কোটা আন্দোলনকারীদের কঠোর হুঁশিয়ারি ডিএমপি কমিশনারের


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫:০৮ অপরাহ্ন, ১২ই জুলাই ২০২৪


কোটা আন্দোলনকারীদের কঠোর হুঁশিয়ারি ডিএমপি কমিশনারের
ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেছেন, আদালতের আদেশ মেনে চলার জন্য বাধ্য-বাধকতা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষের। আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গজনিত কোনো কার্যক্রম কেউ যদি করে তবে সেটি বরদাশত করা হবে না। 


শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গজনিত কোনো কার্যক্রম কেউ করলে বরদাশত করা হবে না।


আরও পড়ুন: ভারী বর্ষণের পর ডুবল ঢাকা


এসময় হাবিবুর রহমান আরও বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বিষয়টি আদালতের। আদালতের প্রতি সবার আস্থা রাখা উচিত। আদালতের আদেশ মেনে চলার জন্য বাধ্য-বাধকতা রয়েছে। সেটি সবার করা উচিত।


এদিকে, পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঢাকার বাইরে বেশ কিছু জায়গায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার দেশব্যাপী ক্যাম্পাসে-ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।


আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, আমরা সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাব, আপনারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আমাদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনুন।


আরও পড়ুন: আষাঢ়ের ভারী বৃষ্টিতে ডুবল ঢাকার সড়ক-অলিগলিন


উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল।


ওই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোটা সংস্কারের দাবিতে বড় বিক্ষোভ হয়। কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ কোটা থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটাপদ্ধতি বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।


এর মাধ্যমে ৪৬ বছর ধরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে যে কোটাব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল হয়ে যায়। পরে ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করেন। সেই রিটের রায়ে চলতি বছরের ৫ জুন পরিপত্রের ওই অংশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এরপর চাকরিপ্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামেন।


আরও পড়ুন: যে কারণে হঠাৎ ৩০ মিনিট বন্ধ ছিল মেট্রোরেল


টানা কয়েক দিন আন্দোলনের পর গত ৯ জুলাই কোটা পুনর্বহাল নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। পরেরদিন হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা জারি করেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে। তবে শিক্ষার্থীরা আপিল বিভাগের এই আদেশ প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।


এমএল/