গোয়াইনঘাটে কৃষকের ধান নষ্টের অভিযোগ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২:৫০ অপরাহ্ন, ১২ই মার্চ ২০২৫

তানজিল হোসেন, গোয়াইনঘাট (সিলেট): সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নে স্থানীয় এক প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে প্রায় ১ একর জমির বোরোধান মহিষ দিয়ে নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার খুর্দ্দা জুজমহল গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জহির উদ্দিন (৫৫) ক্ষতিপূরণ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে গত ৮ মার্চ গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকার তোফায়েল আহমেদের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ মার্চ রাত অনুমান ৭ ঘটিকার দিকে উপজেলার পশ্চিম আলীরগাঁও ইউপির খুর্দ্দা চিতামইনের মৃত ছয়ফুল্লাহর ছেলে মোহাম্মদ আলী (৫৫), মৃত নজুব আলীর ছেলে জহির আলী (৫০), মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে আব্দুস সালাম (৫২) ও আব্দুল কাদির (৪৮), মৃত নছর আলীর ছেলে আবু বক্কর (৫৭), বেরা হাজীর ছেলে ছয়ফুল আলম (৫২) ও মৃত আছল আলীর ছেলে নুর উদ্দিন মাক্কা (৫০) সহ অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জন বিবাদী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাদের গৃহপালিত মহিষ দিয়ে একই ইউনিয়নের খুর্দ্দা জুজমহলের ভুক্তভোগী কৃষক জহির উদ্দিনের চাষকৃত বোরোধান খাওয়াইয়া দুই লক্ষ আশি হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে।
ভুক্তভোগী কৃষক জহির উদ্দিনের ভাতিজা শাহিদুর রহমান (৪৫) বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী চক্র রাতের আঁধারে মহিষ দিয়ে বোরোধান খাওয়াচ্ছেন এমন খবর শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিবাদীগণকে এহেন কার্যকলাপ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিবাদীরা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর করার জন্য উদ্যত হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জহির উদ্দিন (৫৫) বলেন, এই জমি আমাদের পৈত্রিক জমি। এখানে আমরা বোরোধান চাষাবাদ করলেই প্রভাবশালী চক্র পরিকল্পিত ভাবে মহিষ দিয়ে আমাদের কষ্টের ফসল নষ্ট করে দেয়। অথচ আমাদের চারপাশে আরোও বিভিন্নজনের ধান রয়েছে। তারা শুধু আমার ধানগুলো মহিষ দিয়ে নষ্ট করে। তিনি বলেন, বিষয়টি এলাকার মুরব্বিদের একাধিকবার জানিয়েছি। তারাও কোন ব্যবস্থা নেননি। এদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে আমাদের প্রাণে হত্যার হুমকি দেয়।
স্থানীয় কৃষক হাবিবুর রহমান (৪৬) বলেন, হাতিরপাড়া-হাকুর বাজার প্রধান সড়ক সংলগ্ন জিয়াকুড়ির এগারোজনি জমি আমাদের মৌরসীপাট্টার জমি। বিবাদী মোহাম্মদ আলী গং প্রভাবশালী হওয়ায় পরিকল্পিত ভাবে মহিষ দিয়ে আমাদের কষ্টের ফসল নষ্ট করে দিয়েছে। আমরা নিরূপায় হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলীর সাথে কথা হলে, তিনি ধান নষ্টের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এদিকে সরেজমিন গত শনিবার বিকেলে বোরোধান নষ্টের বিষয়টির সত্যতা পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলার পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আলিম উদ্দিন বলেন, মহিষ দিয়ে ধান নষ্ট করার বিষয়টি দুঃখজনক। এটি করা ঠিক হয় নি। তবে, এই জমি নিয়ে কিছুটা প্যাচ আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়াইনঘাট থানার এসআই আল-আমিন বলেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মহিষ দিয়ে ধান নষ্ট করার বিষয়টি সত্য। অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, উভয় পক্ষের জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাই করে সমস্যাটির যাতে স্থায়ী একটা সমাধান আসে আমি এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমেদ লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরএক্স/