জাবিতে ধর্মীয় মর্যাদায় পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উদযাপন


Janobani

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:৪২ অপরাহ্ন, ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৪


জাবিতে ধর্মীয় মর্যাদায় পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উদযাপন
ছবি: প্রতিনিধি

সজীবুর রহমান: প্রায় দেড় হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় (১২ রবিউল আউয়াল) পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হয়েছে। এটি বিশ্বনবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর জন্ম এবং ওফাতের দিন।


সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দিনটি উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।


আরও পড়ুন: জাবিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধসহ তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল


এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য হযরত মোহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবনীর উপর কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভা শেষে বিজয়ী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পৃথকভাবে পুরষ্কার দেয়া হয়।


আলোচনা সভায় অধ্যাপক ড. মো. মানছুরুল হকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) ড. মো. আব্দুল্লা হেল বাকী। তিনি রাসুল (সাঃ) এর সমাজ, বাস্তবতা, পারিবারিক জীবনযাপন পদ্ধতি, সামাজিক সম্পর্ক, অর্থনৈতিক লেনদেন, রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ড সব ক্ষেত্রেই নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পদচারণার ব্যাখ্যা করেন । রাসুলের জীবন, শৈশব, বাল্যকাল, সাংসারিক জীবন, নবুয়ত লাভ এবং তার জীবনে ঘোটে যাওয়া প্রত্যকটি মুহুর্ত নিয়ে আলোচনা রাখেন। তিনি আরও বলেন, কেউ যদি ত্রিশ পারা কোরআন অধ্যায়ন করে, প্রতিটি সুরায় থাকা নবীর নাম এবং তার কার্যবিবরণী কর্ম কিরুপ ছিল এইসব ব্যাখ্যা লিখে একটি ডাইরি তৈরি করতে বলেন। পরবর্তীতে নোটকৃত ডায়েরি মূল্যায়ন সাপেক্ষে উমরাহ হজ্জ করাবেন বলে ঘোষণা দেন।


আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব মাওলানা ড. মাহমুদুল হাসান ইউসুফ বলেন, ইসলামকে নিয়ে সমাজে কিছু ভুল ধারণা আছে। সে সমস্যাগুলো ধরে অন্যরা  নানা প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে৷ তারা ভার্সিটিতে ছাত্রদের কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়ে মনে দ্বিধা সৃষ্টি করে। বিদায় হজ্জের ভাশজণে রাসূল (সা) সাম্য, মানবতা, নারী অধিকারের স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করেছেন। কিয়ামত পর্যন্ত কোরআনের বিধান প্রাসঙ্গিক। কুরআন ও হাদীদের মূল উৎস থেকে জ্ঞান আহরণ করলে সকল ধরণের বিভ্রান্তি দূর করা সম্ভব।


আরও পড়ুন: জাবিতে প্রশাসনিক পদ শূণ্য থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে শিক্ষার্থীরা


প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, মহানবী (সা) সকলের জন্য এক উত্তম আদর্শ ছিলেন। আমাদের মধ্যে মতভিন্নতা, নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ ভুলে এগিয়ে যেতে হবে। ধর্মীয় জ্ঞানের প্রচারের মাধ্যমে সবার জন্য ভ্রাতৃত্ব ভালোবাসা নিয়ে একটি সুন্দর সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব৷ অন্যের মত প্রকাশের প্রতি সম্মানবোধ থাকতে হবে। আমি নিজেও একজন একটা প্র‍্যাকটিসিং মুসলিম। আমি নিজেকে এই পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি মনে করি, ধর্মীয় জ্ঞানের বেলায় নিজের উপলব্ধি সবার আগে প্রয়োজন। সমাজে ভিন্নমত প্রকাশের জন্য কেউ যেন অনিরাপদ না থাকে৷ এটাই সবচেয়ে বেশি জরুরি।


ঈদে মিলাদুন্নবী আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কামরুল আহসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত) ড. মো. আব্দুল্লা হেল বাকী, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. এ বি এম আজিজুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব অধ্যাপক ড. মাওলানা মাহমুদুল হাসান ইউসুফ প্রমুখ।


আরএক্স/