শারীরিকভাবে অক্ষম কাউকে হজে পাঠানো যাবে না: ধর্ম উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:২৯ পিএম, ১৪ই আগস্ট ২০২৫

শারীরিকভাবে সক্ষম নন—এমন কাউকে যেন হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে পাঠানো না হয়, সে বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেবে মন্ত্রণালয় বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ‘হজ ও উমরাহ ফেয়ার ২০২৫’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শারীরিক অক্ষমতার কারণে হজে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়—এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গতবার এমন একজন হাজি গেছেন, যার পা নেই। জামাইয়েরও পা নেই, স্ত্রী’রও নেই। কেন তাকে অনুমোদন দিলেন? সে উমরাহ কীভাবে করবে?”
আরেক উদাহরণ দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “একজনের পায়ের নিচে সিরোসিসসহ মারাত্মক চর্মরোগ; চলাফেরা করতে পারেন না। এজেন্সির লোকেরা তাকে ফেলে চলে গেছে। আমরা লোক দিয়ে তার হজের আরকান-আহকাম সম্পন্ন করিয়েছি। আবার ৮২ বছর বয়সী এক মানসিক রোগীকে পাঠানো হয়েছিল, যিনি হজের আগেই হারিয়ে যান। আমরা তাকে খুঁজে পাইনি। এর আগে পাহাড়ের ওপর এক হাজির কঙ্কালও পাওয়া গিয়েছিল।”
তিনি বলেন, “কেন পাঠাচ্ছেন? শুধু অর্থের জন্য? এবার আমরা কঠোর হবো। সিভিল সার্জনের মাধ্যমে হাবের সঙ্গে পরামর্শ করে ফিটনেস সনদ ছাড়া কাউকে নেওয়া হবে না। যারা শারীরিকভাবে সক্ষম, কেবল তাদেরই পাঠাতে হবে, নইলে হজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না এবং আমাদেরও বিব্রত হতে হয়।”
হজ পালনে নানা সমস্যা নিয়ে সৌদি হজ ও উমরাহ মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার কথা জানিয়ে খালিদ হোসেন বলেন, “ক্যাটারিং সার্ভিস বাতিলের বিষয়ে কথা হয়েছে, কারণ বাংলাদেশি হাজিরা সৌদি খাবারে অভ্যস্ত নন। মিনা, মুজদালিফা ও আরাফাতে টয়লেটের সংখ্যা কম—এই বিষয়টিও তুলে ধরেছি। জায়গা আছে, তাই বাড়ানো উচিত।”
আবাসন সমস্যার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘যে পরিমাণ বেডের জায়গা দিয়েছে, তাতে একজন মানুষ চিৎ হয়ে শোয়ারও সুযোগ নেই। এ বিষয়েও সৌদি মন্ত্রীকে জানিয়েছি এবং তিনি তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’
পানি সংকটের বিষয়েও তিনি বলেন, ‘মুজদালিফাতে শেষ রাতে পানি থাকে না। আমি মিনারেল ওয়াটার দিয়ে অযু করেছি। এটি-ও সৌদি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
এজেন্সি মালিকদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এক পরিবারের মতো সমন্বিতভাবে কাজ করব। সৌদির দেওয়া সময়সীমা মেনে চলতে হবে, না হলে অ্যাপ বন্ধ করে দেওয়া হয়।’
হজের বিমানভাড়া নির্ধারণে স্বচ্ছতার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, “বিমানের সঙ্গে আলোচনায় হাবের প্রতিনিধি থাকবে। আমার মন্ত্রণালয়ে হজ-উমরাহ নিয়ে কেউ ঘুষ নিলে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। এজেন্সির কাছ থেকে টাকা নিলেও একই পরিণতি হবে।”
হজযাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জর্দা, তামাক, সিগারেট নিয়ে সৌদি আরবে যাবেন না। এগুলো আমাদের দেশে মাদক হিসেবে ধরা না হলেও সৌদিতে অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়, যা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে।”
মধ্যসত্ত্বভোগীদের হাত থেকে হজ ব্যবস্থাপনা মুক্ত রাখতে হাবের সহযোগিতা চান ধর্ম উপদেষ্টা।
এসএ/