সমাধান না পেয়ে আন্দোলনের পথে হাঁটছেন সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:৪১ অপরাহ্ন, ১৮ই অক্টোবর ২০২৪
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা কোন অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার না থাকা, তীব্র ক্লাসরুম সংকট, পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব হওয়া, মাত্রাতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা, ঢাবির থেকে সাত কলেজে অধিক সেশন ফি ও মানোন্নয়ন ফি নেওয়া, সেমিস্টার সিস্টেম না থাকা, সমাবর্তন, ল্যাব ও গবেষণা সংকট, উচ্চশিক্ষিত ও উপযুক্ত শিক্ষক সংকট ইত্যাদি বৈষম্যের ফলে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন ও প্রতিবাদ করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তবে, এতে তেমন আশার আলো দেখতে পান নি শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর দেশের সকল সেক্টরকে নতুন করে সংস্কার করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তারই ধারবাহিকতায়, রাজধানীর সাত কলেজের সাথে ঢাবির নানা বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ঢাবির কয়েকজন শিক্ষক ও সাত কলেজ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, সাত কলেজের কাঠামো ও বৈষম্য দূর করে সাত কলেজকে 'স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়' রূপরেখা দান করার উপযুক্ত সময়। তবে, দফায় দফায় আলোচনা, সংবাদ সম্মেলন, আল্টিমেটাম ও শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার পরও কোনো সমাধান না পেয়ে এবার আন্দোলনের পথে হাঁটছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২১ অক্টোম্বর) অবস্থান মানববন্ধন পালন করবেন তারা।
আরও পড়ুন: যৌন হয়রানির অভিযোগে বাকৃবি অধ্যাপককে শোকজ
জানা যায়, সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা কলেজ অডিটোরিয়ামে সাত কলেজের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি ও সংস্কার নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজকে নিয়ে একটি স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি জানিয়েছিলেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানে সাত কলেজের সাথে ঢাবি বৈষম্যসমূহ শিরোনামে ৩০ টি বৈষম্যের নমুনা তুলে ধরা হয়।
এরপর, বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সাত সরকারি কলেজ নিয়ে স্বায়ত্তশাসিত বা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় ১ মাস হওয়ার পরও কোনো সাড়া না পাওয়ায় এবার আন্দোলনে নামতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সাত কলেজ সংস্কার প্রতিনিধি দল। ইতোমধ্যে, প্রতিটি কলেজে বিভাগভিত্তিক টিমও গঠন করেছেন তারা।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাত কলেজ সংস্কার কমিটির ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি আব্দুর রহমান বলেন, রাস্তায় নামা কিন্তু ফরজ কাজ না ! কর্তৃপক্ষ চাইলেই খুব সুন্দর সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো। কিন্তু তারা কোনো ভালো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। এটাই মুল সমস্যা। নির্ধারিত সময়ে তাঁদের গঠনমূলক কোনো জবাব নেই।
আরও পড়ুন: ঢাকা কলেজে পাসের হার ৯৯.৮১ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেলেন ৯৬৬ শিক্ষার্থী
সাত কলেজ ইস্যুতে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি একটি কমিশন গঠনের কথা ক্লিয়ার করে বলে দিয়েছেন। কমিশন খুব সুন্দর খুব সুন্দরভাবে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বর্তমান শিক্ষার্থীরা কিভাবে চলবে। বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলে নতুন শিক্ষার্থীরা কিভাবে চলবে। শুধুমাত্র একটি কমিশনের পক্ষেই এসব সম্ভব।
আমরা বিচ্ছিন্নভাবে যা বলি পৃথিবীর কোনো ভালো কাজ এভাবে হয়না ! যে যা বলছি সবই সাময়িক। মুল সমাধান আসবে কমিশনের হাত ধরে। কয়েক ধরনের সমাধান আসবে, শিক্ষার্থীরা সেরাটা বেছে নিবে। কমিশন গঠন হলে গণহারে ফেইল নামক শব্দ চিরতরে মুছে যাবে ! তখন পরিক্ষা নিয়েও কারো ভয় থাকবে না। রাষ্ট্র কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিলে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামবে না এটাই ধ্রব সত্য ! কিন্তু দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে কি আর করার !
উল্লেখ্য, শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হয় রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ।
এমএল/