গণহত্যাকারী কোন রাজনৈতিক দলের রাজনীতি করার অধিকার থাকে না: আসাদুজ্জামান রিপন


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪:১৬ অপরাহ্ন, ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২৪


গণহত্যাকারী কোন রাজনৈতিক দলের রাজনীতি করার অধিকার থাকে না:  আসাদুজ্জামান রিপন
ছবি: জনবাণী

বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, গণহত্যাকারী কোন রাজনৈতিক দলের রাজনীতি করার অধিকার থাকে না। এই গণহত্যার জন্য শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার করতে হবে। তার আগে দেশের আদালতে তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা এবং আর্থিক খাতগুলো সব ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রফেসর ইউনূস যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান এবং বিশ্বে ব্যতিক্রমী অর্থনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত, সারাবিশ্বব্যাপী তাঁর গ্রহ্যণযোগ্য রয়েছে, তাঁর উচিত হবে দেশের এই ক্রান্তিকালে বিদেশ থেকে বিপুল পরিমান বিনিয়োগ আনা এবং দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা। বর্তমান সরকার একটি নিরপেক্ষ সরকার। তারা তাদের নিরপেক্ষতা যতদিন বজায় রাখতে পারবেন ততদিন মানুষ তাদের মাথার উপর রাখবে। যদি কোন কারণে নিরপেক্ষতা হারান তাহলে তাদের পক্ষে নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়া সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে এই সরকারের উপর মানুষের আস্থার সংকট তৈরী হবে। এই সরকারের মধ্য থেকে নতুন করে দল গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। আমরা বলবো দল গঠন করতে চাইলে একশো ভাগ গঠন করার অধিকার আছে। দেশের যে কেউ নতুন দল গঠন করতে পারেন। কিন্তু তার জন্য অবশ্যই তাদেরকে সরকার থেকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ নতুন দল গঠন করলে তাদের দিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব না। বর্তমান সরকারকে বলা হয় মধ্যবর্তী সরকার, অর্থাৎ ইন-বিটুইন সরকার। দুই সরকারের মধ্যবর্তী যে সরকার তারাই হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার বা মেহমান সরকার। তাদের প্রয়োজন হলো নির্বাচন দেয়ার জন্য কতগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং কতগুলো বিষয়ে সংস্কার নিশ্চিত করা। মনে রাখতে হবে ৫ আগস্টের মানুষের মনোজগত আর ৫ আগস্টের পরের মানুষের মনোজগত সমান নয়। উভয়ের কথা মাথায় রেখেই তাদের সংস্কার কাজ করতে হবে। কোন বাড়ির লোকেরা যেমন মেহমানকে অনেকদিন বেড়াতে দেখতে চায় না, একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেড়ানো শেষ করতে হয়, বর্তমান সরকারকে সেই জিনিসটা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে এবং জনপ্রিয়তা থাকতে থাকতে সংস্কার কাজ শেষ করে মেহমানের মতো সসম্মানে বিদায় নিতে হবে।


আরও পড়ুন: ‌আওয়ামী লীগ আর দাঁড়াতে পারবে না: জয়নুল আবেদীন



তিনি আরো বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে ডিজিএফআই ও আওয়ামী লীগের এজেন্টরা রয়েছে এবং তারাই সারাদেশে বিভিন্ন ধরনের অরাজকতা সৃষ্টিসহ বিভিন্ন হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করছে। এই অরাজকতা ও হত্যাকাণ্ড তাদের প্ল্যান অনুযায়ী হচ্ছে। তিনি এই সকল এজেন্টদের চিহ্নিত করার আহ্বান জানান।


সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১.০০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ২য় তলার তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর ৭ দফা বাস্তবায়ন নাগরিক কমিটির উদ্যোগে “দেশ পুনর্গঠনে অন্তবর্তীকালীন সরকারের করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর সাত দফা বাস্তবায়ন নাগরিক কমিটির আহবায়ক মো: জহিরুল ইসলাম কলিম এর সভাপতিত্বে ও ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর ৭ দফা বাস্তবায়ন নাগরিক কমিটি সদস্য সচিব সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহিন এর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, এনপিপি’র চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয় দল’র চেয়ারম্যান এড. এহসানুল হুদা, গণদল’র চেয়ারম্যান এ.টি.এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, এনডিপি চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান এম.এন শাওন সাদেকী, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পার্টি চেয়ারম্যান এস এম শাহাদাৎ, বিএনপি’র নির্বাহী সদস্য ও পিরোজপুর জেলা বিএনপি’র আহবায়ক অধ্যাপক আলমগীর হোসেন, প্রজন্ম একাডেমি’র সভাপতি কালাম ফয়েজী, বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরাম’র সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ শিপন, সাধারণ সম্পাদক এস এম মিজানুর রহমান, এনডিপি’র মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, আবু হায়দার মো. সিদ্দিকুর রহমান, রমিজ উদ্দিন রুমী প্রমুখ।


আরও পড়ুন: বাসায় ফিরলেও এখনো সুস্থ নন খালেদা জিয়া: ফখরুল


বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের আন্দোলনের সরকার। তাদের কাছ থেকে মানুষ অবশ্যই নিরপেক্ষ আচরণ, নিরপেক্ষ বিচার ও গণতন্ত্র আশা করে। তাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা। দেশের বিভিন্ন স্থানে যেমন পার্বত্য অঞ্চলে, গার্মেন্টস সেক্টরে, অলি-আউলিয়াদের মাজারে হামলা হচ্ছে, এসবকে নিয়ন্ত্রণে আনা এই সরকারের অন্যতম কাজ। প্রশাসন সংস্কারের নামে আওয়ামীপন্থী আমলাদের কেবল স্থান বদল করা হচ্ছে, আসল সংস্কারের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এদেরকে যথাস্থানে রেখে দেশ পুনর্গঠন ও সংস্কার সম্ভব না।


এনপিপি’র চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, বর্তমান সরকারকে আমরা সহযোগিতা করতে চাই। সহযোগিতা নিতে চাইলে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা অপরিহার্য। তিনি জরুরী ভিত্তিতে ১ লক্ষ পুলিশ নিয়োগ দেয়ার আহ্বান জানান। আ’লীগ সরকারের সময় দুঃশাসনে যে সকল পুলিশ-আমলা সহযোগিতা করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।


জেবি/এসবি