মিল্টন সমাদ্দারকে বিচারক
চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে আশ্রমে নিয়ে গেলেই রোগি ভালো হয়ে যায়?
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৫ অপরাহ্ন, ২রা মে ২০২৪
চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে মৃত্যু সনদ জালিয়াতি করার অভিযোগে মিরপুর মডেল থানার মামলায় তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রিমান্ড শুনানিতে বিচারককে মিল্টন সমাদ্দার জানান, চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার আশ্রমের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৪ সালে। ২০১৫ সালে সমাজসেবা অধিদপ্তরে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেন তিনি। ২০১৮ সালে আশ্রমের কার্যক্রম পরিচালনার লাইসেন্স পান। আশ্রমটির মোট ২টি লাইসেন্স একটি ফাউন্ডেশনের আরেকটি সমাজকল্যাণের লাইসেন্স।সমাজকল্যাণের লাইসেন্সে হতদরিদ্রদের আশ্রয়, সেবা দেয়া ও চিকিৎসার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত।
আদালতের বিচারক তোফাজ্জল হোসেন মিল্টন সমাদ্দারকে প্রশ্ন করেন, চিকিৎসার জন্য আশ্রেমে কি কি ব্যাবস্থা আছে, জবাবে মিল্টন সমাদ্দার বলেন, চিকিৎসার জন্য আলাদা কোন ব্যাবস্থা নেই। আদালতে ফিরিস্তিযোগে মিল্টনের আইনজীবীর দাখিল করা পচাগলা অসহায় মানুেষর ছবি দেখে বিচারক বলেন, এই মানুষগুলোকে দেখে আমার শরীর শিউড়ে উঠছে, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে সেখানে (আশ্রম) নিয়ে গেলেই ভালো হয়ে যায় কিনা। এসময় মিল্টন সমাদ্দার একজন ডাক্তারের নাম বলেন। ওই ডাক্তার প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ করে থাকেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ৩ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার
মৃত্যু সনদ দেওয়ার বিষয়ে বিচারক জানতে চাইলে মিল্টন সমাদ্দার বলেন, এ পর্যন্ত আশ্রমে ১৩৫ জন মারা গেছেন। তাদেরকে কবরস্থ করার রশিদও আছে। মৃতদের কবরস্থ করার বিষয়ে একাধিক মন্ত্রণালয়ে ও প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করলেও কোন সহযোগিতা পাননি। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় আশ্রমের নিজস্ব অর্থায়নে মৃতদের কবরস্থ করা হয়।
বর্তমানে আশ্রমটিতে ২৫৬ জন অসহায় মানুষ অবস্থান করছেন। এদের সবাই বেওয়ারিশ এর মধ্যে ৬ জন গর্ভবতী মহিলাও রয়েছে। তাদেরকে দেখভাল করার জন্য একজন ডাক্তার রয়েছেন। গর্ভবতীদের পাশের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আশ্রমের নিজস্ব অর্থায়নে সিজার করানো হয়। অশ্রমটিতে বেওয়ারিশ ছাড়া অন্য কারও থাকার সুযোগও নেই বলে আদালতকে জানান মিল্টন সমাদ্দার।
আরও পড়ুন: মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তদন্ত করবে ডিবি
মৃত্যু সনদে কি লেখা থাকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কি কারণে লোকটি মারা গেছে সেটাই লেখা থাকে। আদালত প্রশ্ন করেন, মৃত্যুর এই কারণ কিভাবে পান এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের একজন ডাক্তার আছেন। তিনি যখন তাদের দেখে যান কার কি সমস্যা সেটাই লেখা হয় বলেন তিনি।
আয়-ব্যয়ের হিসাব সম্পর্কে আদালত জানতে চাইলে বিষয়ে তিনি বলেন, অডিট ফার্ম ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে প্রতি বছর অডিট করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে আয়-ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করা আছে বলে জানান তিনি।
জেবি/এসবি