রাজনীতিবিদ-আমলা-ব্যবসায়ীরা মিলে লুটপাট চালিয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতে: ড. তামিম


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:৪৬ অপরাহ্ন, ১৪ই ডিসেম্বর ২০২৪


রাজনীতিবিদ-আমলা-ব্যবসায়ীরা মিলে লুটপাট চালিয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতে: ড. তামিম
ছবি: সংগৃহীত

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তামিম বলেছেন, বিগত সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতকে কুক্ষিগত রেখে সীমাহীন দুর্নীতি করা হয়েছে। রাজনীতিবিদ, আমলা ও ব্যবসায়ীরা মিলে এই দুটি খাতে নজীরবিহীন লুটপাট চালিয়েছে বলে জানান তিনি।


শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ড. তামিম।


তিনি বলেন, ‘প্রতিযোগিতা ছাড়াই বিভিন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করা হয়েছে। পিডিবির বিদ্যুৎ কেনা, সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ হয় এককভাবে। আমলা, রাজনীতিবিদরা এই একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়ন্ত্রণ করে সুবিধাভোগ করে। নিজস্ব ক্ষমতা সম্পন্ন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান দরকার। যার মাধ্যমে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে দুর্নীতি, লুটপাট কমিয়ে আনা সম্ভব।


আরও পড়ুন: গ্যাস সংকট কেটে গেলে সারের ঘাটতি থাকবে না: আদিলুর রহমান খান


শুধু আইন দিয়ে দুর্নীতি বন্ধ হয় না উল্লেখ করে এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, মাফিয়ারা আইনের মাধ্যমেই চুরি করেছে। কিছু ক্ষেত্রে আইনের ফাঁক রয়েছে। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া দরকার। তাহলে পরবর্তীতে কেউ এমন করার সাহস আর পাবে না। এজন্য শপথ নিতে হবে তরুণদের।


ড. তামিম বলেন, শ্বেতপত্রের প্রতিবেদনে ৩ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত মুনাফা দেখানো হয়েছে। কাগজ-কলমের মাধ্যমে আমরা দেখিয়েছি। কিন্তু কাগজের বাইরে যে লুটপাট হয়েছে, তা প্রমাণ করা সম্ভব নয়।


তিনি বলেন, ভারতের আদানির প্রজেক্টে কয়লার মূল্য অনেক বেশি ধরা হয়েছে। বাকি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রে কয়লার দাম অনেক কম। ১০০ শতাংশ ক্যাপাসিটি চার্জ তো দিতে হবেই, সঙ্গে ৪০ শতাংশ বিদ্যুতের দাম দিতে হবে, ব্যবহার না করলেও। অন্যান্য ক্ষেত্রে শুধু ক্যাপাসিটি চার্জ দিলেই চলে। দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য তেলবিদ্যুতের বিকল্প ছিল। কিন্তু ২০১২-১৩ সালের পর কুইক রেন্টাল প্রয়োজন ছিল না।


আরও পড়ুন: শহীদদের স্মরণে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল


ডোমেস্টিক সেক্টরে গ্যাসও চুরি হচ্ছে উল্লেখ করে এ জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, সার্বক্ষণিক দুই চুলা ব্যবহারের খরচ ১৪০০ টাকা। দুই সিলিন্ডার ব্যবহারে লাগে ২৮ হাজার। তফাত কম হলে চুরি কম হতো। যেহেতু পার্থক্য বেশি, সেহেতু অবৈধ সংযোগে ঝোঁক বেশি। এটি বন্ধ করতে কাঠামোগত পরিবর্তন দরকার।


তিনি আরও বলেন, বিপিসি বাংলাদেশের সবচেয়ে অস্বচ্ছ একটি প্রতিষ্ঠান। এর সঙ্গে সরকারি স্বার্থ জড়িত। লস দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ হাতানোর কারণে একে অস্বচ্ছ রাখা হয়েছে। এর নিয়ন্ত্রণ বিইআরসির হাতে দেওয়া উচিত। বাংলাদেশের বিদ্যুৎখাতে আঞ্চলিক সহযোগিতার দরকার আছে, কিন্তু তা অবশ্যই ন্যায্যতার ভিত্তিতে।


এমএল/