সাত কলেজের সমন্বয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি শিক্ষার্থীদের
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:৫৮ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২৪
সাত কলেজের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি ও সংস্কার নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা সাত কলেজের বিভিন্ন বৈষম্যের কথা তুলে ধরা হয়।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও আ.ন.ম খুররম নজীবউদ্দীন অডিটোরিয়াম এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা 'আধিপত্য না মুক্তি, সাত কলেজের মুক্তি'! 'আমার সোনার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নেই' ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
আরও পড়ুন: জাবিতে ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুতে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ভূমিকা
সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজ সংস্কার টিমের সদস্য ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, সাত কলেজ সংস্কার সময়ের দাবি। দেশের
উচ্চশিক্ষার অবদানে সাত কলেজের ভূমিকা অনস্বীকার্য, তবে সে সময়ের রাজনীতিবীদ ও শিক্ষাবিদ সহ যারা শীর্ষ পর্যায়ে ছিলেন তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নেইনি। যে স্বপ্ন নিয়ে ঢাবি অধিভুক্ত হয়েছিল তার ছিটেফোটাও বাস্তবায়িত হয়নি। ঢাকার কেন্দ্রে থাকার পরও সাত কলেজ সব অধিকার থেকে। সাত কলেজ অভিভাবক শূণ্যতায় ভুগছে।
আরও পড়ুন: কুবির উপাচার্য, উপ-উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ পদে যাদের সম্ভাবনা
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে শীঘ্রই একটা কমিশন গঠন করে সাতটি কলেজ নিয়ে কিভাবে সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি করা যায় সেটা ভাবতে হবে। দেশে শিক্ষার সংস্কার চলছে, সাত কলেজকেও সংস্কার করবেন বলে আশা করছি। একটি কমিশন গঠন করে স্বতন্ত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয় হলে আমরা আমাদের অধিকার পাবো।
এসময় সংবাদ সম্মেলনকারী ইডেনের শিক্ষার্থী স্মৃতি বলেন, আমরা কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচয় দিতে গর্ব করি না বরং আমরা ইডেনের শিক্ষার্থী ইডেনের পরিচয় দিতেই গর্ব করি।
সাত কলেজের সাথে ঢাবির বৈষম্যগুলো নিয়ে ৩০ টি দাবি তুলে ধরেন যার মধ্যে রয়েছে:
১. স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানিক পরিচয়হীনতা ভুগছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
২. ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক ভালো শিক্ষকের গুনগত মানে অপ্রতুলতা।
৩. ঢাবির শিক্ষার্থীরা গবেষণার সুযোগ পায়, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা তা পায় না।
৪. ঢাবির শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী শিক্ষা কাযক্রম শুরু হলেও সাত কলেজে তা হয় না।
৫. শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক সংকট। ১২/১৫ শত শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৮/৯ জন শিক্ষক।
৬. তীব্র ক্লাসরুম সংকট। অনার্স, মাস্টার্সের জন্য যে পরিমাণ ক্লাসরুম প্রয়োজন তা নেই। ফলে শিক্ষা কাযক্রম ব্যহত হচ্ছে।।
৭. সম্পূর্ণ সিলেবাস শেষ করা হয় না।
৮. ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব। গত বছরগুলো থেকে দেখা গেছে, ঢাবির ফলাফল প্রকাশের ছয়/সাত মাস পর ফলাফল প্রকাশ হচ্ছে।
৯. পরীক্ষার ফলাফল মূল্যায়নে সময় গণহারে ফেল করানো হয়। অথচ ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত মানের শিক্ষার্থীরা সাত কলেজে পড়ছে।
১০. ঢাবির কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর সাত কলেজ থেকে শত শত কোটি টাকা আয় করছে। অথচ সাত কলেজের উন্নয়নে তারা ব্যয় করে না। অর্থ কোথায় যাচ্ছে? সিস্টেমে সাত কলেজকে ঢাবির ব্যবসাকেন্দ্র বানানো হয়েছে।
১১. সাত কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবগুলোতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেই। শিক্ষার্থীরা কীভাবে ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করবে।
১২. হুটহাট পরীক্ষা শুরু করা। যার দরুন শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিতে হিমশিম খায়। যথেষ্ট প্রিপারেশন নেওয়ার মতো পরিস্থিতি থাকে না।।
১৩. ক্লাস নেয় বিসিএস ক্যাডার শিক্ষক। প্রশ্ন করেন ঢাবির পিএইচডি শিক্ষক। খাতা দেখেন পিএইচডি ডিগ্রির শিক্ষক।( যদিও নিজেরা না দেখে বরং টাকার জন্য ছাত্র দিয়ে দেখায়। যার দরুন শিক্ষার্থীরা নিজেদের সেরাটা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
১৪. এক সেশনের ক্লাস শুরু হলে সব সেশনের ক্লাস বন্ধ থাকে।।
১৫. সহশিক্ষা কাযক্রম বিএনসিসি, আবৃতি সংসদ, রোভার স্কাউটস, বিতর্ক, রেড ক্রিসেন্ট ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রে সাড কলেজ ঢাবি থেকেও এগিয়ে। অথচ কোনো বরাদ্দ নেই।
১৬. স্বান্ধ্য আইনের কারণে শিক্ষার্থীদের কিছু করার সুযোগ নেই। কিন্তু কলেজগুলোতে আমলাতন্ত্রের লাল ফিতার দৌরাত্ম ছাপিয়ে এসব অনুমতি পাওয়া খুবই কঠিন।
১৬. ক্ষমতার বাইরে মাত্রারিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি।
জেবি/এসবি