শহীদদের স্মরণে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪১ অপরাহ্ন, ১৪ই ডিসেম্বর ২০২৪

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সর্বসাধারণের ঢল নেমেছে। ফুলেল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করছেন।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা শ্রদ্ধা জানানোর পর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ সর্বসাধারণের জন্য উনমুক্ত করে দেওয়া হয়।
এরপর থেকে রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। এ সময় শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাতও করছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: কবি হেলাল হাফিজের প্রথম জানাজা নামাজ সম্পন্ন
এর আগে সকাল ৭টা ৫ মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও পরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় সেখানে কিছু সময় তারা নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
প্রসঙ্গত, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষলগ্নে পুরো দেশের মানুষ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে, ঠিক তখনই রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালিকে মেধাশূন্য করার এ নৃশংস নিধনযজ্ঞ সেদিন গোটা জাতিসহ পুরো বিশ্বকেই হতবিহ্বল করে দিয়েছিল। এর দুই দিনের মাথায় ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করে জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানি বাহিনী। এর মধ্যদিয়ে স্বাধীন দেশ হিসেবে অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশের।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে ঘাতক চক্র কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে সেই রাতে তালিকা ধরে ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় নিস্তব্ধ ভূতুড়ে অন্ধকারে।
আরও পড়ুন: বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি-প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলাতে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় অনেক নিথর দেহ। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষতবিক্ষত। হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নাড়িভুঁড়িও বের করে ফেলা হয়েছে অনেকের। স্বাধীনতার ঊষালগ্নে উন্মুখ মানুষ স্বজন হারানোর সেই কালরাত্রির কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছিল। স্থবির হয়ে গিয়েছিল সবকিছু।
হত্যার পূর্বে যে তাদের নির্যাতন করা হয়েছিল, সে তথ্যও বের হয়ে আসে। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক সংবাদ সাময়িকী নিউজ উইকের সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের রচিত নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে, নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।
দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে সরকারিভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছাড়াও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করবে।
এমএল/
বিজ্ঞাপন
পাঠকপ্রিয়
আরও পড়ুন

একনেকে ৮৯৭৪ কোটি টাকার ১৭ প্রকল্প অনুমোদন দিলো সরকার

আগামী মাস থেকে ভাতা পাবেন ‘জুলাই যোদ্ধারা’: উপদেষ্টা

গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে বাংলাদেশ অন্যতম ভুক্তভোগী রাষ্ট্র: ফরিদা আখতার

টিউলিপ ও তার আইনজীবী বাংলাদেশকে ছোট করছেন : দুদক
