মধ্যরাতে শাশুড়িকে ফোন, স্ত্রীর মৃত্যুসংবাদ দিয়ে উধাও স্বামী!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৩০ পিএম, ১৪ই আগস্ট ২০২৫

রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় ফাহমিদা তাহসিন কেয়া (২৫) নামে এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী সিফাত আলী (৩০) তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে গেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার ভোররাতে রাজধানীর মিরপুরের পশ্চিম শেওড়াপাড়ার শামীম সরণির ৫৮৩ নম্বর অনামিকা কনকর্ড অ্যাপার্টমেন্টে। নিহত কেয়া স্বামী ও চার সন্তানসহ ওই বাসায় বসবাস করতেন।
খবর পেয়ে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মৃত্যুর কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে তার স্বামী পলাতক।
নিহত ফাহমিদা তাহসিন কেয়ার ফুফু সৈয়দা ফাতেমা জাহান কলি জানান, বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সিফাত আলী তার শাশুড়ি নাজমা বেগমকে ফোন করে জানান- ‘কেয়া খুবই অসুস্থ। আপনারা বাসায় আসেন।’ কী হয়েছে জানতে চাইলে সিফাত একপর্যায়ে স্বীকার করেন যে ‘কেয়া আর বেঁচে নেই’।
এরপর নাজমা বেগমর স্বামীসহ দ্রুত ওই বাসায় পৌঁছান। তারা সেখানে গিয়ে দেখতে পান সিফাত কেয়াকে নিয়ে পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে যাচ্ছেন। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা কেয়াকে মৃত ঘোষণা করলে সিফাত সেখান থেকে উধাও হয়ে যান।
পরে নাজমা বেগম ও তার স্বামী বাসায় ফিরে দেখেন, সিফাত বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন।
কিয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম জানান, সিফাত খুবই বদমেজাজি। সন্তানদের সামনেই কেয়ার সঙ্গে খারাপ আচরণ ও তাকে মারধর করতো। সে নিজে কিছু করে না। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে ভাইবোনের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব চলছিল তার।
রফিকুল ইসলাম বলেন, কেয়ার চার সন্তান। এক মেয়ে ও তিন ছেলে। এরমধ্যে বড় মেয়েটি ভিকারুননিসা স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। কয়েকদিন আগে কেয়া ফোন করে বলছিল, সে আর পারছে না, সংসার করবে না, একেবারে ফিরে আসতে চাইছিল। আমরাই বুঝিয়ে তাকে আটকেছি। ভুল করেছি, আজ তার খেসারত মেয়েটা দিয়ে গেলো!
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, আমার ছোট ছোট নাতি-নাতনিদের এখন কী হবে? আমার মেয়েকে খুন করা হয়েছে। গলায় দাগ দেখেছি। সুস্থ মানুষ হঠাৎ এভাবে মারা যাবে, এমনটা হতে পারে না। অপরাধ না করে থাকলে সিফাত কেন পালাবে?’
ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সিফাতের বাবা দীর্ঘদিন ধরে হংকংয়ে থাকেন এবং সিফাতের মা অনেক আগেই মারা গেছেন।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাত রোমান বলেন, মরদেহ ঢামেক হাসপাতাল মর্গে আছে। সেখানে সুরতহাল করা হবে। এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা, এখনো স্পষ্ট নয়। সুরতহাল, ময়নাতদন্ত ও ঘটনার পুলিশি তদন্তে মৃত্যুরহস্য স্পষ্ট হবে। সে অনুযায়ী, পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এসডি/