কক্সবাজার-মহেশখালী নৌ পথে অনিয়ম বন্ধে ১০ দাবি
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭:৩০ অপরাহ্ন, ২০শে আগস্ট ২০২৪
কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে অনিয়ম, হয়রানি, দুর্নীতি, নৈরাজ্য ও লুটপাট বন্ধসহ ১০ দফা দাবিতে কক্সবাজার শহরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করেছে ছাত্র-জনতা।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বেলা ১১ টায় জেলা শহরের ঘুনগাছতলা মোড়ে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ শুরু হয়। এরপর মোড়ের চারপাশে ছাত্রজনতা অবস্থান নিয়ে বিমানবন্দর সড়ক, প্রধান সড়ক ও শহীদ সরণী অংশে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। প্রায় আড়াই ঘন্টা অবরোধের পর কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) রুবাইয়াত আফরোজ ঘটনাস্থলে গিয়ে সব দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন। এর প্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেয় ছাত্রজনতা।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
এসময় আন্দোলনকারি ছাত্রজনতা প্রতিনিধিরা বলেন, কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে কতিপয় সিন্ডিকেট প্রশাসনের সহযোগিতায় মহেশখালীর মানুষকে জিম্মি করে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে। ৭০ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে এখন স্পিডবোট ভাড়া ১১০ টাকা। যা সাধারণ যাত্রীদের পক্ষে বহন করা সম্ভব না। ১১০ টাকার মধ্যে ১০ টাকা রাজস্ব হিসেবে নিয়ে নেয় জেলা প্রশাসন। এছাড়া ৬ নং ঘাটে ৫ টাকা রাজস্ব দিতে হয়। আসা-যাওয়াতে ৩০ টাকা রাজস্ব দিতে হয় একজন যাত্রীকে। এছাড়াও ঘাটে অনিয়ম, দুর্নীতি চরম পর্যায়ে।
এর প্রেক্ষিতে তারা ১০ দফা দাবি তুলেন। দাবি সমুহ হল: ১. কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে স্পীডবোট ভাড়া জনপ্রতি ৯০টাকা করে ১০ জন যাত্রী পরিবহণ করতে হবে। ২. দ্রুত গণপরিবহণ চালু করতে হবে। অর্থাৎ কাঠের তৈরী মাঝারি সাইজের লঞ্চ সার্ভিস চালু করতে হবে। যেখানে যাত্রী ছাউনীসহ লোকজন বসার জায়গা থাকবে। ৩. গামবোট হচ্ছে মালবাহী বোট। এগুলো নিয়ে যাত্রী পরিবহণ করা যাবে না। সাময়িক সময়ের জন্য (যতদিন গণপরিবহন চালু হবে না) ৪০জন যাত্রী নেয়া যাবে। ভাড়া নিতে হবে জনপ্রতি ৩০টাকা। ৪. মহেশখালী-চৌফলদন্ডী নৌরুটে গামবোটে ৩০জন যাত্রী পরিবহণ করবে। ভাড়া নিবে জনপ্রতি ২৫ টাকা। ৫. সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত স্পীড বোট এবং রাত ১০টা পর্যন্ত গণপরিবহন চলা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি যাত্রী সুবিধার জন্য টয়লেট, সুপেয় পানি, বসার স্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। ৬. ঘাটে টিকিট সিস্টেম চালু করতে হবে। সেইসাথে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে তদারকি করাসহ প্রত্যেক বোট চালকদের ছবি সম্বলিত পরিচয়পত্র পরিধান ও বোটের নাম্বার স্থাপন করতে হবে। ৭. মহেশখালী ঘাটে বিনা টোলে দ্রুত যাত্রীসেবার পন্টুন স্থাপন করতে হবে। ৮. ঘাটে ভিআইপি প্রথার নাম করে কাউকে বাড়তি সুবিধা দেয়া চিরতরে বন্ধ করতে হবে। অসুস্থ রোগীদের প্রাধান্য দিতে হবে। ৯. ফিটনেস বিহীন বোট দ্রুত যাছাই করে নৌপথ থেকে তুলে ফেলতে হবে। ১০. পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট রাখতে হবে। এবং যাত্রীদের মাঝে লাইফজ্যাকেট ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
আরও পড়ুন: নাফনদী থেকে অজ্ঞাত ২ জনের মরদেহ উদ্ধার
এসময় ছাত্রজনতার পক্ষ থেকে সবগুলো দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সড়কে অবস্থানের ঘোষণা দেয়া হয়। প্রয়োজনে জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন বক্তারা।
এর সময় কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) রুবাইয়াত আফরোজ ঘটনাস্থলে এসে বুধবার থেকে ধারাবাহিকভাবে সকল দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারিরা মিছিল সহকারে কেন্দ্রিয় শহিদ মিনারে গিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন। তারা বলেন, কিছু দিনের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে তারা আবারও আন্দোলনের কর্মসূচি দেবেন।
এমএল/