পবিপ্রবির এনাটমি মিউজিয়ামে দেশের ‘দ্বিতীয়’ রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কঙ্কাল
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬:০১ অপরাহ্ন, ২৪শে অক্টোবর ২০২৪
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) এ্যানিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের এনাটমি ও হিস্টোলজি বিভাগের ল্যাবরেটরিতে নতুন করে সংযোজন হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কঙ্কাল।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম কঙ্কালটি উদ্বোধন করেন।
প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের দীর্ঘ দিনের পরিশ্রমের পর প্রস্তুত হয় বহুল আকাঙ্ক্ষিত কঙ্কাল। বন্যপ্রাণী গবেষণার ক্ষেত্রে বাঘের কঙ্কাল অনুষদের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনের আরেকটি নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলে আশা রাখছেন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। কঙ্কাল প্রস্তুতে সার্বিকভাবে সহায়তা করেছেন এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. তোফাজ্জল হোসেন এবং তৈরিতে অংশগ্রহণ করেছেন ডা. তারিকুর রহমান তারেক, সানজিদ, বাতেন, লোকমান, আশরাফ, পিয়াস, আমিনুল, আ. রওফ, জামিনসহ আরো শিক্ষার্থীবৃন্দ।
আরও পড়ুন: জুলাই বিপ্লবে নিহত হৃদয় তাড়ুয়ার বোনকে পবিপ্রবিতে চাকরির নিয়োগপত্র প্রদান
রয়েল বেঙ্গল টাইগারটি ২০২২ সালে রংপুর চিড়িয়াখানায় বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করে। পরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালকের অনুমতিক্রমে একই বছরের অক্টোবর মাসে মৃতদেহ উত্তোলনের প্রক্রিয়া যথাযথভাবে সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিদের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। দীর্ঘদিনের পরিশ্রমে বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও কর্মকান্ড অবলম্বনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কঙ্কাল প্রস্তুত হয়। পাশাপাশি বাঘের কঙ্কালটি শিক্ষা ও গবেষণার জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
কংকাল প্রস্তুতকরণ সদস্য ডা. মো. তারিকুর রহমান তারেক বলেন, ‘এনাটমি ল্যাব সমৃদ্ধ করার জন্য দুর্লভ বন্য প্রাণি সংগ্রহ ও প্রস্তুতকরণে আমরা বরাবরের মত অংশ নেবো। পবিপ্রবির এনাটমি ল্যাব হবে বন্য প্রাণির কঙ্কাল গবেষণার অন্যতম তীর্থভূমি।’
কংকাল প্রস্তুতকরণে সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক প্রফেসর ড. মো. সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমি খুবই আনন্দিত একটি তারুণ্যদীপ্ত উদ্যমী দল নিয়ে বাঘ এবং জলহস্তীর কংকালের কাজটি শেষ করতে পেরেছি। ভবিষ্যতে নতুন কংকাল সংযোজন করে ল্যাবকে সমৃদ্ধ করার এই ধারা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করবো।’
এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘বাঘের কংকালটি জ্ঞান অর্জনের অমূল্য ভান্ডার হয়ে থাকবে। এভাবেই পবিপ্রবি শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে গিয়ে দক্ষ ভেটেরিনারিয়ান তৈরী করবে।’
আরও পড়ুন: নিষিদ্ধের পর ছাত্রলীগের নির্যাতনের ফিরিস্তি প্রকাশ করেছে জাবি শিক্ষার্থীরা
বাঘের এই কঙ্কাল সন্নিবেশন একটি দুর্লভ কাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন পবিপ্রবি উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম । তিনি আরও বলেন, ‘এধরনের গবেষণামূলক ব্যতিক্রমধর্মী কাজে কঙ্কাল তৈরির সাথে সংশ্লিষ্ট ছাত্র ও শিক্ষক দলটির স্বতঃস্ফূর্ত অবদান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনন্য সম্পদ হয়ে থাকবে। যা ভবিষ্যতে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে’। এছাড়াও এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি ল্যাব সমৃদ্ধ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতীতের ন্যায় সর্বোচ্চ সহায়তা করবে বলেও তিনি আশ্বস্ত করেছেন।
উল্লেখ্য যে, গত বছর পবিপ্রবির এনাটমি মিউজিয়ামে দেশের একমাত্র জলহস্তির কঙ্কাল উম্মোচিত করা হয়। তবে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের প্রথম বাঘের কঙ্কাল তৈরী করা হয়।
এমএল/