এখনও পুলিশ পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করছি: ডিএমপি কমিশনার


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪:৩৪ অপরাহ্ন, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৪


এখনও পুলিশ পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করছি: ডিএমপি কমিশনার
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, এখনো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেয়ে নিজেদের পুলিশ অফিসার পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করছি।


শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির (বিআরপিওয়া) অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।


ডিএমপি কমিশনার বলেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে থাকবে। স্বাধীনতার ৫২ বছর পরে এরূপ পুলিশ এদেশের আপামর সাধারণ মানুষ দেখতে চাননি। আন্দোলনে হাজার ছাত্র-জনতার মৃত্যু দুঃখের কাহিনী রচনা করেছে। আমরা স্বাধীন দেশের পুলিশ। কী কারণে মানুষের এতো ক্ষোভ পুলিশের উপরে? জুলাই-আগস্টের ঘটনা আমাদেরকে সামাজিকভাবে অনেক নিগৃহীত করেছে। এখন পর্যন্ত সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজেদেরকে পুলিশ অফিসার পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করছি। এই ট্রমা থেকে আমাদেরকে বের হয়ে আসতেই হবে। বের হয়ে আসার জন্য একটাই উপায়, মানুষকে সেবা দিতে হবে। সেবা দেওয়ার মাধ্যমেই একমাত্র পুলিশের হারানো ইমেজ বা গৌরবকে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হব, ইনশাআল্লাহ্‌।


আরও পড়ুন: অপরাধ কমাতে পুলিশের কাছে ম্যাজিক নেই: পুলিশ মহাপরিদর্শক


৫ আগস্টের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৭২ ঘণ্টা আগেও যদি তখনকার নেতৃত্বে থাকা পুলিশ অফিসাররা যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন তাহলে অনেকের জীবন হয়তো রক্ষা হতো। পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদেরও জীবন রক্ষা পেত। কিন্তু এরূপ সিদ্ধান্ত তখন নেওয়া হয়নি।


ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, বিশেষ করে পুলিশে গত ১৫ বছরে যারা নেতৃত্বে ছিলেন তারা কি ভূমিকা রেখেছিলেন, তারা কি কর্মকাণ্ড করলেন যে এদেশের মানুষ পুলিশের প্রতি এতো তিক্ত-বিরক্ত হলো। যার বহিঃপ্রকাশ ৪৪ জন পুলিশ সদস্যকে জীবন দিতে হলো, শত শত সহকর্মীকে বিভিন্নভাবে ক্ষত-বিক্ষত হতে হলো। সঙ্গে পুলিশের থানা, ফাঁড়ি, অস্ত্র লুট হয়ে গেল। পুলিশের যারা নেতৃত্বে ছিলেন তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি-না বা নিতে পেরেছেন কি-না সেই বিচারের বিবেচনা আপনাদের হাতেই ছেড়ে দিলাম।


তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনেক অ্যাসোসিয়েশন আছে, আমাদের দুটি আছে। একটি সার্ভিং অফিসারদের আরেকটি রিটায়ার্ড অফিসারদের। সব অ্যাসোসিয়েশনেই প্রতিযোগিতা, মতপার্থক্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমি আশা করি সার্ভিং এবং অবসরপ্রাপ্ত অ্যাসোসিয়েশনের মতপার্থক্য কমিয়ে এনে নিজেদেরকে ঐক্যবদ্ধ্য রেখে সামনে এগিয়ে যেতে পারি।


আরও পড়ুন: আমাদের প্রধান কাজ গণহত্যার বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন: আইন উপদেষ্টা


ডিএমপি কমিশনার বলেন, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত অ্যাসোসিয়েশন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সেইরূপ ভূমিকা পালন করতে পারেনি। বিভিন্ন সামাজিক ও বিভিন্ন বিষয়ে এই সংগঠন যেন আরও জোরালো ভূমিকা পালন করেন।


বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতির (বিআরপিওয়া) সভাপতি এম আকবর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।


এমএল/