জাবিতে তিন বহিরাগত দ্বারা ছিনতাই ও নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা:
প্রক্টরের বিরুদ্ধে দায়সাড়া ভাব দেখানোর অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:১৪ অপরাহ্ন, ২৬শে জুন ২০২৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দু'জন শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়, নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা ও ছিনতাই চেষ্টাকালে দুই বহিরাগতকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছে এবং এই ঘটনায় প্রক্টর দায়সাড়া ভাব দেখিয়েছেন বলে দাবি করেন উপস্থিত শিক্ষার্থীরা। তারা জানায় এতো বড় একটা ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির কেউ নিরাপত্তা শাখায় যায়নি।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন বোটানিক্যাল গার্ডেনের পেছনে মনপুরা এলাকার প্রবেশপথে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: কর্মবিরতি ও অবস্থানের মধ্য দিয়ে ইবি শিক্ষকদের ৩ দিনের কর্মসূচি শুরু
এ ঘটনায় আটক নাজমুল হাসান (৩২) সাভারের লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (বিপিএটিসি) চতুর্থ শ্রেণির কর্মকর্তা, তার স্থায়ী ঠিকানা পটুয়াখালি জেলার কলাপাড়া থানার খলিলপুর গ্রাম। আরেক অভিযুক্ত আলামিন (২৮) একই প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন প্রকল্পে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলায়। অভিযুক্তদের মধ্যে পালিয়ে যাওয়া আরেকজন আলামিন। আটককৃত দুই অভিযুক্ত ব্যাক্তি নামটি নিশ্চিত করেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা যায়, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন ও তার নারী বন্ধু সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনপুরা এলাকার দিকে যাচ্ছিলেন৷ এসময় তিনজন ছিনতাইকারী তাদের পথরোধ করে দাঁড়ায়। তারা সাথে সাথে ভুক্তভোগীদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় ও তাদের কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা ও মেরে ফেলার হুমকি দেয়। প্রায় তিনঘন্টা আটকে রাখার পর রুহুল আমিন টাকা আনার কথা বলে সুকৌশলে বন্ধুদের ফোন করেন। এসময় সালাম বরকত হল থেকে শিক্ষার্থীরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা এসময় ছিনতাইকারীদের বেধড়ক মারধর করে৷ অভিযুক্তদের একজন পালিয়ে গেলেও অবশিষ্ট দু'জনকে হাতেনাতে ধরে নিরাপত্তা শাখায় হাজির করে শিক্ষার্থীরা৷ এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী৷
এ ঘটনার প্রায় তিনঘন্টা পর রাত দশটায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অফিসে অভিযুক্তদের নিয়ে আসে৷ তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। এসময় শিক্ষার্থীরা যোগাযোগ করলে প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির মুঠোফোনে জানান, ঘটনাটি যেহেতু বহিরাগতদের সাথে সংশ্লিষ্ট সেহেতু নিরাপত্তা অফিস বিষয়টি দেখভাল করবে। আমি নিরাপত্তা অফিসকে সাথে সাথে বিষয়টি জানিয়েছি।
আরও পড়ুন: বুয়েটে স্মার্ট ট্রাফিক পুলিশ বক্স উদ্বোধন
পরে রাত পৌনে একটায় আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক নুর আলম মিয়া অভিযুক্ত, ভুক্তভোগী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে আশুলিয়া থানায় যান। এ ঘটনায় একটি ধর্ষণচেষ্টার মামলা দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী সজল জানান, আমি এ ঘটনা জানার পরপরই প্রক্টর মহোদয়কে অবহিত করেছি। রেজিস্ট্রার মহোদয়ের অনুমতি সাপেক্ষে পুলিশের সোপর্দ করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মামলা দেয়ার জন্য কিন্তু ধর্ষণচেষ্টা অভিযোগের মামলা ভিকটিমকেই দিতে হয় বিধায় আমরা এখন ভিক্টিমকে নিয়ে থানায় যাচ্ছি।
জেবি/এসবি