জুলাই ঘোষণাপত্রে ইতিহাস বিকৃতি, বর্জনের হুমকি গণঅধিকার পরিষদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৪৫ পিএম, ৬ই আগস্ট ২০২৫

জুলাই ঘোষণাপত্রে গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে—এমন অভিযোগ তুলে ঘোষণাপত্র বর্জনের হুমকি দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।
বুধবার (৬ আগস্ট) সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর এক সম্মেলনে জুলাই ঘোষণাপত্র ও অন্তর্বর্তী সরকারের নির্বাচনী রোডম্যাপের প্রতিক্রিয়া জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি। এতে বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।
সংগঠনের লিখিত বক্তব্যে মো. রাশেদ খান বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্রের ১৬ নম্বর দফায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটাব্যবস্থার বিলোপ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ইত্যাদি…’। কিন্তু বাস্তবে ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনের মূল প্রেক্ষাপট ছিল ২০১৮ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরি থেকে কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি। দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলন থেকে এটি শুরু হয়নি। এই ইতিহাসকে উপেক্ষা করে জুলাই ঘোষণাপত্রে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদ ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতৃত্বে যে ধারাবাহিক ছাত্র আন্দোলন ও গণআন্দোলন হয়েছে, সেটির ইতিহাস পরিকল্পিতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি ইতিহাস বিকৃতি, যা আগামী প্রজন্মকে মিথ্যা শেখাবে। ঠিক যেমন ১৯৭১ সালের ইতিহাস নিয়েও বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা শেখানো হয়েছে।”
ঘোষণাপত্রের আরও কিছু দফা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নেতারা। ১৭ নম্বর দফায় শহীদের সংখ্যা কম দেখানো এবং ফ্যাসিস্ট বাহিনীর বিচার না হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। ১৮ নম্বর দফায় শেখ হাসিনার দেশত্যাগের বিষয়ে ‘অস্পষ্টতা’ নিয়েও সমালোচনা করেন রাশেদ খান। তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা কীভাবে দেশত্যাগ করলেন, আজও জাতি তা জানে না। তিনি যেভাবে মানুষ হত্যা করেছেন, তার বিচার শুধু রায় ঘোষণা করলেই সম্পন্ন হয় না।”
এছাড়া ঘোষণাপত্রে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, বিডিআর বিদ্রোহ, আবরার ফাহাদ হত্যা, শাপলা চত্বরের ঘটনা, মোদি আগমনবিরোধী আন্দোলনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা অন্তর্ভুক্ত না করার কারণেও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা। এসব আন্দোলনের মাধ্যমেই তরুণ প্রজন্ম বিপ্লবের অনুপ্রেরণা পেয়েছে বলে মনে করে গণঅধিকার পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, অ্যাডভোকেট সরকার নূরে এরশাদ সিদ্দিকী প্রমুখ।
সংগঠনটি স্পষ্ট করে জানায়, ইতিহাস বিকৃতি সংশোধন না হলে তারা এই ঘোষণাপত্র ও অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম বর্জন করবে।
আরএক্স/
বিজ্ঞাপন
পাঠকপ্রিয়
আরও পড়ুন

গৃহবধূ থেকে যেভাবে আপসহীন নেত্রী হয়ে ওঠেন খালেদা জিয়া

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে জামায়াতের আলোচনা, যা জানা গেল

বিএনপি চেয়ারপার্সনের খোঁজ নিতে ফিরোজায় যাবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

শেখ হাসিনা যা চাচ্ছেন, পিআর পদ্ধতি অনেকটা সেইরকম: রিজভী
