রোহিঙ্গা ঢলের ৭ বছর :সশস্ত্র গোষ্ঠির তৎপরতায় অস্থিতিশীল ক্যাম্প


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:১২ অপরাহ্ন, ২৪শে আগস্ট ২০২৪


রোহিঙ্গা ঢলের ৭ বছর :সশস্ত্র গোষ্ঠির তৎপরতায় অস্থিতিশীল ক্যাম্প
সংগৃহীত

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে আরকান আর্মি ও জান্তার লড়াই, বাংলাদেশে সরকারের পট পরিবর্তনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৩ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। এসব ক্যাম্প কেন্দ্রিক সশস্ত্র গোষ্ঠির তৎপরতাও বেড়েছে। গত ২ মাসে এসব ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অন্তত ১০ টি জি থ্রি রাইফেল সহ বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে।


আরও পড়ুন: কক্সবাজার-মহেশখালী নৌ পথে অনিয়ম বন্ধে ১০ দাবি


আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বিজিপি এ ধরণের অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতে বিজিপি পালিয়ে যাওয়ার সুযোগে এসব অস্ত্র রোহিঙ্গাদের কাছে পৌঁছে গেছে।


কক্সবাজার জেলা পুলিশের তথ্য মতে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট এর পর থেকে ২০১৪ সালের জুলাই পর্যন্ত ১১ ধরণের অপরাধে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক ৩৮৩২ টি মামলা হয়েছে। যার মধ্যে খুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে ২৩৫ টি। এর মধ্যে জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত খুনের মামলা হয়েছে ৩২ টি। এই ৭ মাসে অস্ত্র উদ্ধারের মামলা ৯৪ টি, মাদকের মামলা ১৬০ টি।


কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক মামলার পরিসংখ্যা মতে ২০১৭ সালে ৭০ টি, ২০১৮ সালে ২৪৯ টি, ২০১৯ সালে ২৫৯ টি, ২০২০ সালে ৩৪৯ টি, ২০২১ সালে ৬২৪ টি, ২০২২ সালে ১১৩৯ টি, ২০২৩ সালে ৬৮৩ টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার পরিসংখ্যা মতে অপরাধ ক্রমাগত বাড়ছে। গত ৭ মাসে ২৩৫ টি মামলার মধ্যে অস্ত্র ও খুনের মামলা সমুহ তদন্তকালে দেখা গেছে সশস্ত্র গোষ্ঠিগত সংঘাত কিছুটা বেড়েছে। ক্যাম্পের নিরাপত্তায় থাকা এপিবিএন পুলিশ, জেলা পুলিশ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে।


গত ৭ মাসে ৩২ টি খুনের মামলার বিপরীতে নিহতের সংখ্যা ৪৫ জন। এসব খুনের ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠণ আরসা ও আরএসও মধ্যে বিরোধের জের ধরে খুন হয় ৩৯ জন। অপর ৬ টি খুনের ঘটনা ভিন্ন। রোহিঙ্গাদের এই দুই সশস্ত্র গোষ্ঠি নিজের আধিপত্য বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এসব খুনের ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৬৬ জনই ওই দুই সংগঠনের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।


আরও পড়ুন: কক্সবাজারে সাবেক হুইপ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌর মেয়রসহ ১৫০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা


পুলিশ বলছে, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও অস্থিরতা বেড়েছে। মিয়ানমার থেকে এপারে অস্ত্র আনার প্রমাণও মিলেছে অভিযানে ।


ফলে প্রত্যাবাসন অনিশ্চিত এবং মিয়ানমারের পরিস্থিতি বিবেচনায় ক্যাম্প কেন্দ্রিক কঠোর নজরধারী, সশস্ত্র গোষ্ঠি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ সজাগ থাকার কথা বলেছেন অভিবাসন ও রোহিঙ্গা বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর।


তিনি বলেন, ক্যাম্প কেন্দ্রিক কোন অপরাধ যেন না হয় এটা সর্বোচ্চ গুরুত্ব না দিলে বাংলাদেশের জন্য হুমকি হবে সশস্ত্র রোহিঙ্গা গোষ্ঠি।


এসডি/