তথ্য চাওয়ায় সওজ নির্বাহী প্রকৌশলী সাংবাদিককে হুমকি
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮:৩৭ অপরাহ্ন, ৩১শে আগস্ট ২০২৪
দৈনিক যুগান্তর পটুয়াখালী উপকূলী প্রতিনিধি গণমাধ্যমকর্মী বিলাস দাস কে হুমকির অভিযোগ উঠেছে। পটুয়াখালী সড়ক ও জনপদ নির্বাহী প্রকৌশলী এমন হুমকি প্রদান করছে বলে জানায় গণমাধ্যমকর্মী। নির্বাহী প্রকৌশলীর মামলা হামলার আতঙ্কে আতংকিত, ভীতস্ব ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন গণমাধ্যম কর্মীর পরিবার।
পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ ও তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করায় দৈনিক যুগান্তরের উপকুল প্রতিনিধি বিলাস দাসকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সওজ বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী এ.এম আতিক উল্লাহর বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: অবরোধ শেষেও দেখা নেই ইলিশের
এ বিষয়ে শুক্রবার (৩০ আগষ্ট) পটুয়াখালী সদর থানায় একটি সাধারন ডায়েরি হয়। জিডি নং-১১৫২/২৪। অভিযোগে উল্লেখ করেন, “১৫শ কোটি টাকার পায়রা সেতুতে লুটপাটের মহোৎসব। দুই-তৃতীয়াংশ টোলের অর্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীর পকেটে। এ বিষয়ে মুখ খুলছে না সওজ, তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চাওয়া গুঞ্জনে দুর্নীতি ঢাকতে তদন্ত-অডিট। এবং পায়রা সেতু ব্যবস্থাপনায় মহোৎসব ত্রুটি ৷ সাধারণ পদ্ধতিতে পার হচ্ছে ভারী যান বাহন সম্প্রতি সময়ে শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশ হয়। এছাড়া পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে রবিবার (২৫ আগষ্ট) তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে লিখিত আবেদন করায় সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিক উল্লাহ বুধবার (২৮ আগষ্ট) বিকেলে তাকে ফোন করলে তিনি ক্ষিপ্ত কণ্ঠে তথ্য চেয়ে আবেদন করার কারন জানতে চান। এসময় নির্বাহী প্রকৌশলী তাকে বলেন-আপনি পায়রা সেতুর টোল প্লাজা নিয়ে নিউজ করছেন। আপনার সর্ম্পকে আমি সব ধরনের খোঁজ-খবর নিছি এবং জানি। এখন আবার তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করছেন।
গভমেন্ট কিন্তু আপনার বিরুদ্ধে আমাকে মামলা করার রাইট ও হুকুম প্রদান করেছে ৷ আপনার পেছনে আমাদের অফিসিয়াল গোয়েন্দা কে তথ্য প্রকাশ করছে, গভমেন্ট অফিসার হিসেবে আমাকে রাইট দিছে এবং সংবিধানও দিছে। এর পূর্বে টোল প্লাজা নিয়ে বিশাল রিপোর্ট করছেন ৷ ভাবছিলেন যে অনেক কিছু করে ফেলবেন। আপিন সাংবাদিক হয়ে কি সবার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দিতে পারেন? এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিলাসের সাথে আতিক উল্লাহর ২১ মিনিটি ৫০ সেকেন্ড কথা হয়। একপর্যায় তিনি পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব থাকা কালিন সময়ের সব ধরনের কার্যক্রম নিয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ, উদঘাটন এবং ঘাটাঘাটি করতে নিষেধ করে। যা একজন সাংবাদিকের পেশা ও জীবনের প্রতি হুমকী স্বরুপ।
এ বিষয়ে সাংবাদিক বিলাস দাস বলেন, একজন সাংবাদিক হিসেবে আমি আমার কর্তব্য পালন করেছি। সড়ক বিভাগের কোন কর্মকর্তার সাথে আমার কোন বিরোধ নেই। পটুয়াখালী সড়ক বিভাগের র্নিবাহী প্রকৌশলী এ.এম আতিক উল্লাহসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে টেন্ডার দুর্নীতি, অর্থের বিনিময় র্নিদিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়া এবং ভুয়া বিল-ভাউচারে বরাদ্দের ৭০ শতাংশ অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং সওজ প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দেয়া হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে কোন তদন্ত অথবা যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে সওজের কাছে তথ্য চাওয়া হলে তারা তথ্য দেয়ার নামে তালবাহানা শুরু করে। তাদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও প্রতিবেদন প্রকাশ না করে প্রভাবশালী মহলকে দিয়ে প্রভাবিত করা হয়। সর্বশেষ সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে ফোন করে কৈফিয়ত জানতে চান।
আরও পড়ুন: বোরাহানউদ্দিনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের বিএনপি'র অনুদান প্রদান
এ প্রসঙ্গে পটুয়াখালী সওজের বর্তমান নির্বাহী প্রকৌশলী জামিল আক্তার বলেন-ব্যস্ততার কারনে আবেদনটি আমার নজরে আসেনি। আতিক উল্লাহ সাহেব র্দীঘদিন এখানে থাকায় কেউ হয়তো আবেদনের কপি তাকে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জসীম বলেন-লিখিত অভিযোগ জিডি হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করেছি এবং একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত সওজ বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিক উল্লাহের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার সাথে কথা বলা যায়নি ৷
এমএল/