মন ভোলানো রাঙামাটি


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


মন ভোলানো রাঙামাটি

এবার ডিসেম্বরের শীতে প্রায় এক সপ্তাহের সময় নিয়ে গিয়েছিলাম রাঙামাটির কাপ্তাই। রাত সাড়ে এগারোটায় ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে বাসে রওনা দেই। কুয়াশাভেজা ভোরে বন্দরনগরীতে নেমেই টের পাই শীতের একরোখা দাপট। পিঠে ট্রাভেল ব্যাগ নিয়ে মঈন মাহমুদ ভাইয়ের পিছু হেঁটে সোজা চলে যাই তাদের নাসিরাবাদ বাসায়। সেখানে ঘণ্টাদুয়েক ঘুমিয়ে নেই। নাওয়া খাওয়া শেষ করে আবার চট্টগ্রাম শহর থেকে রওনা হই কাপ্তাইয়ের উদ্দেশ্যে। সিএনজি নিয়ে লিচুবাগান গিয়ে আবার অন্য একটি সিএনজি নিয়ে কাপ্তাই বরইছড়ি নেমে পড়ি। সেখানে উঠে ব্যাগপত্র রেখে হাত-মুখ ধুয়ে নেই। উপজেলার পাশে একটি খাবার দোকানে গিয়ে পেটপুরে গরম ভাজি-পরোটা খেয়ে খিদা নিবারণ করি। পাহাড়ি বিকেলটা কাটিয়ে দেই বরইছড়ির বাজার ঘুরে ঘুরে। ছোট এ বাজারে এক-দুটি মাছের এবং ক’টি মুদি দোকান রয়েছে।

চারপাশ টিলা ও পাহাড় ঘেরা। মাঝ দিয়ে চলে গেছে পাকা সড়ক। সিএনজি ছাড়া অন্য যানবাহন খুব একটা চোখে পড়ে না।  একটি জিপ গাড়ি করে চললেন কাপ্তাই লেকের উদ্দেশ্যে। ততক্ষণে পাহাড়ি ঠান্ডায় যেন জমে গিয়েছে আমাদের শরীর। প্রথমদিন এভাবেই কাটিয়ে রাতে রেস্ট হাউসে এসে ঘুমিয়ে পড়ি।

 ওইদিন বিকেলেই সবাই বেরিয়ে পড়ি কাপ্তাইয়ের পাহাড়ি এলাকার ভিতরে। প্রথমে চন্দ্রঘোনার লিচুবাগান ফেরিঘাট। সেখান থেকে খ্রিস্টান অধ্যুষিত মিশন খিয়াংপাড়া ঘুরে পাহাড়ি একটি দোকানে ৪ জন চা খেতে বসি। চা খেয়ে উঁচুনিচু পাহাড়ি গ্রামের ভেতর দিয়ে অবিরাম হাঁটতে থাকি। যদিও খিয়াং মিশনপাড়া ছাড়া আশপাশের এলাকা সম্পর্কে আমাদের দলের কেউ কিছু বলতে পারে না। স্থানীয় আদিবাসী বাড়িগুলো থেকে তথ্য নিয়ে এগুতে থাকি। উঁচুনিচু টিলা পাহাড় পেরিয়ে আমরা যত যেতে থাকি শীতের সন্ধ্যা ততই ঘনিয়ে আসতে থাকে। এভাবে এগিয়ে যেতে যেতে একসময় আরেকটি ছোট পাহাড়ি বাজারে পৌঁছে যাই। ঘণ্টাখানেক সেখানে ঘুরে ফিরে আমাদের অস্থায়ী আবাস উপজেলা রেস্ট হাউসের পথ ধরি।

কাপ্তাইয়ের সৌন্দর্য

কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টি সম্পর্কিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধটি পার্বত্য চট্টগ্রামের কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত। বাঁধের অবস্থানস্থল কাপ্তাইয়ের নাম অনুসারে। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা এটিকে কাপ্তাই হ্রদ বলে থাকেন। বাঁধ তৈরির আগে বর্তমান হ্রদটি ছিল ছোট-বড় পাহাড়, টিলা ও উপত্যকা পরিবেষ্টিত এক বিশেষ বৈশিষ্ট্যময় স্থলভূমি। আসামের লুসাই পাহাড় থেকে সৃষ্ট কর্ণফুলী নদী বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে থেকে আসা কাসালং, মাইনি, রিংকং এবং চেঙ্গী নদীর মিলিত প্রবাহ স্থলভাগের ওপর দিয়ে কর্ণফুলী নামে সরাসরি বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হতো।


কাপ্তাইয়ের সৌন্দর্য

কাপ্তাই হ্রদ সৃষ্টি সম্পর্কিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধটি পার্বত্য চট্টগ্রামের কাপ্তাই উপজেলায় অবস্থিত। বাঁধের অবস্থানস্থল কাপ্তাইয়ের নাম অনুসারে। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা এটিকে কাপ্তাই হ্রদ বলে থাকেন। বাঁধ তৈরির আগে বর্তমান হ্রদটি ছিল ছোট-বড় পাহাড়, টিলা ও উপত্যকা পরিবেষ্টিত এক বিশেষ বৈশিষ্ট্যময় স্থলভূমি। আসামের লুসাই পাহাড় থেকে সৃষ্ট কর্ণফুলী নদী বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে থেকে আসা কাসালং, মাইনি, রিংকং এবং চেঙ্গী নদীর মিলিত প্রবাহ স্থলভাগের ওপর দিয়ে কর্ণফুলী নামে সরাসরি বঙ্গোপসাগরে প্রবাহিত হতো।


যাতায়াত

ঢাকা থেকে কাপ্তাইয়ে শহরের বিভিন্ন স্থান হতে প্রতিদিন অসংখ্য বাস ছেড়ে যায়। তবে সরাসরি ঢাকা থেকে বাসে করেই আপনি কাপ্তাই যেতে পারবেন। সায়েদাবাদ অথবা কমলাপুর থেকে বাসে করে কাপ্তাই যেতে সময় লাগে ৮ ঘণ্টার মতো। এছাড়া যেকোনো উপায়ে চট্টগ্রাম পৌঁছে বহদ্দারহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে কাপ্তাইয়ের বাস পাবেন প্রতি ৩০ মিনিট পর পর।

কোথায় থাকবেন

কাপ্তাইয়ে রাত্রিযাপনের জন্য ভালোমানের বাণিজ্যিক কোনো হোটেল মোটেল নেই। আপনাকে আগে থেকেই কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন সরকারি রেস্ট হাউজ বা বিশ্রামাগারের সন্ধান করতে হবে। সেনাবাহিনী, পিডিবি, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বন বিভাগের রেস্ট হাউজগুলোতে থাকতে পারবেন খুবই কম খরচে। কিন্তু এ জন্য আপনাকে সংশ্লিষ্ট সরকারি অফিসের অনুমতি নিতে হবে।

জি আই/