সঙ্গীর যেসব কথায় দাম্পত্য কলহ বাড়ে


Janobani

জনবাণী ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬:০৮ পিএম, ৯ই আগস্ট ২০২৫


সঙ্গীর যেসব কথায় দাম্পত্য কলহ বাড়ে
ছবি: সংগৃহীত

মানুষ স্বভাবজাত কারণেই একা থাকতে পারে না। এ কারণেই মানুষ একে অন্যের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তোলে বা জড়িয়ে পড়ে। একটা সম্পর্ক তৈরি করার জন্য সময় দিতে হয়। কিন্তু মাত্র কয়েক মুহূর্তেই সম্পর্ক ভেঙে যেতে পারে। যেমন ধরুন, সঙ্গীর পছন্দকে অপমান বা অবজ্ঞা করা, কথায় ঘৃণা প্রকাশ করা কিংবা সঙ্গীকে উপহাস করে কিছু বলা। একেবারে সবকিছু মুখের ওপর বলে ফেলা ঠিক না।


কিছু কথা আছে যেগুলো বলার ধরনটাই বলে দেয় সম্পর্কটা আপনি গড়তে চান, না ভেঙ্গে ফেলতে চান।


দাম্পত্য সম্পর্ক এমন এক জায়গা, যেখানে একটুখানি কোমলতা অনেকটা দূর নিয়ে যায়। আবার একটুখানি কটু কথা দীর্ঘদিনের ভালোবাসাও নষ্ট করে দিতে সময় নেয় না।


আরও পড়ুন: দুপুরে খাবারের পর ঘুম পাচ্ছে, কোনো রোগ নয় তো


যেমন- 


১. তুমি সব সময় এ রকম করো’ বা ‘তুমি কখনোই এটা পার না


এ ধরনের কথা না বলাই ভাল। বরং সমস্যাটা বুঝিয়ে বলুন, পরিণতিটা বুঝিয়ে আলোচনায় বসুন। আর তা না করলে সঙ্গী ভাববে, তিনি কখনোই ভালো কিছু করেন না। আর এতেই সম্পর্ক শেষের সূচনাটা ঘটে যেতে পারে। তাই একে অপরকে তিরস্কার না করে কীভাবে সম্পর্কের ভীত শক্ত করা যায়, সেই চেষ্টা করাই শ্রেয়।


২. তুমি তো কোনো কাজেই লাগ না


হয়তো সঙ্গী ভুল করেছে। হয়তো কাজটা আপনার আশানুরুপ হয়নি। কিন্তু তাই বলে তাকে পুরোপুরি ‘অকার্যকর’ বলাটা ঠিক কেমন লাগে? আর এটা শুধু কথার আঘাত নয়- এটা আত্মবিশ্বাস ভাঙার মতো। এমন কথা মানুষকে ভেতর থেকেই ছোট করে দেয়। সম্পর্ক তখন ভালোবাসার জায়গায় না দাঁড়িয়ে, বিচার-বিশ্লেষণের মঞ্চে গিয়ে দাঁড়ায়। বরং বলুন- ‘তুমি চেষ্টাটা করেছো, তবে আমি ভাবছিলাম এটা আরেকভাবে করলে কেমন হয়?’


৩. তোমার পরিবারটাই এমন


রাগের সময় হয়তো বলে ফেলেন- তোমার মা-ও তো এমন করতেন বা তোমাদের বাসাতেই তো কেউ কারও কথা শোনে না।’ এই কথাটা শুধু সঙ্গীকে নয়, তার শিকড়কেও অপমান করা হয়। এমন কথা শুনে কেউ আর নিরাপদ অনুভব করে না। বলুন-তোমার এক আত্মীয়ের কথাটা আমার মনে কষ্ট দিয়েছে। একটু বলি কেন?


আরও পড়ুন: বর্ষাকালে সতর্ক থাকুন: যে ৬ ধরনের গাছে সাপের আনাগোনা বেশি


৪. তোমার সাথে বিয়ে করা উচিত হয়নি


এটা শুধুই একটা রাগের কথা নয়। এটা একেবারে সম্পর্কের অস্তিত্বে আঘাত হানে। এমন বাক্য সঙ্গীর মনে গেঁথে যায় দীর্ঘদিন। এমনকি ঝগড়া মিটে যাওয়ার পরও কথাটা রয়ে যায়। বরং বলুন-আমাদের মধ্যে কিছু জিনিস নিয়ে মতভেদ হচ্ছে। চলো, একটু সময় নিয়ে কথা বলি।


৫. তুমি যদি আমায় ভালোবাসতে, তাহলে এটা করতে


এটা আবেগ দিয়ে কাউকে চাপ দেওয়ার মতো কথা। ভালোবাসা যদি পরীক্ষার মুখে পড়ে, তাহলে সেটা ভালোবাসা নয়, বরং নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয় হয়ে যায়। বলুন-তুমি যদি আজকের সন্ধ্যাটা আমার সঙ্গে কাটাতে, আমি সত্যি খুশি হতাম।


৬. তুমি বদলে গেছো


হ্যাঁ, মানুষ বদলায় আর এটাই স্বাভাবিক। সময় বদলায়, দায়িত্ব বাড়ে, তদুপরি ভাবনাও বদলায়। কিন্তু এভাবে বললে মনে হয়, সঙ্গীর পরিবর্তনটা খারাপ কিছু। বরং বলুন-তুমি আগে যেভাবে আমার খেয়াল রাখতে, সেটা মাঝে মাঝে একটু মিস করি।


আরও পড়ুন: বর্ষায় রাস্তায় কাদা! যে সহজ উপায়ে পায়ের যত্ন নিন


৭.  তারকাদের সঙ্গে তুলনা করা


চলচ্চিত্রে যা হয়, তা বাস্তবে চাইলেও সম্ভব না। এমনকি আজকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আমরা যেসব তারকাদের দেখি, তাদের সঙ্গে বাস্তবের জীবনযাপনের সম্পর্ক সামান্যই। তাই তারকাদের সঙ্গে সঙ্গীর তুলনা করে কিছু প্রত্যাশা করলে স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হতে হবে। পর্দার তারকা এবং বাস্তবের জীবনসঙ্গী যে এক নয়, তা আপনাকে বুঝতে হবে। আর এসব বিষয় নিয়ে সঙ্গীর সঙ্গে তর্ক করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। সম্পর্ক বাঁচিয়ে রাখতে চাইলে বাস্তবের মাটিতে পা রাখুন, সঙ্গীর প্রতি প্রত্যাশা হোক যুক্তিসংগত।


বিয়ে মানেই বুঝিয়ে বলা, বোঝার চেষ্টা করা। সম্পর্ক মানেই দায়িত্ব- শুধু খরচ ভাগ করা নয়, কষ্ট-ভালোবাসাও একে অকপরের মাঝে ভাগ করে নেওয়া।


এমএল/