সমুদ্র সম্পদের যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিন্ত করতে হবে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৩৩ অপরাহ্ন, ৩রা জুলাই ২০২৪

২০৪১ সালের মধ্যে আধুনিক, উন্নত, মেধাবী ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য সমুদ্র সম্পদের যথোপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিন্ত করার আহবান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
বুধবার (৩ জুলাই) ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত ওশান প্রস্পারিটি-ক্যাটালাইজিং দ্য ব্লু ইকোনমি ইন বাংলাদেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সাসটেইনেবল ব্লু প্রোডাকশন বিষয়ে ব্রেক আউট সেশনে সভাপতি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে এ আহবান তিনি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই উৎপাদন ও আহরণের উপায় খুঁজে বের করে সমুদ্রের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধন করা। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে শুধুমাত্র বিদেশী সাহায্য, অনুদান বা সহযোগিতার উপর নির্ভর করে আমরা এগোতে পারব না। আমাদের নিজস্ব সম্পদকে সমৃদ্ধ করতে হবে। আমাদের অর্থনীতিকে একটা দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে হবে। আর এটি করতে হলে আমাদের সামুদ্রিক অর্থনীতিকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। সুনীল অর্থনীতির অপার সম্ভাবনার যে বিশাল সমুদ্রসীমা আমাদের রয়েছে সেটিকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব তো বটেই, আমাদের নিজস্ব অর্থনীতির ভিতও মজবুত করা সম্ভব হবে।
সমুদ্র সম্পদ উন্নয়নের নানাবিধ ক্ষেত্র রয়েছে উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আরও বলেন, সমুদ্র কেন্দ্রিক বাস্তবিক ও প্রায়োগিক কর্মপরিকল্পনা প্রনয়ণ করে সে অনুযায়ী কাজ করা হলে আমাদের অর্থনীতিতে তা অনেক বড় অবদান রাখতে পারবে।
ব্লু ইকোনমির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটা দেশ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সমুদ্রে অফুরন্ত সম্ভাবনার প্রধান উৎস মাছের বাইরেও রয়েছে জৈবপ্রযুক্তি বা বায়োটেকনোলজি, জাহাজ নির্মাণ ও জাহাজভাঙা শিল্প, সামুদ্রিক জলজ প্রাণীর চাষাবাদ, লবণ উৎপাদন, সামুদ্রিক নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার, তেল-গ্যাস ও অন্যান্য সামুদ্রিক খনিজ সম্পদের অনুসন্ধান, সমুদ্রবন্দর ও সমুদ্র পর্যটন। এই ক্ষেত্র বা উপাদানগুলোকে আমাদের ডেভেলপ করতে হবে। মাছ ব্লু ইকোনোমির বড় ক্ষেত্র। সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদকে বড় সম্পদে তখনই পরিনত করা যাবে যখন আমরা এই সম্পদকে যথোপযুক্ত আহরণ ও ব্যবহার করতে পারবো।
আরও পড়ুন: কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি সেবা প্রদান
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, সামুদ্রিক মাছ আহরণের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। সমুদ্রে মাছের অবস্থান, গতিবিধি, মাছের স্টক এসব বিষয় নিয়ে গবেষণা জোরদার করতে হবে। এছাড়া সমুদ্রে মাছের পরিমান বা অবস্থান জানার উদ্দেশ্যে জরিপ কাজ চালানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা চায়না থেকে অনুসন্ধানী জাহাজ আনার প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছেন। এসব জাহাজ খুব শীঘ্রই দেশে আসবে। এর ফলে সমুদ্রে মাছের অবস্থান, মাছের সংরক্ষণ এবং মৎস্য সম্পদকে কাজে লাগিয়ে আমাদের অর্থনীতিকে মজবুত করা সম্ভব হবে।
যারা সামুদ্রিক সম্পদ নিয়ে গবেষণা করেন, সম্ভাবনার পথ উন্মুক্ত করেন তাদেরকে আশ্বস্ত করে মন্ত্রী বলেন, এসব বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় রাজনৈতিকভাবে অংগীকারাবদ্ধ। ব্লু ইকোনমির উন্নয়নের ক্ষেত্রে উদাহরণ তৈরি করে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা হবে।
আরও পড়ুন: দেশীয় পশু দিয়েই কোরবানি হবে: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে সংসদ সদস্য মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী এবং গেস্ট অব অনার হিসেবে বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও গ্রামীণ প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) আব্দুল বাকী উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও কী-নোট স্পীকার হিসেবে চীনের সাংহাই ওশান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক চেনহং লি, ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশানোগ্রাফি'র প্রধান বিজ্ঞানী ড. রামাইয়া নাগাপ্পা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের সিনিয়র সাইন্টিস্ট ড. মোস্তাক আহমেদ, চীনের ওশান ইউনিভার্সিটির প্রফেসর কিউ জিন উপস্থিত ছিলেন।
জেবি/এসবি