‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজে আগুন নিয়ন্ত্রণে, সমন্বিত প্রচেষ্টায় প্রাণে বেঁচেছেন ৪৭ নাবিক


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫:১৯ অপরাহ্ন, ৫ই অক্টোবর ২০২৪


‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজে আগুন নিয়ন্ত্রণে, সমন্বিত প্রচেষ্টায় প্রাণে বেঁচেছেন ৪৭ নাবিক
ছবি: জনবাণী

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন তেলবাহী ‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজে আগুন লাগার ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ওই নাবিক আগুনে পুড়ে মারা যাননি। অগ্নিকাণ্ডের পর বাঁচতে বঙ্গোপসাগরে তিনি লাফ দিলে এ প্রাণহানি ঘটে।


 শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। 


তবে চট্টগ্রাম নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ পরিবহন অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পাশাপাশি ৪৭ জন নাবিককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। পুরো বিষয়টি নাশকতা কীনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের ডিজি কমডোর মোহাম্মদ মাকসুদ আলম। 


বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট শাকিব মেহবুব উদ্ধার তৎপরতা সম্পর্কে জানান, বাংলার সৌরভের আগুন সফলভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।  আগুনের খবর পেয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের টাগ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৪০ মিনিটের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীকালে, বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) টাগও আগুন সম্পূর্ণ নেভানোর প্রচেষ্টায় যোগ দেয়। জাহাজটিতে ৪০ জন নাবিকসহ ৪৮ জন কর্মী ছিলেন। ১৪ জন কর্মী বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপ দিয়েছিলেন কিন্তু বাকিরা জাহাজে ছিলেন। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সফলভাবে বাংলার সৌরভ থেকে ৩৭ জন কর্মীকে উদ্ধার করেছে।


আরও পড়ুন: জাহাজে আগুনের পর বঙ্গোপসাগরে লাফ, নাবিকের মৃত্যু


অন্যদের সমুদ্র এবং সৈকতের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। একজনকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের কাছে পাওয়া যায়। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসকরা তার মৃত্যুর কথা জানান।


তিনি আরও বলেন, যিনি মারা গেছেন তিনি ‘বাংলার সৌরভ’ জাহাজের জেনারেল স্টুয়ার্ড। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম জানা যায়নি। 


সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রাম নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের ডিজি, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের এমডি ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বড় রকমের ক্ষতি ও প্রাণহানি থেকে রক্ষা পেয়েছে দেশ। মূলত এটি সম্ভব হয়েছে মেরিটাইম সেক্টরের উর্ধ্বতন পর্যায়ে নৌবাহিনীর কর্মকর্তাদের পদায়নের ফলে। তাদের দক্ষ নেতৃত্বে সমন্বিত অ্যাকশনের ফলেই অনেক প্রাণ বেঁচে গেছে। বড় রকমের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়নি চট্টগ্রাম বন্দরকেও। 


আরও পড়ুন: সাবেক রাষ্ট্রপতি ড. বদরুদ্দোজা চৌধুরী আর নেই

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানায় ‘বাংলার জ্যোতি’ ও ‘বাংলার সৌরভ’ নামে তেলবাহী দুটি জাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে এমটি বাংলার সৌরভ ১৯৮৭ সালে ডেনমার্কে নির্মিত হয়েছিল। এগুলো সাগরে অপেক্ষমাণ বড় জাহাজ থেকে তেল নিয়ে বন্দরে পৌঁছানোর কাজ করে। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকাল পৌনে ১১টার দিকে বন্দরের ডলফিন জেটিতে 'বাংলার জ্যোতি'-তে বিস্ফোরণের পর আগুন লাগে। ওই ঘটনায় তিন জন মারা যান। 


জেবি/এসবি