ইবি ছাত্রলীগের কমিটি: সহ-সভাপতি পদের দাবি এক নামে দুই নেতার


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:০২ অপরাহ্ন, ১৭ই মে ২০২৪


ইবি ছাত্রলীগের কমিটি: সহ-সভাপতি পদের দাবি এক নামে দুই নেতার
সহ-সভাপতি পদের দুই নেতা । ফাইল ছবি

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ১৯৯ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ৬৬ নং সহ-সভাপতি পদে রয়েছে সিরাজুল ইসলাম সিরাজ নামের এক নেতার নাম। তবে এই পদটি নিজের বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবী করেছেন একই নামের দুই নেতা। তারা হলেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম সিরাজ। অপরজন শাখা ছাত্রলীগের ১ নং সহসভাপতি তন্ময় শাহা টনির অনুসারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম।


পদের দাবিদার বায়োটেকনোলজি বিভাগের সিরাজুল ইসলাম সিরাজ বলেন, আমার নাম সিরাজুল ইসলাম সিরাজ। যে পদ দাবি করছে তার নামের সাথে পদের মিল নাই। পূর্বে হল পোস্টে আমার নাম আর নাম্বার দেওয়া আছে। জয় ভাই আমাকে আমার পদ বলে নিশ্চিত করেছেন। সক্রিয় কর্মী হিসেবে সবাই আমাকে চিনে এবং জানে। অন্য একজন কেন পদ দাবি করছে বুঝতেছি না।


আরও পড়ুন: ঈদের ছুটি বাড়ানোর দাবি জবি শিক্ষার্থীদের


পদের আরেক দাবিদার সিএসই বিভাগের সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি শাখা ছাত্রলীগের ১ নং সহ-সভাপতি তন্ময় সাহা টনি ভাইয়ের কর্মী। উনিই আমাকে আমার পদের ব্যাপারে নিশ্চিত করেছেন। আরেকজন যিনি পদ দাবি করছেন আমার জানামতে তার ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে ২০২১ সালে। তাহলে ২৪ সালে এসে কিভাবে কমিটিতে পদ পায় তা আমারও প্রশ্ন। 


শাখা ছাত্রলীগের ১ নং সহ-সভাপতি তন্ময় সাহা টনি বলেন, শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দরা আমাদের কারো সাথে সমন্বয় না করেই পছন্দমত কমিটি জমা দেওয়ায় আমরাও আমাদের কর্মীদের মূল্যায়নের স্বার্থে কয়েকজনের নাম কেন্দ্রে জমা দেয়। আমি যে সিরাজুলের নাম দিয়েছি বিভ্রান্তি দূর করার জন্য ওর নামের পাশে নিকনেম হিসেবে সিরাজ দিয়েছিলাম। কিন্তু এটাও যে আরেকজনের সাথে মিলে যাবে তা আমি বুঝতে পারি নাই। 


তিনি আরো বলেন, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সেক্রেটারি যার কথা বলছে সে ক্যাম্পাসে থাকেও না, রাজনীতিতেও সক্রিয় নয়। শেষ কবে এসে মিছিল মিটিং করেছে তা খোঁজ নিয়ে দেখা প্রয়োজন। যেহেতু কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কমিটির অনুমোদন দিয়েছে, এই বিভ্রান্তি তারাই দূর করতে পারবে। আমরা তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করি। 


তবে ৬৬ নং সহ-সভাপতি পদটি বায়োটেকনোলজি বিভাগের সিরাজুল ইসলাম সিরাজের বলে নিশ্চিত করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়। তিনি বলেন, এখানে বিভ্রান্তি তৈরি হলেও আমি বিষয়টি পরিষ্কার করে দিয়েছি। সভাপতি সেক্রেটারির বাইরে যেয়ে কেন্দ্রে কারো নাম প্রস্তাব করার কোন সুযোগ নেই। যার সাথে যার সম্পর্ক ভালো তার কাছে হয়তো সুপারিশ বা অনুরোধ করতে পারে কিন্তু কমিটি প্রস্তাবনার এখতিয়ার শুধুমাত্র আমাদের। 


এছাড়াও তিনি জানান, যে পদ পেয়েছে সে ক্যাম্পাসে আছে। সবাই তো আর সব সময় ক্যাম্পাসে থাকে না, পারিবারিক কারণে বাসায়ও যায়। কে কি বললো সেসবের চেয়ে এতদিন পর সর্বজন গৃহীত একটা সুন্দর কমিটি হয়েছে এটাই গুরুত্বপূর্ণ। 


শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পর শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতও নিশ্চিত করেন সহ-সভাপতি পদটি বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী সিরাজের। তিনি বলেন, সহসভাপতি পদটি মূলত বায়োটেকনোলজি বিভাগের যে সিরাজের। ওর পদটা শাখা ছাত্রলীগের সেক্রেটারী দিয়েছে। নামের পাশে বিভাগ বা সেশন উল্লেখ না থাকায় এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা পদধারী প্রত্যেকের জন্য চিঠি পাঠাবো। আসন্ন অনুষদ ও হল কমিটিতে প্রয়োজনবোধে নামের পাশে বিভাগ বা সেশন উল্লেখ রাখবো। 


আরও পড়ুন: কুবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ


এবিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থর সাথে কথা হলে তিনি জানান, ইবি ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মীকে তো আমরা চিনি না। এই পদের বিষয়ে কেন্দ্র থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ভালো বলতে পারবে। 


তবে শাখা ছাত্রলীগের ১নং সহ-সভাপতি তন্ময় সাহা টনির বক্তব্যের সূত্র ধরে কমিটিতে নাম প্রস্তাবনার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে কেউ ই প্রস্তাবনা দিতে পারেন যে এই নামে একটি ছেলে আছে, সে ভালো কি মন্দ, তাকে কমিটিতে রাখা যায় কিনা। নাম প্রস্তাব দেওয়া আর কমিটিতে রাখা তো এক কথা নয়। যেখানে সভাপতি, সেক্রেটারি আছে সেখানে ১ নং সহ-সভাপতি কে? যেকোন বিষয়ে তাদের সাথে কথা বলবেন। 


প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ৮ বছর পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়(ইবি) শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয় গত ১০ মে রাতে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সম্পাদক শেখ ইনানের স্বাক্ষরিত এই কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে জায়গা পেয়েছেন মোট ৭১ জন।


আরএক্স/