এসিল্যান্ডকে হুমকি দিল এনসিপি নেতারা, থানায় জিডি
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১:১৫ পিএম, ৫ই আগস্ট ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সরকারি কার্যালয় চত্বরে অনুমতি ছাড়া জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের অনুষ্ঠান নিয়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের বাদানুবাদ হয়েছে। এ সময় এনসিপি নেতাদের বিরুদ্ধে ভূমি অফিসের টিনের বেড়া জোরপূর্বক খুলে নেওয়ার এবং এসিল্যান্ডের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ও হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (০৫ আগস্ট) দুপুরে আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমিন।
এদিকে বিকেলে অনুমতি ছাড়াই ভূমি অফিস কার্যালয়ের চত্বরে অনুষ্ঠান করছেন এনিসিপির নেতারা।
আরও পড়ুন: রামগড় বারৈয়ারহাট সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা
আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন ও সাধারণ ডায়েরী সূত্রে জানা গেছে, আশুগঞ্জ বাজারে উপজেলা ভূমি কার্যালয় অবস্থিত। ভূমি কার্যালয়ের পেছনে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল ছিল। সেটি টিনের বেড়া দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। সেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের অনুষ্ঠান করতে মঙ্গলবার সকাল ১১টা ৩০মিনিটের দিকে এনিসিপির নেতাকর্মীরা যান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এসিল্যান্ডের অনুমতি না নিয়ে ভূমি কার্যালয় চত্বরে ঢুকেন এনসিপির নেতারা। তারা এক পর্যায়ে ঢেকে রাখা ম্যুরালের চারপাশ থেকে টিনের বেড়া সরিয়ে নেন। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাধা দেন। এনিয়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে এনসিপির নেতাদের কথা কাটাকাটি হয়। আশুগঞ্জ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম এক পর্যায়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং হুমকি দেন। এ ঘটনায় আশুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন এসিল্যান্ড।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমিন বলেন, অনুষ্ঠান করতে সকালে ভূমি অফিসের সীমানা দেওয়া জায়গা ভেঙে দিয়েছে এনিসিপির নেতারা। সরকারি জায়গায় অনুমতি ছাড়া অনুষ্ঠানে বাধা দিলে এনসিপির নেতা আমিনুল ইসলাম ডালিম উল্টো আমাকে হুমকি দিয়েছেন। আমার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। অনুষ্ঠানের বিষয়ে তারা কাউকে অবগত করেনি। ইউএনও স্যারও তাদের অনুষ্ঠানের বিষয়ে অবগত নয়। তারা অনুষ্ঠান করবেই বলে জানিয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছিল। হুমকি দেওয়ায় এবং বাধা না মানায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।
আরও পড়ুন: দেবিদ্বারে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’, ১২ শহীদের রক্তে লেখা গৌরবগাঁথা
এনসিপির আশুগঞ্জ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম ডালিম বলেন, বিকেল পাঁচটায় আশুগঞ্জের কাচারি পুকুর পাড়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে মিলাদ মাহফিল করেছি। উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের পেছেন শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল ছিল। ম্যুরালটি টিনের বেড়া ও গুনা দিয়ে তারা ঢেকে রেখেছিল। তিনি দাবি করেন বর্তমানে এটি মীর মুগ্ধ চত্বর। মিলাদ মাহফিলের জন্য মঙ্গলবার সকালে এনসিপির সদস্যরা সেখানে পরিস্কার করতে যান। পরিস্কার করতে গিয়ে টিনের একটি বেড়া খুলে ছিল। এজন্য উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফোন করে আমাদের পুলিশ দিয়ে গ্রেফতারের হুমকি দেন। আমি বলেছিলাম আমাদের বাধা দিয়েন না। আমরা অনুষ্ঠানটি করে ফেলি। কিন্তু সেখানে অনুষ্ঠান করা যাবে না বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, হুমকির বিষয়টি বানোয়াট।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফে মোহাম্মদ ছড়া বলেন, সরকারি অফিসের টিনের বেড়া সরিয়ে এনসিপির ব্যানারে জুলাই মঞ্চের নামে সমাবেশ করেছে। কিন্তু সরকারি অফিস, অফিসের নিরাপত্তা ও গোপনীয় নথি আছে এবং এখানে অনুষ্ঠান করতে দিতে পারি না। তারা কোথাও থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। বাধা দেওয়ায় এসিল্যান্ডের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে তারা। এনসিপির জেলার যুগ্ম সমন্বয়ক আকিব জাবেদ উল্টো অনুষ্ঠানের অনুমতি দিতে বলেছেন। অনুমতি না দিলে আমরা নিজেরাই করে ফেলবো বলে জানিয়েছে। থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি।
এমএল/