ষীয় সাম্যের বদলে এককেন্দ্রিক আধিপত্য বিস্তারে নীতি ও বলপ্রয়োগের মাত্রা তীব্র করতে পারে। তাই ছোট দেশগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন পরিকল্পনা, ভবিষ্যৎমুখী সামরিক কৌশল, অর্থনীতি সুরক্ষার ক্ষেত্রে তাই আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

তবে সম্মুখ সামরিক যুদ্ধ এখন আর জনপ্রিয় নয়। যুদ্ধবাজ দেশগুলোর নাগরিকেরাও জাতীয় পতাকায় মোড়ানো সৈনিকদের মৃতদেহ আর দেখতে চায় না। তা ছাড়া ইরাক, আফগান যুদ্ধের অভিজ্ঞতা এসব দেশের নাগরিকদের যুদ্ধবিরোধী করে তুলেছে। তাই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির শত আবেদন সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় কোনো দেশ সরাসরি যুদ্ধে যোগ দেয়নি।শিল্প, বাণিজ্য ও যোগাযোগ রুশ জ্বালানি কোম্পানি, রেল, পরিবহন ও টেলিকম কোম্পানিতে মার্কিন ঋণ ও লগ্নি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিশেষ করে রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যাতে রুশ প্রতিরক্ষা, মহাকাশ ও সামুদ্রিক খাতে উন্নত প্রযুক্তি স্থানান্তর না হয় এবং রুশ বাহিনীগুলোর আধুনিকীকরণ ব্যাহত হয়। রুশ এয়ারলাইনস ও ব্যক্তিগত জেটের ইইউ, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন আকাশসীমা ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।অন্যান্য বিধিনিষেধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কতিপয় রুশ ব্যাংকের সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল নেটওয়ার্কের (সুইফট) ব্যবহারের সুযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক মালিকানাধীন বেলজীয় এ প্রতিষ্ঠান আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিরাপদ বার্তা বিনিময় সুবিধা প্রদান করে। বিশ্বব্যাপী এর ৩ হাজার ৫০০ অংশীদার আর্থিক প্রতিষ্ঠান ২০০টি দেশে ১১ হাজার ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও করপোরেশনকে সেবা প্রদান করে থাকে।নিষেধাজ্ঞার তালিকায় প্রথমেই রয়েছে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। যার মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এগুলোর সম্পদ ও লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৩টি রুশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বাদ যায়নি রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক, জাতীয় সম্পদ তহবিল, অর্থ মন্ত্রণালয়। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মার্কিন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। 

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডও প্রায় অনুরূপ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়াও কিছু কিছু নিষেধাজ্ঞা দিতে শুরু করেছে।পিক ট্রেডিং রিসার্চের ভাষ্য অনুযায়ী, দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে রুশ সামরিক অভিযানের পর গমের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ, অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ, ভুট্টার দাম বেড়েছে ১২ শতাংশ, পাম ও সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ২০ ও ১২ দশমিক ৪ শতাংশ। তামা, দস্তা, অ্যালুমিনিয়াম ও নিকেলের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ পর্যন্ত।আর্থিক বিধিনিষেধের কারণে মার্কিন ডলার ও রুশ রুবলের বিনিময় হার ১ ডলারে ১৩১ রুবলে ঠেকেছে। রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক রুবলের বিনিময় হার স্থিতিশীল করার জন্য তাদের সুদের হার ৯ দশমিক ৫ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করেছে। এতে করেও রুবলের পতন ঠেকানো যায়নি। ব্যাংকগুলোতে রুবল ও ডলার উত্তোলনের হিড়িক পড়েছে বলে জানা যায়। রুশ নাগরিকেরা নিত্যব্যবহার্য পণ্য মজুত করছে, তাই দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কর্তৃত্বের লড়াই আরও জোরদার হবে। ডলারের প্রাধান্য ক্ষুণ্ন করা ছাড়াও সুইফটের বিকল্প উদ্ভাবন এবং এর ব্যবহার শুরু হয়েছে। বাংলাদেশকে বিবর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। জ্বালানিসহ পণ্যের মূল্যের অস্থিরতা থেকে রেহাই পেতে আপৎকালীন মজুত গড়ে তুলতে হবে। যেমন এলএনজি আমদানির ক্ষেত্রে এফএসআরইউর (ভাসমান জাহাজ) পরিবর্তে ভূমিতে এলএনজি সংরক্ষণ প্ল্যান্ট স্থাপন করতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের কিছু ব্যক্তির ওপর সাম্প্রতিক কালে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা যাতে প্রসারিত না হয় এবং ইইউ ও যুক্তরাজ্য যাতে এতে যোগ না দেয়, সে জন্য দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন ও নিপীড়নের অবসান ঘটিয়ে উদার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ফিরে যেতে হবে।

সবশেষে, দেশের সামরিক ও কূটনৈতিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা সংকট এ দুটি ক্ষেত্রেই আমাদের দুর্বলতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের শিক্ষা হলো কেউ আমাদের নিরাপত্তা দেবে না, নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদেরই নিশ্চিত করতে হবে।নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়ার ওপর আরোপিত হলেও সে দেশের সঙ্গে আর্থিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে, এমন সব দেশই কমবেশি এর কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান ক্ষতিগুলো হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের ঋণপ্রাপ্তি, পণ্যমূল্য পরিশোধ এবং আমদানি ব্যাহত হওয়া। রাশিয়ায় তৈরি পোশাকের উঠতি বাজারে রপ্তানি ব্যাহত হবে। বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে। অপরিশোধিত তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে। একইভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে গম, ভোজ্যতেল প্রভৃতির মূল্যবৃদ্ধিতে। ইতিমধ্যে স্থানীয় বাজারে এসব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে। আবার বিভিন্ন ধাতুর মূল্যবৃদ্ধি শিল্প উৎপাদন ও নির্মাণ খাতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাওয়া অনিবার্য হয়ে উঠবে।রুশ পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ইউক্রেনের জাতিগত নিপীড়ন ও ইউরোপীয় সংগঠনগুলো, বিশেষ করে ন্যাটোতে যোগদানের ইউক্রেনের প্রচেষ্টার কারণে দেশটিকে নিরস্ত্র করার জন্য ইউক্রেনে হামলা চালানো হয়েছে। ইরাক যুদ্ধ যেমন কথিত পারমাণবিক অস্ত্রের জন্য হয়নি, বরং দেশটির তেলসম্পদের কর্তৃত্বের জন্য হয়েছিল, তেমনি বর্তমান সংকটের মূল কারণও অর্থনৈতিক কর্তৃত্বের লড়াই। মার্কিন বর্তমান কর্তৃত্বের মূল উৎস হচ্ছে রিজার্ভ কারেন্সি হিসাবে ডলারের ব্যবহার। চীন, রাশিয়া, ইরান ভেনেজুয়েলাসহ বেশ কয়েকটি দেশ বিশ্ববাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডলার থেকে সরে আসার জন্য চুক্তি করছে। ফলে রিজার্ভ কারেন্সি হিসাবে ইউরো, ইয়েন ও চীনা রেনমিনবির ব্যবহার বেড়েছে। 

খোদ রাশিয়াই এখন চীনা মুদ্রায় তাদের রিজার্ভের এক অংশ ধারণ করছে। ফলে আইএমএর সূত্রে জানা যায় যে ২০২০ সালের শেষ প্রান্তিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর রিজার্ভ কারেন্সি হিসাবে ডলারের ব্যবহার ৫৯ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ২৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাশিয়া অভিযান থেকে সরে না এলে আরও বড় ধরনের অবরোধ দেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ এবং যুক্তরাজ্য কার্যকরভাবে রাশিয়াকে বৈশ্বিক আর্থিক বাজার থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চেষ্টা করবে বলে ভাবা হচ্ছে। এটি যে বিস্তৃত অর্থনৈতিক প্রভাব ফেলবে, তা বাইডেন নিজেই ইতিমধ্যে স্বীকার করেছেন। রাশিয়ার অ্যাকাউন্টগুলো জব্দ হওয়ায় পাল্টা আঘাত হিসেবে রাশিয়া জ্বালানি বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ফেলবে। ইতিমধ্যে রাশিয়া ইউরোপকে অদূর ভবিষ্যতে গ্যাসের উচ্চ মূল্যের জন্য প্রস্তুত থাকতে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। আর ইউরোপে জ্বালানির বাজারে আগুন ধরলে তার আঁচ ইউরোপের বাইরেও অনুভূত হবে।শস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে রাশিয়া ও ইউক্রেন সারা বিশ্বের রুটির বাস্কেট হিসেবে ভূমিকা রাখে। প্রধানত গম উৎপাদনে রাশিয়া শীর্ষস্থানে রয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখেই রাশিয়া ধীরে ধীরে তার খাদ্যশস্যের ব্যবসা এবং সারশিল্পের ওপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ আনছে। রাশিয়া পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কৃত্রিম বৈশ্বিক খাদ্যসংকট তৈরি করত