কাকরাইল ডিভিশন
ডিপিডিসি’র প্রকৌশলীর পকেটে ঘুষের টাকা
বশির হোসেন খান
প্রকাশ: ১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, ২৫শে সেপ্টেম্বর ২০২৪
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কাকরাইল ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান ভূঁইয়া নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে এক সিন্ডিকেট। অভিযোগ রয়েছে লাইনম্যান ম্যাট কুতুব উদ্দিন ফকিরকে নিয়ে গ্রহকদের জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র বলছে, প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের উচ্চচাপ, সাবস্টেশন নির্মাণের ঠিকাদারী করা, নিম্নচাপ (এলটি) বিদ্যুৎ গ্রাহকদের সংযোগ দিয়ে অবৈধভাবে বহু সম্পদের মালিক হয়েছেন সিন্ডিকেট সদস্যরা। এ বিষয় সম্প্রতি দুদকে একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। অভিযোগ বলা হয়, ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী কাকরাইল ডিভিশনের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। রাতারাতি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
সূত্র বলছে, কুতুব উদ্দিন ফকির তেজগাঁও ডিভিশনের কর্মরত থাকলেও কাজ করেন কাকরাইল ডিভিশনে। দীর্ঘদিন ধরে এই ডিভিশনে চাকরি করার সুবাধে গড়ে তুলেছেন এক দুর্নীতির আখড়া। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অবৈধ টাকার মায়া ভুলতে পারেন না লাইনম্যান ম্যাট কুতুব। তিনি অবৈধভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করলেও নিশ্চিুপ ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী। গত ১০ সেপ্টম্বর সিদ্ধেশ্বরী রোড কাস্টমার নং-১৯১৪৩৪৬৬ অবৈধভাবে মিটারিং ইউনিটে কাজ করেন নির্ধারিত মিটারিং টিম ছাড়াই। যা বিদ্যুৎ আইনে পরিপন্থী বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। এই ঘটনা নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মেহেদী হাসান ভূঁইয়াকে জানানো হয়।
তিনি বলেন, আমি মিটারিং টিম দিয়ে পরিক্ষা করেছি। কিছু পাইনি, তবুও বলছি প্রয়োজনে আরো খোঁজ নিয়ে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে সরোজমিনে দেখা যায়, অভিযোগ পাওয়া পরেও আমলে নেয়নি নির্বাহী প্রকৌশলী। এমনকি মিটার পরিক্ষা করেও নিয়ে করছে তালবাহানা। বিষয়টি ধামা চাপা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে। গত ২৩ সেপ্টম্বর মিটারিং ডিভিশনের একটি টিম এসে পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে ঘটনার সতত্যা পেয়েছেন এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আকিবুল আলম।
তিনি ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান ফোনে জানান, মিটার পরিক্ষা করে দেখলাম, অসংহতি আছে। বড় ধরনের সমস্যা। কিন্তু একদিন পার হলে বহাল তরিয়াতে চলছে সেই মিটার। তবুও লাইনম্যান ম্যাট কুতুবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নয়, বাচাঁতে মরিয়া নির্বাহী প্রকৌশলী। যেহেতু কুতুব উদ্দিন ফকির নির্বাহী প্রকৌশলীর সিন্ডেকেট সদস্য। তাই অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে। আর রাজস্ব হারাচ্ছেন সরকার। নিয়ম-অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অসংগতি থাকলে গ্রাহককে জরিমানা কিবং লাইনম্যান ম্যাটকে শাস্তির বিধান রয়েছে। পার পেয়ে যাচ্ছে দুর্নীতিবাজরা। প্রতিমাসে নির্ধারিত পরিমান টাকা চলে যাচ্ছে নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদীর পকেটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী বলেন, স্যার শুধু চেনেন টাকা, টাকা ছাড়া কোনো কাজ করেন না। টাকা দিলেই যে কোনো সংযোগ দেন তিনি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত লাইনম্যান ম্যাট কুতুব উদ্দিন ফকিরকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিপ করেননি।
এ ব্যাপারে কাকরাইল ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান ভূঁইয়া বলেন, আমি শুনেছি, ঘটনার তদন্ত করছি। তবে মিটারিং ডিভিশন পরিক্ষা করে কিছু পাইনি বলে লাইনম্যান ম্যাট কুতুবের পক্ষে সাফাই গাইলেন। তিনি বলেন, প্রমান পেলে গ্রহককে শাস্তি দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আকিবুল আলম বলেন, আমি লিখিত ভাবে নির্বাহী প্রকৌশলী বিষয়টি অবহিত করেছি। তার কাছে শুনতে পারবেন।
এ ব্যাপারে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আবদুল্লাহ নোমান বলেন, আমি ঘটনা সম্পর্কে অবগত নই। ঘটনা মিটারিং ডিভিশন থেকে জেনে প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
জেবি/এসবি