জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসি বৈষম্য
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:৪৭ অপরাহ্ন, ২রা জুন ২০২৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সহকারী হিসাবাধ্যক্ষ ফিরোজ আহমেদের কক্ষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) লাগানোর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনদের মধ্যে বইছে সমালোচনার ঝড়।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক ও প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহারের সুযোগ পাননি সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী হিসাবাধ্যক্ষ তার কক্ষে এসি লাগানোয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতারের ঘনিষ্ঠ লোক হওয়ায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছেন সহকারী হিসাবাধ্যক্ষ ফিরোজ আহমেদ। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক মহলে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
আরও পড়ুন: ইবিতে নবীন শিক্ষার্থীকে র্যাগিং ঘটনায় তিনজনকে বহিষ্কার
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত ধারা অনুযায়ী, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, কম্পট্রোলার, অনুষদ ডিন, বিভাগীয় প্রধান, হল প্রভোস্ট এবং কিছু অফিস প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থে তাদের অফিস কক্ষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) লাগাতে পারবেন। এর বাইরে, জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক বা শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ এমন কারো যদি এসির প্রয়োজন হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদনের প্রেক্ষিতে নিজ খরচে এসি লাগাতে পারবেন। এছাড়া কেউ চাইলেই তার কক্ষে এসি লাগানোর নজির বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই।
এ অবস্থায় সহকারী কম্পট্রোলার পদমর্যাদার কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ কীভাবে তার কক্ষে বিলাসী এই পণ্য ব্যবহারের অনুমতি পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে।
সহকারী কম্পট্রোলারের কক্ষে এসি লাগানোর খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেন জাবি অফিসার সমিতির সাবেক সভাপতি ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আজীম উদ্দিন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসারদের যে একটি নীতিমালা আছে সেখানে একজন অফিসার কি কি সুযোগ সুবিধা পাবে সব উল্লেখ করা আছে। অফিসিয়াল ব্যক্তিগত কক্ষে সে এসি'র ব্যবস্থা করতে পারবে না। একজন সহকারী কম্পট্রোলার যদি এসি নিতে পারে তাহলে আমরা যারা ডেপুটি রয়ে গেছি তাদের এসি নিতে দোষের কিছু নাই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটি অন্যায় ভাবে অনুমতি দিয়েছে। তাকে যদি এসি দেয়া হয় তাহলে প্রত্যেকটা ডেপুটির এসি পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
আরও পড়ুন: জাবিতে চলছে গাছ কাটার মহোৎসব, প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
এ বিষয়ে সহকারী কম্পট্রোলার ফিরোজ আহমেদের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি তাকে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখানে আমার কিছু বলার নেই, ভিসি স্যারকে জিজ্ঞেস করো? ভাইস চ্যান্সেলর স্যারের অনুমোদন নিয়ে পুরনো এসি লাগানো হয়েছে। যেকোনো ফাইলের সুপারিশ আমি করি। নোটিশ এ কি লেখা ছিল? সেখানে বলা ছিল স্যারের মৌখিক নির্দেশে এসি'টি লাগানো হয়েছে। স্যার যখন মৌখিক নির্দেশ দেন আমাকে তখন সুপারিশ দিতেই হবে। আমি সুপারিশ দিয়েছি স্যার অনুমোদন দিয়েছেন। পরবর্তীতে এসিটি খুলে ফেলার জন্য স্যার আবার নির্দেশ দিয়েছেন। স্যার যখন মৌখিক অনুমোদন দেন আমাকে তখন সুপারিশ দিতেই হয়।
এমএল/