ফুলবাড়ীতে থাই পেয়ারা চাষে যুবকের বাজিমাত


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


ফুলবাড়ীতে থাই পেয়ারা চাষে যুবকের বাজিমাত

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গোল্ডেন সুপার -৮ জাতের থাই পেয়ারা চাষে সফল হয়েছেন ফেন্ডস এ্যাগ্রো গ্রুপের ১৪ যুবক। তারা অন্যের জমি লিজ নিয়ে উপজেলায় প্রথম বারের মতো বানিজ্যিক ভাবে থাই পেয়ারার চাষ শুরু করেছেন। বাগান করার মাত্র নয় মাসেই লক্ষ লক্ষ টাকার পেয়ারা বিক্রি করে বেকারত্বের অবসান ঘটিয়েছেন তারা। তাদের এমন সাফল্যের ফলে এলাকার অনেকেই পেয়ারা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। 

ফেন্ডস এ্যাগ্রো গ্রুপের সভাপতি মাসুদ রানা জানান, ‘দুই বছর আগে তিনি রাজশাহীতে ঘুরতে গিয়ে ওখানকার এক পেয়ারা চাষীর সাথে পরিচয় হয়। কৌতূহলী হয়ে তার বাগান দেখে ও বাগান থেকে লাভের হিসাব শুনে নিজেও থাই পেয়ারার বাগান করার সিদ্ধান্ত নেন। পরে বাড়িতে এসে তার বন্ধুদের সাথে আলাপ করে ১৪ জন মিলে ফ্রেন্ডস এ্যাগ্রো গ্রুপ নামে সংগঠন গড়েন।’ 

তারা উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের তালুক শিমুলবাড়ী টেপরির বাজার সংলগ্ন এলাকায় ৪ একর জমি লিজ নিয়ে গত জুনে থাই পেয়ারা চাষ শুরু করেন। উর্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়া পাশাপাশি ভালো চারা, জৈব সার, সেচ ও নিয়মিত পরিচর্যা করায় প্রতিটি গাছ থেকে আশানুরূপ ফলন পাচ্ছেন । 

মাসুদ রানা আরও জানান, ‘আমরা ১৪ বন্ধু মিলে বেকারত্ব ঘোচানোর জন্য ৪ একর জমি লিজ নিয়ে চুয়াডাঙ্গার হক এ্যাগ্রো ফার্ম থেকে গোল্ডেন সুপার -৮ জাতের থাই পেয়ারা চাষ শুরু করেছি। জমি লিজ, গাছের চারা ক্রয়, জমিতে বেড়া দেওয়া, গাছ লাগানো ও অন্যান্য খরচসহ এপর্যন্ত আমাদের প্রায় ৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। চারা রোপণের ৪ মাস পর থেকেই গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করা শুরু করেছি। বিষমুক্ত ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে আমরা বাগানে পেয়ারা চাষ করছি। আমাদের বাগানের পেয়ারা নরম ও সুস্বাদু এবং পেয়ারাগুলো আকারে ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম পর্যন্ত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে আমাদের কাছ থেকে পেয়ারা কিনে নিচ্ছেন। ভালো ফলনের সাথে চাহিদা ও দাম পাওয়ায় বাগান করার মাত্র নয় মাসেই আমরা লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছি। বাগানে মোট ৩ হাজার ৭০০ গাছের সবগুলোতে মোটামুটি ভালো ফল ধরেছে। আমরা আশা করি প্রতি বছর খরচ বাদে বাগানের পেয়ারা বিক্রি করে ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা লাভ করতে পারবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘ফল বিক্রি ছাড়াও আমরা নিজেদের বাগান থেকে চারা উৎপাদনের পরিকল্পনা করছি। চারা উৎপাদন করলে আমরা আরও বেশি লাভবান হতে পারবো। থাই পেয়ারা চাষ শুরু করে আমাদের বেকারত্ব দূর হওয়ার পাশাপাশি বাগানে প্রায় ৪০ জন কৃষি শ্রমিকের কাজের সুযোগ হয়েছে।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, ‘ফেন্ডস এ্যাগ্রো গ্রুপ থাই পেয়ারা চাষের মাধ্যমে উপজেলার কৃষিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন। তাদের সাফল্যে উপজেলায় নতুন কৃষি উদ্যোক্তা হতে অনেকেই আগ্রহী হবে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। ফ্রেন্ডস এ্যাগ্রো গ্রুপকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

এসএ/