বিলুপ্তির পথে রুহিয়ার চুন শিল্প


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:২৭ অপরাহ্ন, ৪ঠা জুলাই ২০২৪


বিলুপ্তির পথে রুহিয়ার চুন শিল্প
ছবি: প্রতিনিধি

ঝিনুকের খোল দিয়ে তৈরি রুহিয়ায় চুনের কদর আছে রুহিয়া থানাসহ জেলার  বিভিন্ন স্থানে ক্রেতাদের কাছে। তবে চুন তৈরির কাঁচামালের দাম বাড়লেও তৈরি করা চুনের দাম তেমন বাড়েনি। ফলে লোকসানের মুখে পড়ে রুহিয়ার চুন তৈরির পেশা ছাড়ছেন এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা।


ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়া থানার ২০ নং রুহিয়া পশ্চিম   ইউনিয়নের দ. সেনিহাড়ী (তালতলী জুগী পাড়া) গ্রামে ঝিনুকের চুনের উপর নির্ভরশীল প্রায় ১২ টি পরিবার।


ঝিনুকের চুন তাদের একমাত্র আয়ের উৎস। বাপ-দাদার পেশা না ছেড়ে আকড়ে ধরে থাকার কারণেই আজ জীবনযুদ্ধ করে চলছে এ পরিবারগুলো।কয়েকবছরে লোকসানের মুখে তারা, চুন তৈরির পেশা ছেড়েছেন অনেকে। তবে যেটুকু আছে, তা ধরে রাখতে সহজ শর্তে ঋণসহ সরকারি সহায়তা চেয়েছেন কারিগররা।

 

আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে ১৫ মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড ২০ গ্রাম, নিহত ৩


প্রতি মণ ঝিনুক ক্রয় করে ৬০০থেকে ৭০০ টাকা দরে। ঝিনুকগুলো চুলায় খড়ি দিয়ে বৈদ্যুতিক পাখা ব্যবহার করে জ্বালানো হয়।এতে সহজেই খোলসটি খুলে যায়।


প্রতিটি ঝিনুক থেকে ভেতরের নরম অংশগুলো বের করে নেয়া হয়। যা হাঁস-মুরগির জন্য অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং প্রিয় খাবার হিসেবে হাঁস-মুরগির খামারীদের কাছে বিক্রি হয়।


পরে ঝিনুকের খোলসগুলো পানিতে ধুয়ে রোদে শুকানো হয়। সবশেষে চুনের ভাটিতে আগুনে পুড়িয়ে তা ছাঁই করা হয়।ঝিনুকের এই ছাঁইগুলো বড় মাটির পাত্রে রেখে তাতে পানি মিশিয়ে বাঁশের লাকড়ি দিয়ে ঘুটিয়ে তৈরি করা হয় চুন।


এ বিষয় চুন উৎপাদন কারিগর শ্রী ক্ষেত্র দেবনাথ  প্রতিবেদকে  বলেন, চুন তৈরীর কাজ আমাদের জাত পেশা।বর্তমানে খাল-বিল, নদী-নালায় পর্যাপ্ত পরিমান  ঝিনুক না পাওয়া যাওয়ায় কারণে অতিরিক্ত দামে তা সংগ্রহণ করতে হচ্ছে।


আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে বাম্পার ফলন হলেও ক্ষতির মুখে লিচু ব্যবসায়ীরা


ঝিনুক পুড়ানোসহ বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে যে লাভ হয় তাতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই ক্ষতি সামলাতে অনেকে এই জাত পেশা বদল করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।


চুন উৎপাদনকারী আরেক কারিগর শ্রী নিমাই দেবনাথ বলেন, এক মণ ঝিমুক কিনতে হয় ৬০০ টাকায় খড়ি প্রতি মন ২৮০ টাকায়। আর চুন তৈরি করে তা বিক্রি হয় মণ প্রতি ১০০০ টাকায়।  চুন তৈরির কাঁচামালসহ উৎপাদন খরচ বাড়লেও এ থেকে তৈরি চুনের দাম বাড়েনি। ফলে লোকসানে পড়তে হচ্ছে। সরকারি সহযোগিতায় যদি স্বল্প সুদের ঋণ পেতাম। তাহলে ব্যবসা আরও ভাল হত।


এসডি/