আদালতে কাঁদলেন শাজাহান খান


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২:৪১ অপরাহ্ন, ১৭ই মার্চ ২০২৫


আদালতে কাঁদলেন শাজাহান খান
ছবি: সংগৃহীত

বড় ছেলে আসিবুর রহমান খানের সঙ্গে পাঁচ মাস দেখা নেই, এই কথা বলতে বলতে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকেন সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান।


সোমবার (১৭ মার্চ) সকালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর বাড্ডায় রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি নিহতের মামলায় রিমান্ড শুনানিতে আদালতে  এভাবেই কাঁদলেন সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান।


আরও পড়ুন: আবরার হত্যা : হাইকোর্টে আপিল শুনানি শুরু


রিমান্ড শুনানিকালে শাজাহান খান বলেন, মাননীয় আদালত আমাকে একটু সময় দেন, আমি কথা বলতে চাই। আদালত তাকে কথা বলার অনুমতি দেন। শাজাহান খান বলেন, পিপি সাহেব বলেছেন, আন্দোলনে পুলিশ গুলি করেছে। সে অর্ডার তো দিতে পারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গুলি চালানোর অর্ডার তো আমি দিতে পারি না। আমি জড়িত না। কেন আমার বিরুদ্ধে এই মামলা হলো? শুধু আমার বিরুদ্ধে না, আমার বড় ছেলে আসিবুর রহমানকে আসামি করা হয়েছে। সে এখন জেলে।


তখন কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে পাঁচ মাস আমার দেখা নেই। আমার প্রশ্ন- আমার ছেলে কী করেছে। আমি ঢাকায় থাকাকালে ছেলে মাদারীপুর ছিল। আপনি এখনই চেক করতে পারেন। আর সিরাজুল ইসলাম কে? তখন বিচারক বলেন, আপনার বিষয়ে আইনজীবী কথা বলেছেন। তবুও শাজাহান খান দুই হাত জোড় করে কথা বলার জন্য আরও সময় চান। 


তিনি বলেন, একটু সময় দেন। উনারা (আইনজীবী) ভালোভাবে বিষয়টা বলতে পারেননি। চেয়ারম্যান ৬টা হত্যা মামলার আসামি। আমি তার পক্ষে ছিলাম না। তাই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলা দিয়েছে।


পরে আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। এসময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে টিস্যু দিয়ে দুই চোখ মুছতে থাকেন শাজাহান খান।


শুনানি শেষে ১০টা ৪০ মিনিটে হেলমেট, বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও হাতকড়া পরিয়ে আদালত থেকে বের করা হয় শাজাহান খানকে। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তাকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেন। তখন তিনি বলেন, কথা বলা নিষেধ? কথা তো বলতে হবে। গণতান্ত্রিক দেশ।


এরপর শাজাহান খান বলেন, এ দেশের মায়েরা, বোনেরা এখন রাস্তায় নামছে উপদেষ্টার পদত্যাগের জন্য। পরে পুলিশ সদস্যরা তাকে দ্রুত হাজতখানায় নিয়ে যান।


আরও পড়ুন: হত্যা মামলায় মেনন-ইনু ৩ দিনের রিমান্ডে


জানা গেছে, গত বছরের ১৯ জুলাই উত্তর বাড্ডা বিসমিল্লাহ হোটেলের পাশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন রফিকুল ইসলাম। সেখানে আসামিদের ছোড়া গুলিতে আহত হন তিনি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর নিহতের মামা লুৎফুর রহমান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।


এদিকে শাজাহান খানের আইনজীবীরা আদালতকে জানিয়েছেন, মামলার বাদীকে চেনেন না ভিকটিমের মা ও স্ত্রী। তাকে কখনো দেখেননি। তাদের বাড়ি শাজাহান খানের ওই আসনে। লুৎফুর রহমানের শ্বশুর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম। সিরাজুল ইসলাম একটি মার্ডার মামলায় জড়িত। শাজাহান খানের কাছে যান তাকে সেফ করার জন্য। তখন শাজাহান খান তাকে বলেন, আইনের বাইরে কিছু করা যাবে না। এখন ওই কারণে তাকে এবং তার ছেলেকে মামলায় ফাঁসিয়েছে সিরাজ চেয়ারম্যানের জামাই লুৎফর রহমান।


আরএক্স/