পানিবণ্টন চুক্তি, কলকাতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫:৫৫ অপরাহ্ন, ৩রা মার্চ ২০২৫


পানিবণ্টন চুক্তি, কলকাতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল
ছবি: সংগৃহীত

গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা করতে পশ্চিমবঙ্গে গেছেন ইন্দো-বাংলাদেশ জয়েন্ট রিভার কমিশনের বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল। কলকাতা ও ফারাক্কায় ৩ থেকে ৮ মার্চ হতে যাওয়া ৮৬তম জেআরসি বৈঠকে অংশ নেবেন তারা। 


সোমবার (০৩ মার্চ) ১১ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল কলকাতা পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার।


খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল কলকাতা পৌছেছেন। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হল গঙ্গা-পদ্মা পানিবণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা। তাদের সঙ্গে নয়াদিল্লি থেকে আসা কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা বৈঠক করবেন।


আরও পড়ুন: পরিবর্তন করা হলো শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের নাম


গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলটি সোমবার ফারাক্কা ব্যারেজ পরিদর্শনে যাবেন। সেখানে তারা গঙ্গা থেকে পদ্মায় প্রবাহিত পানির পরিমাণ ও অবস্থা খতিয়ে দেখবেন। ফারাক্কা ব্যারেজ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নদীর পানিবণ্টনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গঙ্গা থেকে নির্ধারিত পরিমাণ পানি কীভাবে পদ্মায় প্রবাহিত হচ্ছে, তা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করবেন দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা।


ফারাক্কায় যৌথ পর্যবেক্ষণ শেষে প্রতিনিধিদলটি কলকাতায় ফিরে আসবেন। সেখানে তারা ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনের তত্ত্বাবধানে ৬-৭ মার্চ দুই দিনের বৈঠকে যোগ দেবেন। বৈঠকে গঙ্গার পানিবণ্টন ছাড়াও তিস্তা এবং অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোর বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।


১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা-পদ্মা পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর ফলে দুই দেশ গঙ্গার পানি ভাগ করে নেওয়ার একটি নির্দিষ্ট কাঠামো তৈরি করে। চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে এটি শেষ হবে। আগামী বছর চুক্তির ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নতুন করে কিছু পর্যালোচনা ও সংশোধন আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


আরও পড়ুন: সাদিক এগ্রোর চেয়ারম্যান ইমরান গ্রেফতার


চুক্তি অনুযায়ী, উভয় দেশ গঙ্গার প্রবাহ ও বণ্টন নিয়ে নিয়মিত বৈঠকে বসে। তবে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ অভিযোগ তুলেছে, শুষ্ক মৌসুমে ফারাক্কা ব্যারেজ থেকে বাংলাদেশ পর্যাপ্ত পানি পায় না। ভারত এসময় প্রবাহ সীমিত করে দিয়ে বেশিরভাগ পানি নিজেরা ব্যবহার করে। অন্যদিকে ভারতের দাবি, পানিপ্রবাহের স্বাভাবিক ওঠানামার কারণে কিছু সময় পানির পরিমাণ কমবেশি হয়। এই সফর ও বৈঠক সেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখারই একটি অংশ।


গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয়েছে বলেই মনে করেন ওয়াকিবহাল মহল। তাই এই বৈঠকের মাধ্যমে উভয় দেশ নিজেদের মতামত বিনিময় করবে এবং ভবিষ্যতে কীভাবে পানিবণ্টন আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।


বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ফারাক্কা পরিদর্শন এবং আগামী (৭ মার্চ)’র আলোচনা আগামী বছরের জন্য পানিবণ্টন নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের এই সফর তাই শুধু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের দিক থেকেই নয়, বরং ভবিষ্যতের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।


এমএল/