চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আউটসোর্সিং কর্মচারীদের শাহবাগ অবরোধ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:১৬ অপরাহ্ন, ১৭ই আগস্ট ২০২৪

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন সরকারি সব দপ্তর-অধিপ্তর ও সাহিত্য শাষিত প্রতিষ্ঠানে আউটসোর্সিং, দৈনিক মজুরিভিত্তিক এবং প্রকল্পে কর্মরত কর্মচারীরা।
শনিবার (১৭ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। আর যা পরবর্তী সময়ে রূপ নিয়েছে অবরোধে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে শাহবাগ এলাকার যানবাহন চলাচল। এতে করে বেশ ভোগান্তিতে পড়েছেন এ পথে চলাচলকারী সাধারণ মানুষজন।
আরও পড়ুন: নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
এসময় তারা বলেন, ‘কথায় কথায় চাকরি নাই, আমরা কি স্বাধীন ভাই’, ‘এক দফা এক দাবি, স্থায়ীকরণ করতে হবে’, ‘কথা নয় আশ্বাস নয়, এবার চাই বাস্তবায়ন’, ‘ঈদ যায় বৈশাখ যায়, ছেলে-মেয়ে আমার বোনাস চায়’, ‘আমাদের দাবি পূরণ করো, কথায় কথায় চাকরি যাওয়া বন্ধ করো’ সহ বিভিন্ন স্লোগান ও পোস্টার প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীরা বলেন, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বেসরকারি কর্মচারীদের বয়স শিথিল করে চাকুরী স্থায়ীকরণ করতে হবে।
আউটসোর্সিংয়ের আওতায় নিয়োজিত সরকারি দপ্তর-অধিদপ্তরে কর্মচারীদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে ব্যবস্থা নিতে হবে।টেন্ডার জটিলতায় কর্মরত অনেকের চাকরি চলে যায়। আবার বছর শেষে জুন মাসে রিনিউ করার নামে কোম্পানি বিপুল টাকা দাবি করেন। আর না দিলে চাকরি চলে যায়। আবার প্রতি মাসে বেতনও পাওয়া যায় না। অনেক সময় ৫-৬ মাস বা ১-২ বছরও বেতন বকেয়া থাকে।
আরও পড়ুন: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সরানোর প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন সাখাওয়াত হোসেন
ঢাকা ওয়াসার বেসরকারি কর্মচারী আব্দুল আউয়াল বলেন, কোনো অপরাধ ছাড়াই বিনা কারণে কথায়-কথায় দক্ষ কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা হয়। সরকারি দপ্তর, অধিপ্তর ও পরিদপ্তরে অনেকেই বিনা অপরাধে এবং ঠিকাদারকে ঘুষ দিতে পারেননি বিধায় অনেকে চাকরি হারিয়েছেন।
বর্তমান সরকারের কাছে চাকরি স্থায়ী করার দাবি জানিয়ে পেট্রোবাংলাসহ ১৪ টা কোম্পানির মূল সমন্বয়ক জিটিসিএলের বেসরকারি কর্মচারী মো. মাঈনুল ইসলাম সুমন বলেন, আমরা অনেক বছর ধরে বেতন বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আওয়ামী লীগ সরকার চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ বন্ধ করে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগ শুরু করে। ফলে আমরা বিভিন্ন বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। অবিলম্বে চাকরি রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্তিকরাসহ ঠিকাদারি প্রথা চিরতরে বিলুপ্ত করতে হবে।
আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য মুজিবুর রহমান বলেন, যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের সবাইকে পুনর্বহাল করতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা শাহবাগ ছাড়বো না। আমাদের ঝুঁকি ভাতা, প্রণোদনা, ঈদ বোনাস, বৈশাখী ভাতা থেকে বঞ্চিত করা হয়। সরকার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতন বিল পরিশোধ করার কথা বললেও ঠিকাদাররা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা না দিয়ে হাতে হাতে দেয়। তারা আর ব্যাংকের চেক আউটসোর্সিং কর্মচারীদের থেকে আগেই নিয়ে রাখেন। জেলা উপজেলায় ঠিকাদারের হাত থেকে বেতন নিতে হচ্ছে। তারা সরকার নির্ধারিত বেতন না দিয়ে মনগড়া বেতন দেয়। আবার বেতন নির্ধারিত কোনো তারিখও ঠিক থাকে না।
আরও পড়ুন: ছাত্র আন্দোলনে হতাহতদের চিকিৎসা ব্যয় বহন কররে সরকার
তিনি আরও বলেন, চরম মানবেতর জীবনযাপন করতে করতে এখন অনেক কর্মচারীরা নিরূপায় হয়ে অনেকেই আত্মহত্যার পথ খুঁজে নিচ্ছে। স্বাধীন বাংলায় আমরা কোনো বৈষম্য চাই না। মান-মর্যাদার সঙ্গে জীবনধারণ করার অধিকার চাই।
অপরদিকে, শাহবাগ মোড় অবরোধ থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর কোনো সদস্যের আশপাশে কোনো অবস্থান নিতে দেখা যায়নি।
এমএল/