গুম-খুন, বর্বরতা তদন্তে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল ঢাকায়
বশির হোসেন খান
প্রকাশ: ০১:২৪ অপরাহ্ন, ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৪
ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মমভাবে দমনের চেষ্টা করেছিল বিদায়ী শেখ হাসিনা সরকার। এতে কঠোর পদক্ষেপ তথা গুম, খুন এবং বর্বরোচিত নির্যাতনের রোমহষর্ক ঘটনাগুলো তদন্তে জাতিসংঘের ৮ সদস্যের তথ্যানুসন্ধান দলের দু'জন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য বাংলাদেশে পৌঁছেছেন। বাকিরা পথে আছেন। ঢাকা ও জেনেভার একাধিক কূটনৈতিক সূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। জানিয়েছে, জাতিসংঘ টিম মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিক তদন্ত কার্য শুরু করবে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী চার সপ্তাহ অর্থাৎ প্রায় ১ মাস তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অকুস্থল সরজমিনে ঘুরে দেখবেন। নির্মমতার শিকার ব্যক্তি, ভুক্তভোগীদের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করবেন। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ঘটনার আদ্যোপান্ত বিশ্লেষণ তথা যথাসম্ভব ঘটনার আলামত সংগ্রহ করবেন। কাজের প্রয়োজনে বাংলাদেশে তাদের অবস্থানকাল আরও দীর্ঘ হতে পারে বলে আভাস মিলেছে।
সূত্র মতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধি, ছাত্র-জনতার প্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, দেশীয় অপরাধ বিশেষজ্ঞ এবং আইনজ্ঞদের সঙ্গে সফরকালে জাতিসংঘ টিমের সিরিজ আলোচনা হবে। তদন্ত টিম খতিয়ে দেখবে ছাত্র-জনতার আন্দোলন কতটা নৃশংসভাবে দমনের চেষ্টা করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। গেল জুলাই ও আগস্টের শুরুর দিকে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ ১৫ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তের ম্যান্ডেড রয়েছে জাতিসংঘ টিমের। আগামী নভেম্বরের শেষের দিকে বাংলাদেশের আপৎকালীন সরকার এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে তারা তদন্ত রিপোর্ট জমা করবেন। পরবর্তীতে রিপোর্টটি জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে।
আরও পড়ুন: সেনাসদর পরিদর্শন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
স্মরণ করা যায়, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক তার নিজস্ব এখতিয়ারে তথ্যানুসন্ধান দল পাঠাচ্ছেন। ড. ইউনূস গেল ২৫ শে আগস্ট ভলকার তুর্ককে লেখা চিঠিতে দ্রুততম সময়ে তদন্ত শুরুর অনুরোধ করেছিলেন। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ও অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে (১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট) মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার জাতিসংঘের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সরকার জবাবদিহি নিশ্চিত করতে চায়। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে গত মাসের শেষের দিকে জাতিসংঘের প্রাথমিক তথ্যানুন্ধান টিম বাংলাদেশ ঘুরে গেছে।”
আরও পড়ুন: মাজারের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে ডিসিদের নির্দেশ
এবার পূর্ণাঙ্গ টিম আসছে। জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের রিপোর্ট মতে, গত ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভ ও পরবর্তী সহিংসতায় কমপক্ষে ৬৫০ বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। “বাংলাদেশের সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও অস্থিরতা বিষয়ে প্রাথমিক বিশ্লেষণ” শীর্ষক রিপোর্টটি জেনেভা থেকে গত ১৫ই আগষ্ট প্রকাশিত হয়।
জেবি/এসবি