সাগরে নিখোঁজ ৩: থমথমে সেন্টমার্টিন, বন্ধ দোকানপাট
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:১৫ অপরাহ্ন, ২৫শে জুলাই ২০২৪
কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরে ট্রলার ডুবি ও নিখোঁজদের উদ্ধারে গিয়ে স্পীড বোট ডুবির ঘটনায় এখন ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। আর উদ্ধার তৎপরতায় অসহযোগিতার অভিযোগে কোস্টগার্ডের সাথে দ্বীপবাসি সংঘাতের জের ধরে দ্বীপের পরিস্থিত এখন থমথমে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল থেকে দ্বীপের সকল দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। ঘর থেকে বের হচ্ছে না সাধারণ মানুষ।
সেন্টমার্টিনের কয়েকজন বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম জানান, সাগরে এখনও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে। এর মধ্যে ট্রলার ডুবির ঘটনায় একজন, ট্রলার ডুবির পর উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেয়া স্পীড বোট ডুবিতে ২ জন নিখোঁজ রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিরাজমান পরিস্থিতিতে রাঙামাটির পর্যটন ব্যবসায় ধস
নিখোঁজরা হলেন, সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ সভাপতি নুর মোহাম্মদ সাগর, আব্দুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ ফাহাদ ও আজম আলীর ছেলে মোহাম্মদ ইসমাইল।
সেন্টমাটিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও স্পীডবোট মালিক সমিতি সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, ট্রলার ডুবির ঘটনায় উদ্ধার করতে গিয়ে আরেকটি স্পীডবোট ডুবির ঘটনা ঘটেছে। বৃধবার রাত আটটার দিকে উম্মত আলী ও কালা মানিক নামে দুইজন সাঁতরিয়ে শাহপরীর দ্বীপের কুলে উঠে আসলেও স্পীড বোটে ফাহাদ ও ইসমাইল নিখোঁজ রয়েছে।
এদিকে, ট্রলার ডুবির পর উদ্ধার তৎপরতায় অসহযোগিতার অভিযোগে কোস্টগার্ডের সাথে সেন্টমার্টিনবাসির সংঘাতের জের ধরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দ্বীপের সকল দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। কোস্টগার্ড সদস্যরা দ্বীপে টহল জোরদার করেছেন। তবে ভয়ে দ্বীপের মানুষজন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না বলে জানান খোরশেদ আলম।
আরও পড়ুন: দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে প্রাণ গেল ৩ জনের
বুধবার দুপুর আড়াই টার দিকে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরের গোলারচর মোহনায় এফবি সাদ্দাম নামের একটি ফিশিং ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটে। এসময় ট্রলারে ১২ জনের মধ্যে ১১ জনকে উদ্ধার করা হয়। সাধারণ জেলেরা ও বাসিন্দারা সেন্টমার্টিন ঘাট থেকে যাওয়া কয়েকটি ফিশিং ট্রলার, সার্ভিস বোট ও স্পীড বোট যোগে গিয়ে এই উদ্ধার তৎপরতা চালায়। এসময় ডুবে যায় একটি স্পীড বোট।
সেন্টমার্টিন থেকে কয়েকজন বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ট্রলার ডুবির পর কোস্টগার্ডকে অবহিত করা হলে তারা উদ্ধার তৎপরতায় সাগরে নামেননি। দ্বীপবাসি সার্ভিস বোট ও ফিশিং ট্রলারে উদ্ধারে যাওয়ার আগেই বাঁধা দেন। কিন্তু ১১ জনকে উদ্ধার করে ঘাটে ফিরলে কোস্টগার্ড সদস্য তাদের সাথে ছবি তোলার চেষ্টা করে। এতে দ্বীপবাসির সাথে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত লোকজন কোস্টগার্ডের চৌকি হামলা করে ভাংচুর করে। এসময় ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে কোস্টগার্ড। এতে গুলিবিদ্ধ হন দ্বীপের কোনাপাড়ার করিম উল্লাহর ছেলে হামিদ হোসেন।
এব্যাপারে কোস্টগার্ডের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে আরও একটি মামলা: গ্রেফতার আরও ১১
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, কোস্টগার্ডের সাথে দ্বীপবাসি একটি উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করে। এতে গুলি বর্ষণ করা হয়েছে। একজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে পরিস্থিতি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ফিশিং ট্রলার ডুবির ঘটনায় উদ্ধার করতে গিয়ে আরেকটি স্পিডবোট ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে স্পিডবোটের তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন। কোস্টগার্ডের সাথে দ্বীপবাসি বিরোধ নিয়ন্ত্রণে। নিরসরে কাজ চলছে।
এমএল/