ইফাত কার ছেলে, জানালেন সংসদ সদস্য হাজারী


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬:৩৭ অপরাহ্ন, ২০শে জুন ২০২৪


ইফাত কার ছেলে, জানালেন সংসদ সদস্য হাজারী
ছবি: সংগৃহীত

কোরবানির ঈদ এলেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে বিশালদেহের বিভিন্ন গরু। কিন্তু এবারের ঈদে যেন সব আলো কেড়ে নিলো দেশের আলোচিত এগ্রো ফার্ম সাদিক এগ্রোর বিশাল একটি ছাগল। ১৫ লাখ টাকার ছাগলটির আড়ালে পড়ে গেছে একই ফার্ম থেকে বিক্রি হওয়া কোটি টাকার বিশালদেহী গরুও। আর এর বড় একটা কৃতিত্ব মুশফিকুর রহমান ইফাত নামের এক তরুণের। ছাগলটি ১২ লাখ টাকায় কিনেছেন জানিয়ে সোশ্যাল সিডিয়ায় করা তার এক পোস্ট থেকেই পুরো ঘটনার সূত্রপাত। পরে তার বাবার পরিচয় হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তার নাম প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড়, আর যা ঈদের পরও থামছে না।


এদিকে নতুন বিতর্কের জন্ম, মতিউর রহমান নামে ওই এনবিআর কর্মকর্তা আলোচিত ছাগলের ক্রেতা ইফাতকে নিজের ছেলে হিসেবে অস্বীকার করেন। যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়িয়ে প্রতিটা আড্ডার অন্যতম টপিক এখন। জনমনে প্রশ্ন, তাহলে আসলে কে এই ইফাত? যদি সে ওই এনবিআর কর্মকর্তার নিজের ছেলেই না হয়ে থাকে, তবে ইফাত কেন তাকে বাবা বলে পরিচয় দিলো? কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সভাপতির দায়িত্বে থাকা মতিউর রহমান যদিও বলছেন, ইফাতকে তিনি চেনেন না, তার বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তবুও এ ব্যাখ্যা সন্তোষজনক নয় সাধারণ মানুষের কাছে। কারণ, ইফাতের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে মতিউর রহমানের সাথে তার যুগলবন্দি বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। ছবিগুলোর ক্যাপশনে ইফাত আবার ‘বাবা’ সম্বোধনও করেছেন।


আরও পড়ুন: সিলেট নগরকে রক্ষা করতে সুরমা নদী ড্রেজিং করা হবে: পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী


অনেকেই বলছেন, দুর্নীতির তদন্ত থেকে বাঁচতেই এখন নিজের ছেলেকে অস্বীকার করছেন এই কর্মকর্তা। কিন্তু সংবাদমাধ্যমকে মতিউর রহমান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সহায়তা চেয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন।


এনবিআরের এ কর্মকর্তা বলেছেন, ইফাত নামে আমার কোনো ছেলে নেই। এমনকি আমার আত্মীয় বা পরিচিতও নয় সে। আমার একমাত্র ছেলের নাম তৌফিকুর রহমান। একটি গোষ্ঠী আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। সোশ্যালমাধ্যমে আমার ছবি ও নাম ব্যবহার করায় আমি বেশ বিব্রত। আমি অবশ্যই আইনি পদক্ষেপে যাব।


তবে, ফেনী-২ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারীর দাবি, ইফাত আসলে মতিউর রহমানেরই ছেলে। তিনি দুটি বিয়ে করেছেন এবং ইফাত তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান।


বৃহস্পতিবার (২০ জুন) নিজাম উদ্দিন হাজারী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ইফাত এনবিআর সদস্য মতিউর রহমানের দ্বিতীয় পক্ষের ছেলে। ধারণা করছি, রাগ করে মতিউর রহমান ইফাতের সাথে সম্পর্ক অস্বীকার করেছেন।


আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ


তার কাছ থেকে জানা যায়, এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমান দুটি বিয়ে করেছেন। তার প্রথম স্ত্রীর নাম লাইলা কানিজ। বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তিনি। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রী তার আপন মামাতো বোন। তার পুরো নাম স্মরণ করতে না পারলেও ডাক নাম ‘শিবু’ বলে জানান তিনি।


মতিউরের দুই পরিবারের মধ্যে সমস্যা রয়েছে কি না- জানতে চাইলে নিজাম হাজারী বলেন, সমস্যা হলেই না মীমাংসা হবে। সমস্যাই তো ছিল না। তার দুই পরিবারই একে অপরকে মেনে নিয়েছে। তাই কোনো ধরনের সমস্যা ছিল না।


এদিকে মতিউর রহমানের বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) প্রশ্ন করা হয় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমকেও। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে কোনো উত্তর দিতেই রাজি নন বলে প্রশ্নটি এড়িয়ে যান।


এমএল/