প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৮ অপরাহ্ন, ১২ই ডিসেম্বর ২০২৪
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভের পরিমাণও বাড়তে শুরু করেছে। ফলে দীর্ঘদিন পর আবারও বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পৌঁছেছে। তবে নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ) এখনো ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে অবস্থান করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্ট মাসে সর্বোচ্চ উঠেছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)। গত আওয়ামীলীগ সরকারের লাগামহীনভাবে অর্থ পাচার ও বিভিন্ন অনিয়মের কারণে রিজার্ভ একেবারে তলানিতে নামে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি ডিসেম্বরের মাসের ১১ তারিখ পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ২ হাজার ৪৭৫ কোটি মার্কিন ডলার বা ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার ছিল। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন এক হাজার ৯২০ কোটি ডলার (১৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন)। চলতি মাসের শুরুর দিকে অর্থাৎ ৪ ডিসেম্বর গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন এবং বিপিএম-৬ ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার ছিল।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই রেমিট্যান্স এল ৬১ কোটি ডলার
গ্রস রিজার্ভ ও বিপিএম-৬ এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেয়, বাইরে প্রকাশ করে না। চলতি বছরের ১১ ডিসেম্বর শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ আছে এক হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের মতো ছিল (১৫ বিলিয়ন ডলার )। প্রতি মাসে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো কষ্টকর হয়ে যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হল বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ।
গত জুলাই মাসে কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে সংঘাত-সংঘর্ষ, কারফিউ ও ইন্টারনেট বন্ধের প্রেক্ষাপটে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাবে না বলে হুমকি দেয় প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে ১৯০ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা ছিল গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
আরও পড়ুন: আইএমএফ ঋণের চতুর্থ কিস্তি ফেব্রুয়ারি-মার্চে আসবে: অর্থ উপদেষ্টা
এরপর নতুন সরকার গঠনের পর আবার দেশ গঠনে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি। এর ফলে আবারও প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করে। সবশেষ নভেম্বর মাসে দেশে প্রবাসী আয় বেড়ে ২২০ কোটি (২ দশমিক ২০ বিলিয়ন) দাঁড়ায়।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার, আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪৭ লাখ ৯০ হাজার এবং অক্টোবরে ২৪০ কোটি মার্কিন ডলার। অর্থাৎ অর্থবছরের টানা চার মাস ২ বিলিয়নোর ওপরে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা।
এমএল/