ছাগলকাণ্ডের মতিউর ও তার পরিবারের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:২৯ অপরাহ্ন, ৪ঠা জুলাই ২০২৪


ছাগলকাণ্ডের মতিউর ও তার পরিবারের সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ
ফাইল ছবি

ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী সন্তানদের ১০১৯ শতাংশ জমি ও ৪টি ফ্ল্যাট জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।


বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন। দুদকের আইনজীবী মীর আহম্মেদ সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


আরও পড়ুন: প্রকাশ্যে এলেন ছাগলকাণ্ডে ভাইরাল মতিউরের স্ত্রী লাকী


সম্পতিগুলোর মধ্যে বরিশালের মুলাদী উপজেলায় মতিউরের ১১৪ শতাংশ জমি। নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মারজাল ইউনিয়নে লায়লা কানিজের ৫২২.৫২ শতাংশ জমি ও বসুন্ধরায় ২৪৪৫ স্কায়ার ফিট ফ্ল্যাট। নরসিংদীতে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের ২৭৫.৮৫ শতাংশ জমি। নরসিংদীতে ফারজানা রহমান ইন্সিতার ১০৬.৫৬ শতাংশ জমি ও ঢাকার বসুন্ধরায় ৫ কাঠা জমির ওপর বহুতল ভবন। ধানমন্ডিতে শাম্মী আখতার শিভলীর একটি ফ্ল্যাট ও বসুন্ধরায় ৫ কাঠা জমি।


সম্পত্তি জব্দের আবেদনে উল্লেখ করা হয়, দুদকের উপপরিচালক (টিম লিডার) আনোয়ার হোসেন, সহকারী পরিচালক (সদস্য) মাহমুদুল হাসান ও উপসহকারী পরিচালক (সদস্য) সাবিকুন নাহারের সমন্বয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, মতিউর রহমান দুর্নীতির মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে অবৈধ সম্পদসহ হন্ডি ও আন্ডার ইনভয়েসিং/ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অর্থপাচার করে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।


সম্প্রতি মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের ১২ লাখ টাকায় ছাগল কেনার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপরই তা ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়।


এরপর থেকে ইফাতের দামি ব্র্যান্ডের ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন এবং মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলোবাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে অঢেল সম্পত্তি থাকার তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকে। পুঁজিবাজারেও রয়েছে তার মোটা অংকের বিনিয়োগ।


এ ঘটনার পর ইফাতের বাবা জাতীয় রাজস্ব রোর্ডের সদস্য মো. মতিউর রহমান, তার স্ত্রী নরসিংদীর রায়পুরার উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ ও তাদের পুত্র আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবকে বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।


আরও পড়ুন: দ্বিতীয় স্ত্রীর পর এবার দেশ ছাড়লেন মতিউর


গত ২৪ জুন দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদেশ দেন। এরপর ৩০ জুন এ বিদেশযাত্রা প্রত্যাহার চেয়ে আদালতে আবেদন করেন লায়লা কানিজ। আগামী ২৮ জুলাই এ বিষয়ে আদালতে শুনানি হওয়ার জন্য দিন ধার্য রয়েছে।


তার আগে ২৩ জুন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মো. মতিউর রহমানকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।


ছাগলকাণ্ডে আলোচিত ইফাতের বাবা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চারবার অনুসন্ধান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিবারই অনুসন্ধান পর্যায় থেকে শেষ হয়েছে কার্যক্রম। সম্প্রতি মতিউরের বিরুদ্ধে ফের অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। এরই মধ্যে মতিউর রহমান দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে খবর ছড়িয়ে গেছে।


জেবি/এজে