গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে রাবিতে নবান্ন উৎসব
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, ১৮ই নভেম্বর ২০২৪
‘নতুন ধানে নবান্ন সবার ঘরে আনন্দ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে নবান্ন উৎসব পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এগ্রোনমি এন্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: রাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশন
প্রতি বছরের ন্যায় এবারো বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা, পিঠা খাওয়া, নাচ-গান-আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘নবান্ন উৎসব-১৪৩১’। (১৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় কৃষি অনুষদের সামনে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। দিনটি উদযাপন উপলক্ষে অনুষদের সামনে থেকে এক বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এছাড়াও পিঠা উৎসব, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কারের আয়োজন করা হয়।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ‘নবান্ন উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির ইতিহাস ও গ্রামীণ ঐতিহ্যের। এ সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য আমাদের কৃষি অনুষদ কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের এই নবান্ন উৎসব। আমাদের দায়িত্ব হলো ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহা. মাঈন উদ্দিন, এগ্রোনোমী এন্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের সভাপতি ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিভাগের শিক্ষকরাসহ প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী।
সরেজমিনে দেখা যায়, এবারের নবান্ন উৎসবে নিজেদের হাতের তৈরি ১০টি পিঠার স্টল নিয়ে বসেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। যেখানে দুধপুলি, চন্দ্র পুলি, তেল পিঠা, নকশী পিঠা, পাটি সাপটা, লবঙ্গ লতিকা, গাজরের হালুয়া, রস মলাইসহ দেড় শতাধিক পদের পিঠা প্রদর্শিত হচ্ছে। ১০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দামে বিক্রি হওয়া এসব পিঠা উপভোগ করতে শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
স্টল নিয়ে বসা শিক্ষার্থী প্রীতম দাস অমিত বলেন, নবান্ন বাংলাদেশের কৃষি সংস্কৃতির প্রাণবন্ত প্রতিচ্ছবি। প্রতি বছরের মতো এবারও আমাদের বিভাগ নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছে, যা আলপনা, পিঠা স্টল, ফ্ল্যাশমব ও নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনে সজ্জিত। নতুন ধানের ঘ্রাণে বাংলার মানুষের যে আনন্দ ও উচ্ছ্বাস, এই উৎসব তারই প্রতীকী প্রকাশ।
আরও পড়ুন: রাবি সংলগ্ন বিনোদপুরে ন্যায্যমূল্যে সবজির দোকান
এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব ও অপসংস্কৃতির সয়লাব থেকে বেরিয়ে আসতে আমরা গ্রাম বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্যকে সামনে আনার উদ্দেশ্যে নবান্ন উৎসব উদযাপন করি। নবান্ন বাঙালি সংস্কৃতির গভীর শিকড়ে প্রোথিত একটি আনন্দঘন অধ্যায়। কার্তিক মাসের দুঃসহ অভাব পেরিয়ে অগ্রহায়ণের ঋতুসন্ধি আমাদের জীবনে যে মাধুর্য ও প্রাচুর্যের বার্তা বয়ে আনে, সেটিই এই উৎসবের মূল সুর।
এসডি/