৮২ শহিদ পরিবার, ১৪৮৩ জুলাই যোদ্ধাকে সংবর্ধনা দিল ঢাকা জেলা প্রশাসন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২৫ পিএম, ৫ই আগস্ট ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে ঢাকা জেলার ৮২ শহীদ পরিবার ও এক হাজার ৪৮৩ জন জুলাই যোদ্ধাকে সংবর্ধনা দিয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র এ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, দেশের মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল ফ্যাসিবাদী সরকার। বিগত ১৬ বছরে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট শুধু একটা বিশেষ দিবস নয়, এটি একটি প্রতিজ্ঞা, গণজাগরণের উপাখ্যান এবং ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতির পুনর্জন্মের দিন। আজ আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। যাদের কারণে আত্মত্যাগের কারণে আমরা আমরা পেয়েছি স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশ।
এর আগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের উপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে শহিদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধারা স্মৃতিচারণ করেন। পরে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের সম্মাননা ক্রেস্ট ও গিফট বক্স প্রদান করেন।
শহিদ শুভ’র মা রেনু বলেন, গত বছরের ১৯ জুলাই বিকেলে আমার ছেলের গুলি লাগে।কিন্তু তাকে হাসপাতালে নিলেও কোন চিকিৎসা হয়নি। পরদিন ভোরে আমার ছেলে মারা যান। আমার ছেলেকে গোসল করাতে বাধা দেওয়া হয়। আমার ছেলে হত্যার বিচারের কিছুই পায়নি। ছাত্রদের ডাকে সাড়া দেওয়া কি আমার ছেলের অপরাধ ছিল? সন্তান হারানোর ব্যথা একজন মা ছাড়া কেউ বোঝে না।
শহিদ আকরাম খান রাব্বির মা বলেন, আমাদের প্রতিটা মুহুর্ত মৃত। শুধু নিশ্বাসটা আছে। সন্তান হারা মা কিভাবে দুনিয়াতে বেঁচে থাকে আল্লাহ জানে। এখানে আনন্দ, উল্লাস করতে আসেনি। আমাদের সন্তানের বিচার চাইতে এসেছি। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিচার চাই। তাকে ধরে এনে এমন শাস্তি দিতে হবে, যাতে পুরা পৃথিবী কেপে উঠে।
ঢাকা জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সভাপতিত্বে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদ বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের যারা সহযোগী ছিল তারা পালিয়ে যাওয়ায় প্রশাসনিক শূন্যতা দেখা দিয়েছিল। এটা মোকাবিলা করে নাগরিক সেবা গতিশীল করতে আমাদের চ্যালেঞ্জ ছিল। তা আমরা কাটিয়ে উঠেছি।
এসডি/