তাহিরপুর সীমান্তে তিন দিনব্যাপী দুই ধর্মীয় মিলনমেলা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


তাহিরপুর সীমান্তে তিন দিনব্যাপী দুই ধর্মীয় মিলনমেলা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্ত এলাকায় যাদুকাটা নদীর তীরে ২৯ মার্চ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ৩ দিনব্যাপী দুই আধ্যাত্মিক মহা সাধক শ্রীশ্রী অদ্বৈত আচার্য্যের পণাতীর্থধামে গঙ্গাস্নান যাত্রা “মহা বারুণী স্নান” এবং হযরত শাহ আরফিন  (রঃ) এর বাৎসরিক উরশ মোবারককে কেন্দ্রকরে ধর্মীয় সম্প্রীতির মিলনমেলা। 

বৈশ্বিক মহামারী কোভিড ১৯ করোনাভাইরাসের প্রদুর্ভাবের কারেণ গত ২০২০/২১ সালে প্রশাসনিকভাবে দুই বছর বন্ধ থাকার পর  জেলার তাহিরপুর উপজেলা দুই ধর্মের দুই আধ্যাত্মিক সাধক অদ্বৈত্য আচার্য্য মহাপ্রভুর রাজারগাঁও নবগ্রাম আখড়াবাড়ি সংলগ্ন দীর্ঘ ২৩ কিলোমিটার দৈর্ঘের সীমান্ত নদী যাদুকাটা অববাহিকার পণাতীর্থধামে প্রায় ৭১৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন মহা-বারুণী মেলা ও গঙ্গাস্নান যাত্রা এবং একই সাথে একই দিনে হযরত শাহ জালাল (রঃ) এর ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সফর সঙ্গী হযরত শাহ্ আরেফিন (রঃ) এর পবিত্র বাৎসরিক ওরশ মোবারক ওই দুই উৎসবকে কেন্দ্র হিন্দু/ মুসলিম দুই ধর্মের লোকজন বিভিন্ন কর্মসুচির মধ্যে দিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে আগামী ৩০ মার্চ বুধবার। 

তবে এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে এই প্রথম হযরত শাহ্ আরেফিন আস্তানা এলাকায় ও অদ্বৈত আচার্য্য মহাপ্রভুর আখড়াবাড়ি এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।

তিন দিন ব্যাপী যাদুকাটার পণাতীর্থধামে গঙ্গাস্নান আর বারুণী মেলা ও শাহ আরেফিন (রঃ) ওরশ উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর উপজেলা সীমান্ত নদী যাদুকাটার প্রায় ৩ কিলোমিটার অংশে উৎসব চলে সপ্তাহব্যাপী। 

গঙ্গাস্নান ও শাহ আরেফিন ওরশে যোগদিতে ইতিমধ্যেই সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ও বিভাগসহ সুদূরইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে দুই ধর্মের লাখ লাখ ভক্তবৃন্দ, আশেখান, পাগল–ফকির উপজেলার লাউড়েরগড় সীমান্তের ভারত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১২০৩/এস এলাকার সীমান্ত নদী যাদুকাটা পূর্বপাড় শাহিদাবাদ এলাকায় হযরত শাহ আরেফিন (রঃ) এর আস্তানায় সহ এর আশপাশে গ্রাম গুলোতে ও লাউড় রাজ্যের নবগ্রাম রাজারগাঁও অদ্বৈত্য আচার্য্য মহাপ্রভুর আখড়াবাড়ি ও গড়কাঠি শ্রী শ্রী রাধা মদন গোপাল জিউ পণাতীর্থ স্মৃতি, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ ইস্কন মন্দিরসহ এর আশপাশের গ্রাম গুলোতে সমেবেত হতে থাকে। প্রাচীন এই ৭১৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী পণাতীর্থ গঙ্গাস্নান যাত্রায় প্রতি বছর চৈত্র মাসে মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পুণ্যার্তীরা অদ্বৈত আচার্য্য জন্মধাম নবগ্রম রাজারগাঁও আখড়া বাড়ি ও যাদুকাটা নদীর তীরে এসে সমেবেত হয়। 

পণাতীর্থে স্নান করে তাদের সারা বছরে পাপ মুছনের আশায়।  তাদের ধারণা সবতীর্থে বারবার পণাতীর্থে একবার।

উপজেলার বাদাঘাট উত্তর ইউপির লাউড় রাজ্যের হাবেলীর পুরোহিত অদ্বৈত মহা প্রভুর আখড়া বাড়ি ও জন্মস্থান সংরক্ষণ সংস্কার কার্যনির্বাহী কমিটি সূত্রে জানা যায়, দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ স্নান যাত্রার মূখ্য সময় এবছর ১৫ ই চৈত্র ১৪২৮বঙ্গাব্দ ৩০ মার্চ ২০২২ খ্রিঃ বুধবার সকাল দিবা ঘঃ ৬ টা ৬ মিনিট ৯ সেঃ থেকে ঘঃ ১২ টা ২৩ মিনিট ৫ সেঃ পর্যন্ত মধুকৃষ্ণাত্রয়োদশী নির্ধান করা হয়েছে।

এসএ/