নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে সবজিটাও যেন বিলাসিতায় রুপ নিচ্ছে


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮:৪৭ অপরাহ্ন, ১৩ই অক্টোবর ২০২৪


নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে সবজিটাও যেন বিলাসিতায় রুপ নিচ্ছে
ফাইল ছবি

সম্প্রতি বাজারে নেই কোনো স্বস্তি। লাগামহীনভাবে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। সবজি, মাছ, মাংস, ডিম সব কিছুতেই যেনো আগুন লেগেছে। প্রায় সব ধরনের সবজির দাম আগের তুলনায় যেন আরও বাড়ছে। অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার উপরে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে সবজিটাও যেন দিন দিন বিলাসিতায় রুপ নিচ্ছে।


সম্প্রতি সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে। কাঁচামরিচ, টমেটো,ধনিয়াপাতা, পটোল, ঢ্যাঁড়স, কচুরলতি, বেগুন ও মুলাসহ সব সবজিই ১০০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।


এরমধ্যে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখীর কেজি ১০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, কাঁকরোল ১২০ টাকা, পটল ১০০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, বরবটি ১২০-১৪০, ধুন্দল ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ১০০ টাকা, কচুর লতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ঝিঙ্গা ১২০ টাকা এবং শসা কেজি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, চাল কুমড়া ১০০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি ৮০ টাকা আর লেবুর হালি রাখা হচ্ছে আকারভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা। এছাড়া কাঁচামরিচের কেজি ৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।


আরও পড়ুন: বেশির ভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকার ওপরে


চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মুরগি। গত সপ্তাহের মতো ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে সোনালি মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ২৬০ টাকা, দেশি মুরগি ৫২০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ৩৩০ টাকা এবং সাদা লেয়ার মুরগি ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 


এসব বাজারে গরুর মাংস কেজি প্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, গরুর কলিজা ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজি প্রতি ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  


বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২৩০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৯০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।


আরও পড়ুন: দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন


মাছের বাজারে দেখা যায়, এক কেজি চাষের শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকায়, প্রতি কেজি রুই মাছ (আকারভেদে) ৩৮০ থেকে ৫০০ টাকায়, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১১০০ টাকা, মৃগেল ৩২০ থেকে ৪০০ টাকায়, চাষের পাঙ্গাস ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, চিংড়ি ৭০০ থেকে ১৪০০ টাকায়, বোয়ালমাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়, কাতল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়, পোয়া মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০ টাকায়, কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়, মলা ৫৫০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১৩০০ টাকায়, টেংরা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি মাছ ৫০০ টাকায়, পাঁচমিশালি মাছ ২২০ টাকায়, রূপচাঁদা ১২০০ টাকা, বাইম মাছ ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, দেশি কই ১২০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, আড়ই মাছ ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ টাকা এবং কাকিলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।


গত সপ্তাহে বিক্রি হওয়া ১৭০০ টাকার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ থেকে ২০০০ টাকায়। 


সবজি বিক্রেতারা দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘঠিত বন্যাকে কারণ হিসেবে দায়ী করছেন। মাছ চাষিরাও এ বন্যায় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ফলে বাজারে মাছের চাহিদা কম থাকায় দাম বেশি বলে মন্তব্য করছে।


বিক্রেতারা বলছেন, শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, উৎপাদন এলাকায়ও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরণের সবজি।


আরও পড়ুন: ভারত থেকে এলো ২ লাখ ৩১ হাজার পিস ডিম


বাজারের ব্যবসায়ীরা জানালেন, সবজির দাম চড়া হওয়ায় এখন ক্রেতারা পরিমাণে কম কিনছেন। আগে যিনি এক কেজি কিনতেন, এখন তিনি আধা কেজি কিনছেন। অনেকেই আবার দাম শুনে মুখ ঘুরিয়ে চলে যাচ্ছেন না কিনেই।


আকাশ নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘মাছের দাম অনেক বেড়ে গেছে। মুরগির দামও বেড়েছে। শাক-সবজির কিনবো তারও কোনো উপায় নেই। আর ডিম তো অনেক দিন হলো কিনছিই না। দায়িত্ববানরা কি করছে কিছুই বুঝতেছি না।’


এমএল/