রাবিতে বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:৩১ অপরাহ্ন, ৫ই অক্টোবর ২০২৪
“শিক্ষকের কণ্ঠস্বর: শিক্ষায় নতুন সামাজিক অঙ্গীকার” শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালন করা হয়েছে ।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ১০টায় দিবসটি উপলক্ষে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সামনের চত্বর থেকে এক শোভাযাত্রা বের করা হয়।
এসময় রানি উপাচার্যসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, হল ও বিভাগসমূহ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শোভাযাত্রা শেষে বেলা ১১টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে এক আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
আরও পড়ুন: রাবির অধ্যাপক মামুনকে সাময়িক অব্যাহতি
শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবীবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবি অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার সাবেক উপাচার্য মো. রফিকুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রফিকুল ইসলাম বলেন, যে দেশে গুণীদের সম্মান করা হয় না সে দেশে গুণী জন্মায় না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গুণী শিক্ষকদের সম্মাননা প্রদান করে প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্মানিত করলো। একজন শিক্ষক সর্বদাই শিক্ষক। একজন শিশুর প্রথম শিক্ষক তার মা-বাবা। তারা একজন শিশুকে আগামী দিনের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রস্তুত করে। একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীর মানস গঠনের কুশলী কারিগর। শিক্ষকরা জলন্ত মোমের মতো। নিজেরা জ্বলে, আলো দিয়ে শিক্ষার্থীদের জীবনকে আলোকিত করেন। শিক্ষকরাই শিক্ষার্থীদের জীবনে স্থায়ী প্রভাব ফেলেন। শিক্ষাদান একটি মহাযাত্রা। আদর্শ শিক্ষক হতে হলে শিক্ষকদের হতে হবে দক্ষ, সৎ, নীতিনিষ্ঠ। আদর্শ জাতি গঠনে এমনই শিক্ষক প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য তার বক্তৃতায় বলেন, শিক্ষকেরা জাতি গঠনের কারিগর। শিক্ষাদান একটা আদান-প্রদানের বিষয়। শিক্ষকরা ভালো কিন্তু ছাত্ররা ভালো নয় তাহলে হবে না। একজন শিক্ষক তখনই ভালো হবেন যিনি তার শিক্ষার্থীর জ্ঞানচক্ষুকে উন্মীলিত করতে পারেন; তিনিই ভালো শিক্ষক, যিনি তার শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। সামগ্রিকভাবে একজন শিক্ষকের মূল্যায়ন করতে গেলে তার শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে তা হবে না। জাতি গঠনে শিক্ষকতার সম্মান ও মর্যাদা অত্যন্ত উঁচুতে। শিক্ষকদের প্রতি আমরা আমাদের দায়িত্বের ব্যাপারে সচেতন না হলে শিক্ষকদের সঠিক মূল্যায়ন হবে না।
আরও পড়ুন: রাবিতে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে রিকশা চালককে পুলিশে সোপর্দ
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে যে অশুভ, অপশক্তির শৃঙ্খল ভেঙ্গে গেছে এই শৃঙ্খল ফিরে আসার আর সম্ভাবনা নাই। সেই বাস্তবতা মেনে নিয়ে আমাদের এই আন্দোলনের শুভ চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গড়ায় কাজ করে যেতে হবে।
অবসরপ্রাপ্ত ৩ জন শিক্ষক ড. দাস বাসুদেব কুমার (রসায়ন বিভাগ), ড. এ কে এম আজহারুল ইসলাম (পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ এবং অধ্যাপক ইমেরিটাস ও সাবেক উপাচার্য, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম) ও অধ্যাপক মু. শামসুল আলম, বীর প্রতীক (ভুগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগ) কে সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। উপাচার্য তাদের সম্মাননাসূচক উত্তরীয় ও স্মারক ক্রেস্ট প্রদান করেন।
দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কারও প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতায় স্নাতক পর্যায়ে ‘আমার দেখা সেরা শিক্ষক’ শীর্ষক বিষয়ে মো. শামিম আলম (সমাজকর্ম বিভাগ) প্রথম স্থান, রাফায়েতুল আহম্মেদ (নাট্যকলা বিভাগ) দ্বিতীয় স্থান ও মোসা. ফাহিমা খাতুন (উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ) তৃতীয় স্থান অধিকার করে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ‘আমার শিক্ষককে আমি যেভাবে দেখতে চাই’ শীর্ষক বিষয়ে মো. বায়েজিদ (আরবী বিভাগ) প্রথম স্থান, মো. মিনহাজুল আবেদীন (শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট) দ্বিতীয় স্থান ও মো. হাবিবুর রহমান (রসায়ন বিভাগ) তৃতীয় স্থান অধিকার করে।
এমএল/