আখাউড়ায় বিস্ফোরক মামলায় সম্রাট গ্রেফতার


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:৫২ অপরাহ্ন, ৬ই অক্টোবর ২০২৪


আখাউড়ায়  বিস্ফোরক মামলায় সম্রাট গ্রেফতার
ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বিস্ফোরক মামলায় রিক্সা-ভ্যান শ্রমিক লীগের সভাপতি  মাদক সম্রাট মুসলেম মিয়াকে (৪৯) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে পৌরশহরের উপজেলা কমপ্লেক্স সংলগ্ন নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করে। 


রবিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরের   দুপুরের দিকে তাকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ আবুল হাসিম।


আরও পড়ুন: যৌথবাহিনী অভিযানে পরোয়ানাভুক্ত ৫ জন আটক


বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে,  সরকার পতনের পর ২৬ সেপ্টেম্বর মারামারি, অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরক আইনের ধারায় একটি মামলা হয়। তিনি ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানান, সে আওয়ামীলীগের ছত্রছায়ায় আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশন এলাকার অপরাধ জগতের সিন্ডিকেট প্রধান ও মাদক চোরাচালের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। এক সাধারণ ভ্যান চালক থেকে ১০ বছরে বিপুল অর্থ বিত্তের মালিক বনে যান।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩৫ বছর আগে বাবার সঙ্গে আখাউড়ায় আসেন মুসলেম মিয়া। বাবা ভাঙ্গারী কুরিয়ে বিক্রি করতেন। মুসলেম মিয়া ভ্যানগাড়ির ঠেলা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। একটু বেড়ে উঠার পর নিজেই ভ্যানগাড়ি চালানো শুরু করেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে পেশা পরিবর্তন করে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় মাদক বিক্রি শুরু করেন মুসলেম মিয়া। এরপর তার ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে। ভ্যান চালক হিসেবে জীবিকা শুরু করলেও তিনি ছিলেন রেলওয়ে স্টেশন এলাকার অঘোষিত মাদক চোরাচালানের সম্রাট। কয়েক বছরের ব্যবধানে আলাদীনের চেরাগ পাওয়ার মতো রাতারাতি মুসলেম ভুঁইয়া রীতিমতো বিপুল অর্থ-সম্পত্তির মালিক বনে যায়।


এরপর উপজেলা রিকশা-ভ্যান শ্রমীক লীগ নামে ভুঁইফোড় সংগঠনের সভাপতি হয়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন মিছিল সমাবেশে শ্রমিক নিয়ে যোগদান এবং অর্থ খরচ করে মুসলেম ভুঁইয়া আলোচনায় ছিলেন। রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় অবৈধ ভাবে জায়গা দখল করে রিকশা-ভ্যান শ্রমীক লীগের অফিস করেন। সেখানে সন্ধ্যা নামলেই চলত অসামাজিক কার্যকলাপ। আর ওই অফিস থেকে স্টেশন এলাকার অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণসহ ট্রেনে করে মাদকের চালান পাঠানো হত দেশের বিভিন্ন স্থানে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হলে তিনি কিছু দিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন।


আরও পড়ুন: নবীনগরে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইব্রাহিম গ্রেফতার


বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ ভ্যান শ্রমিক থেকে কয়েক বছরে পৌরশহরের কলেজ পাড়া এবং উপজেলা কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকায় ৪টি জায়গার মালিক হয়েছেন তিনি। ২টি পাকা বাড়ি করেছেন। একটিতে তিনি থাকেন। আরেকটি ভাড়া দেওয়া। বাকী ২টি প্লট খালি রয়েছে। গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ঘাটিয়ারা গ্রামে বেশ কিছু চাষের জমি কিনেছেন। পৈত্রিক ভিটায় পাকা বিল্ডিং করেছেন। এছাড়াও নগদ টাকার মালিক হয়েছেন তিনি।


আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল হাসিম বলেন, আটক মুসলেম মিয়া মারামারি, অগ্নিসংযোগ ও বিস্ফোরক আইনের মামলার আসামি। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।


জেবি/এসবি