মার্কিন নির্বাচন: কংগ্রেসে প্রথম রূপান্তরকামী সদস্য সারাহ


Janobani

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯:০৪ অপরাহ্ন, ৬ই নভেম্বর ২০২৪


মার্কিন নির্বাচন: কংগ্রেসে প্রথম রূপান্তরকামী সদস্য সারাহ
ছবি: সংগৃহীত

গোটা পৃথিবীর চোখ এখন অ্যামেরিকার দিকে। কে হবে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট, ডোনাল্ড ট্রাম্প, না কি কমলা হ্যারিস? লড়াই চলছে হাড্ডাহাড্ডি। তবে যিনিই নির্বাচিত হবেন, তার ক্ষমতা নির্ধারিত হবে সেনেট এবং কংগ্রেসে তাদের পক্ষে কত ভোট আছে তার উপরে। অনেক সময়েই দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট যে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছেন, সেনেট এবং কংগ্রেস তা আটকে দিচ্ছে। ফলে সেনেট এবং কংগ্রেসের নির্বাচন প্রক্রিয়াও গুরুত্বপূর্ণ। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের পাশাপাশি ৩৩ জন সিনেটরের ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছে আমেরিকায়। প্রথম রূপান্তরকামী সদস্য নির্বাচিত হলেন সারাহ ম্যাকব্রাইড।


বুধবার (৬ নভেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাচনের পাশাপাশি ভাগ্য নির্ধারিত হচ্ছে হাউস অফ রিপ্রেসেনটেটিভের ৩৩ জন সেনেটরের। এই ৩৩ জন সেনেটরের উপর নির্ভর করবে হাউসে রিপাবলিকানদের পাল্লা ভারী হবে, না কি ডেমোক্র্যাটদের।


সিনেটে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২। রিপাবলিকানদের সংখ্যা সেখানে ৫১। হাউসে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যা ১৬৩। রিপাবলিকান ১৮৭। তবে ডেলাওয়্যার রাজ্য থেকে বিপুল ভোট জয়ী হয়ে কংগ্রেসের সদস্য হচ্ছেন প্রথম রূপান্তরকামী ব্যক্তি সারাহ। রাজ্যবাসীকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন।


আরও পড়ুন: আমি সব যুদ্ধ বন্ধ করে দেব, বিজয় ভাষণে ডোলান্ড ট্রাম্প


বস্তুত, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারে রূপান্তরকামীদের সরাসরি আক্রমণ করেছিলেন। তারপরেও তার এই জয় নিঃসন্দেহে আমেরিকার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। সিনেটে নির্বাচনের পদ্ধতি প্রতি দুবছরে হাউসের মেম্বাররা নির্বাচিত হন। ২০২২ সালে শেষ মধ্যবর্তী নির্বাচন হয়েছিল। সে সময় হাউসে ডেমোক্র্যাটেরা রিপাবলিকানদের থেকে সংখ্যায় সামান্য বেশি ছিলেন।


মার্কিন সিনেটে প্রতিটি রাজ্য থেকে দুই জন করে প্রতিনিধি নির্বাচিত হন। রাজ্যের আয়তন যত বড় বা ছোটই হোক না কেন! ১০০ জন সিনেটর ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন। তবে এই সিনেটরদের মধ্যে আবার তিন রকমের ভাগ থাকে। এক-তৃতীয়াংশ সিনেটরকে দুই বছর পর পর নির্বাচনে লড়তে হয়। এবছর যারা ভোটে লড়ছেন, তারা প্রথম শ্রেণির সিনেটর। ২০১৮ সালে ট্রাম্পের রাজত্বে তারা নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে সঙ্গে এই ৩৩ জন সিনেটরেরও নির্বাচন হচ্ছে। এবং তাদের উপর নির্ভর করবে সিনেটে কোন দল শক্তিশালী হবে।


ফলাফলের ট্রেন্ড বলছে, সিনেটে রিপাবলিকানদেরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে। মার্কিন সংবিধানে সিনেট এবং হাউসের নির্বাচনে এই বৈচিত্র রাখা হয়েছে একটাই কারণে, ক্ষমতা যাতে কেন্দ্রিভূত না হয়। বিরোধীদের শক্তিও যাতে অটুট থাকে হাউসে। বিভিন্ন সময় ছোট ছোট করে এই নির্বাচনগুলি হওয়ার ফলে প্রেসিডেন্ট একচেটিয়া ক্ষমতা ভোগ করতে পারেন না। অনেক সময়েই দেখা যায়, যে দলের প্রেসিডেন্ট তার বিপক্ষ দলের প্রতিনিধিদের সংখ্যা কংগ্রেসে বেশি।


আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ‘রিসেট’ করতে চায় রাশিয়া


আবার সিনেট এবং কংগ্রেসের মধ্যেও এই বৈচিত্র দেখা যায়। ফলে কোনো সিদ্ধান্তই এক তরফা নেওয়া যায় না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, গত চার বছরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একাধিকবার অস্ত্র আইন সংস্কারের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু হাউসের বিরোধিতায় শেষ পর্যন্ত তা তিনি করতে পারেননি।


খেয়াল রাখতে হবে, হাউসে রিপাবলিকানদের প্রতিনিধিত্ব বেশি থাকার কারণেই এই সিদ্ধান্ত পাশ হয়নি। অতীতে এমন আরো অসংখ্য উদাহরণ আছে।


এখন যে ৩৩টি আসনের ফলাফল জানা যাবে, তার মধ্যে ১৯টি আসন ছিল ডেমোক্র্যাটদের দখলে। চারটি আসন ছিল নির্দল প্রার্থীদের কাছে। এই নির্দল প্রার্থীরা অধিকাংশ সিদ্ধান্তেই ডেমোক্র্যাটদের পাশে ছিলেন।


আরও পড়ুন: জনগণের রায়ে আবারও হোয়াইট হাউসে ফিরলেন ট্রাম্প


অনেকেই মনে করছেন, এই ১৯টি আসন ডেমোক্র্যাটেরা ধরে নাও রাখতে পারেন। আসন কমতে পারে নির্দল প্রার্থীদেরও। সে ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারে রিপাবলিকানরা।


এমএল/