রাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশন
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২:১৮ অপরাহ্ন, ১৫ই নভেম্বর ২০২৪
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ জোহা চত্বরে এ অনশনে বসেন তারা। এখনো চলছে তাদের অনশন।
অনশনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন, পপুলেশন সায়েন্সেস এন্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের মেহেদী মারুফ, ফোকলোর বিভাগের আল শাহরিয়ার, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের মেহেদী হাসান মাসুমসহ আরও ১৫ জন।
আরও পড়ুন: রাবি সংলগ্ন বিনোদপুরে ন্যায্যমূল্যে সবজির দোকান
এই শিক্ষার্থীরা বলছেন, পোষ্য কোটা রাখার যৌক্তিক কোন কারণ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সন্তানেরা পিছিয়ে পড়া কোন জনগোষ্ঠী নয়। তাদের ক্ষেত্রে এই সুবিধা পাওয়া কোনভাবেই কাম্য নয়। যারা পিছিয়ে পড়া তাদের বিষয় আলাদা। কিন্তু তারা তো সন্তানদের যথাযথ সুযোগসুবিধা দিয়ে বড় করছেন। তাহলে এই সুবিধা তারা কিভাবে নেন প্রশ্ন তোলেন তারা। অবিলম্বে এ কোটা বাতিলের দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে চান তারা।
এ দিকে পোষ্য কোটা বাতিলে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার। দাবি মানা না হলে আমরণ অনশনে বসার ঘোষণা দেন তিনি।
রাবি উপ-উপাচার্য(শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, পোষ্য কোটা শিক্ষকদের জন্য অমর্যাদাকর। আমাদের সন্তানদের জন্য আত্মমর্যাদার প্রশ্ন। যদিও অধিকাংশ শিক্ষক এই কোটার সুযোগ গ্রহণ করেননা। এমনকি একজন শিক্ষকের সন্তান কোটায় ভালো সাবজেক্টে ভর্তির সুযোগ পেয়েও ভর্তি না হয়ে পরের বছর মেধার ভিত্তিতে অন্য সাবজেক্টে ভর্তি হন। আবার এটিও সত্য অনেক শিক্ষকের সন্তানের ভর্তির সুযোগ দিতে ন্যূনতম পাশ নম্বর কমাতে হয়েছে।
দিনশেষে আমি চাই এটি বন্ধ হোক। যে যুক্তিতে হয়তো একসময় এটি চালু হয়েছিল এখন আর সেগুলি প্রাসংগিক নয়।
প্রসঙ্গত অনেক প্রতিষ্ঠানে তাদের স্টাফদের জন্য কিছু বাড়তি সুযোগ সুবিধা বা ডিসকাউন্ট থাকে। এটি অবশ্যই কাউকে বঞ্চিত করে নয়। কোটাতে কেউ না এলেও মেধার ভিত্তিতে বেশি ছাত্র ভর্তির সুযোগ নেই।
তারপরেও কোটা এখন একটি কলঙ্কের নাম। এই কলঙ্ক শিক্ষক হিসেবে আমরা আর নিতে চাইনা। আমাদের সন্তানদের আত্মমর্যাদা আর বিনষ্ট হতে দিতে চাইনা। এটি অবিলম্বে বন্ধ হোক এই দাবি আমারও।
আরও পড়ুন: রাবির আবাসিক হলে আগুন
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, প্রায় ৫০ বছর ধরে এই কোটা চলছে। আমরাই এবার কোটা সংস্কারে কমিটি করে পর্যালোচনা করেছি এবং ৪% হতে ৩% করেছি। বিষয়টি নিয়ে উপকমিটির সভায় বেশ আলোচনা হয়েছে। অধিকাংশের মত কোটা রাখার পক্ষে থাকায় সেটা বাতিল করা সম্ভব হয়নি। তবে ক্রমাগত বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ সেশনে স্নাতক প্রথমবর্ষে মোট কোটার ৩% পোষ্য কোটা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভর্তি উপকমিটির এই সিদ্ধান্তের পর শিক্ষার্থীরা সমালোচনা শুরু করেন। বিগত সময়ে এই কোটার বিপক্ষে অবস্থানয় নেয়ায় বর্তমান উপাচার্যের মন্তব্যও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার হতে দেখা গেছে। দায়িত্ব পেয়ে এই কোটা কেন বাতিল হবে না প্রশ্ন তোলেন শিক্ষার্থীরা।
আরএক্স/