মৌলভীবাজারে মনু ও ধলাই নদীর পানি কমতে শুরু করেছে


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, ২৩শে আগস্ট ২০২৪


মৌলভীবাজারে মনু ও ধলাই নদীর পানি কমতে শুরু করেছে
ছবি: প্রতিনিধি

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা, উনকোটি, কৈলাশহরে শুক্রবার (২৩ আগস্ট) গভীর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় উজানে ঢলের পানি কমতে শুরু করেছে।  ফলে জেলার কুলাউড়া, বড়লেখা, কমলগঞ্জ, রাজনগর ও জুড়ি উপজেলার নদী ও পাহাড়ি ছড়ার পানি কমছে। ধলাই নদীর পানি  বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, মনু নদীর পানিও কমতে শুরু করেছে।


আরও পড়ুন: মৌলভীবাজার ভয়াবহ বন্যায় দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি


শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকাল ৯টার দিকে মৌলভীবাজারের পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র এ তথ্য জানায়। 

আকস্মিক বন্যায় হঠাৎ তলিয়ে গেছে জেলার কুলাউড়া, জুড়ী, কমলগঞ্জ, রাজনগর ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অসংখ্য বসতঘর, ফসলের খেত, আঞ্চলিক সড়ক, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।


বন্যায় কমপক্ষে আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। মনু, ধলাই ও জুড়ী নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বন্ধ রয়েছে রেল ও সড়ক যোগাযোগ। চার উপজেলার সঙ্গে জেলা সদরের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।



মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ৯টায় ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার ৮১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার মনু নদী (মনু রেলওয়ে ব্রিজ) বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার, চাঁদনীঘাট এলাকায় ১১৫ সেন্টিমিটার, জুড়ী নদীর পানি ভবানীপুরে বিপৎসীমার ১৯৬ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 


মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, কমলগঞ্জে ধলাই নদীতে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে। উজানে ভাড়ি বৃষ্টি না হওয়ায় মনু নদীর পানিও কমছে। বিকেলের মধ্যে মনু নদীতে পানি আরও কমতে পারে। 


অপরদিকে, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, মিরপুর-শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার-শেরপুর আঞ্চলিক সড়কের মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বালিয়াকান্দি এবং শাহবন্দর বন্যার পানিতে আংশিক প্লাবিত হয়েছে। ফলে সড়ক-সংলগ্ন মনু নদের শহর রক্ষা বাঁধটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়া পর্যন্ত সড়কে যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। সবাইকে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের অনুরোধ করা হয়েছে।



আরও পড়ুন: মৌলভীবাজারে ৫ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে


স্থানীয় লোকজন জানান, মৌলভীবাজার থেকে সিলেটের সড়ক যোগাযোগের জন্য মৌলভীবাজার-শেরপুর-সিলেট আঞ্চলিক সড়ক এবং মৌলভীবাজার-রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক সড়ক দুটিতে বন্যার পানি ওঠায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

সওজ মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার হামিদ বলেন, ‘বাঁধের ছিদ্র দিয়ে পানি বের হওয়ায় দুটি জায়গা (বালিয়াকান্দি ও শাহবন্দর) বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।


জেলা প্রশাসন জানায়, মৌলভীবাজার জেলার ৭টি উপজেলায় আনুমানিক ১ লাখ ৯৫ হাজার মানুষ বন্যাকবলিত। আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেছেন ৬ হাজার ৬৫ জন। বন্যাকবলিতদের জন্য ৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যার্তদের জন্য ইতিমধ্যে ২৮৫ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।


এসডি/