বিয়ের সময় নাম ভুল বললে বিয়ে হবে?
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৩৪ অপরাহ্ন, ২৩শে এপ্রিল ২০২৫

ইসলামে নিকাহ বা বিয়ে বৈধ হওয়ার জন্য সাক্ষী থাকা গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামে সাক্ষী ছাড়া বিয়ে হয় না। ইসলামী শরিয়া মুতাবেক বিয়ে বৈধ হওয়ার জন্য কমপক্ষে দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষী থাকতে হয় এছাড়া বিয়ে ও সংসার বৈধ হয় না। তাই বিয়ের সময় সাক্ষী রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: যেসব শব্দে ‘কবুল’ বলা ছাড়াও বিয়ে হয়ে যায়
এর দলিল হিসেবে ইসলামী আইন ও ফেকাহ শাস্ত্রবিদেরা রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিস উল্লেখ করেন। রাসুল (সা.) বলেন,
لا نكاح إلا بوليّ وشاهدين
‘অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।’- (আহমাদ, বুলূগুল মারাম- হা/৯৭৬, বিয়ে অধ্যায়)
নিকাহ বা বিয়ের সময় সাক্ষীর সামনে বর ও কনের নাম উচ্চারণ করা হয়। তবে নাম উচ্চারণের সময় ভুলে অন্য কোনো বর বা কনের নাম বল্লে বিয়ে শুদ্ধ হবে কিনা? নাকি ভুলে যার নাম বলা হয়েছে তার সঙ্গে বিয়ে হয়ে যাবে?
এ বিষয়ে ফেকাহবিদ উলামায়ে কেরামরা বলেন, যার বিয়ে পড়ানো হচ্ছে তিনি যদি সামনেই উপস্থিত থাকেন, তাহলে নাম ভুল হলেও সে যেহেতু সামনেই উপস্থিত ছিল তাই তার বিয়ে হয়ে যাবে। কারণ, যার বিয়ে পড়ানো হয়েছে তিনি বিবাহের মজলিসে উপস্থিত ছিলেন, সেক্ষেত্রে নাম বলতে ভুল হয়ে গেলেও সমস্যা নেই। উপস্থিত বর বা কনের সাথেই বিবাহ সংঘঠিত হয়ে যায়।
ইসলামে প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও পুরুষের বিয়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) এরশাদ কলেছেন, ‘হে যুবক সকল! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম সে যেন বিয়ে করে। কারণ, বিয়ে করলে দৃষ্টিকে নিচু রাখা যায় এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করা যায়। আর যে ব্যক্তি বিয়ের দায়িত্ব পালন করতে পারবে না সে যেন রোজা রাখতে থাকে। কারণ রোজা তার খাহেশকে কমিয়ে দেবে (বুখারি, মুসলিম)।
বিয়েতে পাত্রী পছন্দের ক্ষেত্রে মহা নবী (সা.) বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে আত্মিক ও ঈমানের সৌন্দর্যকে প্রাধান্য দিতে বলেছেন। তিনি বলেন, ‘নারীদের চারটি গুণ দেখে বিয়ে করো : তার সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার রূপ-সৌন্দর্য ও তার দ্বীনদারী। তবে তুমি দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দেবে। নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫০৯০)
রাসূল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের নিকট কোনো পাত্র বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যার দ্বীনদারী ও চরিত্র তোমাদের যদি পছন্দ হয়, তাহলে তার সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন করো। অন্যথা জমিনে বড় বিপদ দেখা দেবে এবং সুদূরপ্রসারী বিপর্যয়ের সৃষ্টি হবে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১০৮৪-৮৫)
আরও পড়ুন: পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য যেসব আমল করতে পারেন
হজরত মুগিরা ইবনে শুবা (রা.) বলেন, আমি জনৈক নারীকে বিয়ের প্রস্তাব করলাম। রাসূল (সা.) আমাকে বললেন, ‘তুমি কি তাকে দেখেছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তাকে দেখে নাও। কেননা এতে তোমাদের উভয়ের মধ্যে ভালোবাসা জন্মাবে।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস : ৩১০৭)
এসডি/