মিয়ানমার সীমান্তে রাতভর গোলার বিকট শব্দ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:২০ অপরাহ্ন, ৩০শে জুলাই ২০২৪


মিয়ানমার সীমান্তে রাতভর গোলার বিকট শব্দ
ছবি সগৃহীত

প্রবল বৃষ্টিতে কক্সবাজারের টেকনাফ রাতভর সীমান্তে থেমে থেমে রাতভর গোলার শব্দ শোনা গেছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টারশেল ও গুলির শব্দে এপারের মানুষদের মধ্যে অজানা আতঙ্ক ভর করেছে। তবে এপাড়ে নাফনদে ও সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার রয়েছে।


সোমবার (২৮ জুলাই) রাত ৮ টা থেকে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ভোর পর্যন্ত টেকনাফের পৌরসভাস্থল জালিয়া পাড়া পূর্বে ওপারে সুদার পাড়া থেমে থেমে ছোড়া আর্টিলারি ও মর্টারের গোলার শব্দ এপার কেঁপে উঠছে। সীমান্তে মিয়ানমারের মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ, এপারে সীমান্তের বসবাসকারীদের মাঝে অস্বত্বি বাড়ছে।


আরও পড়ুন: টেকনাফে সাগর পথে নারীসহ ৫ রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ


রাতভর গোলার শব্দ পাওয়া গেছে উল্লেখ করে টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দা  মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘রাতে সীমান্তের ওপার মিয়ানমার থেকে থেমে থেমে ভারী মর্টারশেলের শব্দ শুনতে পাই। এসব গোলার শব্দে এখানকার মানুষের মাঝে ভয়ভীতি বাড়ছে। ওপাড়ে যুদ্ধ বৃদ্ধির কারনে সেখানকার বসবাসকারী রোহিঙ্গারা এপাড়ে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে।’


সীমান্তের বাসিন্দারা বলছেন, গত কয়েকদিন ধরে টেকনাফে প্রবল বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্য গত এক সপ্তাহের পর আবার নিজেদের অস্বিস্ত রক্ষায় মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির মধ্য এখনো যুদ্ধ চলছে। এতে ওপারের বেশ কিছু সীমান্ত চৌকি এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির দখলে।


ওপারের যুদ্ধের কারনে এপারে সীমান্তের টেকনাফের নাইট্যংপাড়া, কায়ুকখালীপাড়া, জালিয়াপাড়া, চৌধুরী পাড়া, উত্তর পাড়া, দক্ষিন পাড়া, কুলালপাড়া, খাংগার ডেইল, নাজিরপাড়া, মৌলভীপাড়া, সাবরাংয়ের মগপাড়া, আছারবনিয়া, ডেগিল্ল্যা বিল, নয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ায় মর্টারশেল ও বোমার বিকট শব্দে বাড়ি-ঘর কাঁপছে।


কেননা সীমান্তের পূর্ব দিকে মিয়ানমারের কুমিরহালি, নাইচদং, কোয়াংচিগং, শিলখালী, নাফপুরা গ্রামে গৃহযুদ্ধ চলছে। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা টহল বৃদ্ধি করেছেন।


আরও পড়ুন: টেকনাফে নাফনদে এক মৃতদেহ উদ্ধার


টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন,  'সীমান্তবর্তী দেশ রাখাইনে তাদের অভ্যন্তরের দূরে গোলাগুলি চলমান রয়েছে। ফলে কোন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটে, সেজন্য আমরা সীমান্তে রাত-দিন টহল জোরদার রেখেছি।


সীমান্তের কাছাকাছি জালিয়া পাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্তে বড় ধরনের গোলার শব্দ এপারে পাওয়া যাচ্ছে। এ শব্দে আতঙ্কে অনেকের ঘুম ভাঙছে। সীমান্তের ওপারে মংডুতে চলামান যুদ্ধে গোলাগুলি বৃদ্ধি পেয়েছি। তবে সীমান্তের ওপারে রাখাইনে চলমান যুদ্ধের পরিস্থিতে নতুন করে বাংলাদেশে যাতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ না ঘটে, সেজন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এবং সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড বিজিবি।’

 

আরও পড়ুন: টেকনাফ-সেন্টমার্টিন বিকল্প নৌরুটে আবারও চলাচল ব্যাহত


এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন,'ওপারে সংঘাত বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্তে নজরদারী বাড়ানো হয়েছে। মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলো সর্তক অবস্থা রয়েছে। গোলার শব্দে সীমান্তের মানুষরা যাতে নির্ভয়ে থাকে, সেজন্য সীমান্তের বসবাসকারীদের খোঁজখবর রাখছি।’  


এসডি/