বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের স্বতন্ত্র প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮:৪৫ অপরাহ্ন, ২৬শে মে ২০২৪
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষকরা৷
রবিবার (২৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার সংলগ্ন সড়কে শিক্ষক সমিতির আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন৷
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহেদ রানার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে শিক্ষকরা প্রত্যয় স্কিমে শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করাকে শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের চক্রান্ত হিসাবে উল্লেখ করে অবিলম্বে প্রত্যয় স্কিম থেকে শিক্ষকদের বাদ দিয়ে স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো দেওয়ার দাবি জানান। ২৭ তারিখের মধ্যে দাবি মানা না হলে আগামী ২৮ তারিখে সকাল ১০ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টা ক্লাস বর্জনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
মানববন্ধনে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষা, গবেষণায় যে বেতন ভাতা পান তা খুবই অপ্রতুল। এখন শিক্ষকদের বেতন ভাতা না বাড়িয়ে উল্টো কমিয়ে দেয়া হচ্ছে। এমন হলে বিশ্ববিদ্যালয় আর জ্ঞান চর্চার জায়গা থাকবে না। কারণ মেধাবীরা এ পেশায় আর আসবে না, তারা অন্য ক্ষেত্রে বা বিদেশে যেখানে আরও বেশি সুবিধা আছে সেখানে চলে যাবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বঞ্চিত করলে, দেশ বঞ্চিত হবে। পাকিস্তান ভারতে শিক্ষকদের বেতন ভাতা আমাদের দেশের চেয়ে বেশি, তারা পারলে আপনারা পারবেন না কেনো!
আরও পড়ুন: জবিতে ফিচার, কলাম এন্ড কন্টেন্ট রাইটার্সের নতুন কমিটি গঠন
ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রববানী বলেন, পুরো শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে একটা চক্রান্ত চলছে৷ জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করে পুরো উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হচ্ছে। শিক্ষকদের মর্যাদাকে নিচে নামিয়ে আনা হচ্ছে। তারা বলছেন, এটা সার্বজনীন পেনশন স্কিম। কিন্তু এখানে পুলিশ,আমলা, আর্মিদের বাদ দিয়ে কীভাবে সার্বজনীন হয়! অবিলম্বে এ স্কিম প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
শিক্ষক সমিতির সভাপতির অনুপস্থিতিতে মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি সোহেল আহমেদ। সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য কিছু কুচক্রী মহল এমন কাজ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেখানে দেশ গড়ার কারিগর, মানুষ গড়ার কারিগর, আজ তারা সেখানে অবহেলিত হচ্ছে। প্রশাসনের আমলারা তো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেই আমলা হয়েছেন, শিক্ষকরাই তো তাদের পড়িয়েছেন। তাহলে কেনো তাদের এ বিমাতাসুলভ আচরণ, সরকারকে কোনো বিভ্রান্ত করছেন। আমরা আজ এই সার্বজনীন পেনশন স্কিম প্রত্যাখান করছি এবং ২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যে স্বতন্ত্র পে স্কিম করার কথা ছিল তা বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: ইবিতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভবনে প্রবেশের ঘটনায় তদন্ত কমিটি
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন নগর ও অঞ্চল বিভাগের অধ্যাপক শফিক–উর রহমান, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদা আক্তার, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইন,ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সুলতানা আক্তার, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান প্রমুখ।
জেবি/এসবি