শাবিপ্রবিতে ‘প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন’-এর বিক্ষোভ, ৩ দফা দাবিতে সরব শিক্ষার্থীরা
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:০৬ পিএম, ২১শে আগস্ট ২০২৫

ডিপ্লোমা করা শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিএসসি প্রকৌশলীদের ‘কুলাঙ্গার’ বলার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে সারা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার (২০ আগস্ট) ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।
শাবিপ্রবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে দুপুর ১টায় শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, আইপিই, মেকানিক্যাল ও ইইইসহ বিভিন্ন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ব-ঘোষিত তিন দফার সঙ্গে আরও কয়েকটি দাবি তুলে ধরেছেন।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো, পরীক্ষার মাধ্যমে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ৯ম গ্রেডে নিয়োগ নিশ্চিত করা। ২, ১০ম গ্রেড উন্মুক্তকরণ। ৩, বিএসসি ছাড়া ইঞ্জিনিয়ার নয় ‘নীতি বাস্তবায়ন।’
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন যে দেশে ২০ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানে কোনো বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার নেই। তারা বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের প্রাপ্য অধিকার ও সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা বলেন, ডিপ্লোমাধারীদের ১৫তম গ্রেডের চাকরির আবেদন করার যোগ্যতা নেই, অথচ তারাই বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের ‘কুলাঙ্গার বলছে।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী কায়দায় বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। তারা ২০১৩ সালের আন্দোলনের কথা উল্লেখ করেন, যখন ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের 'সুপারভাইজার' পদের পরিবর্তে 'উপসহকারী প্রকৌশলী' পদমর্যাদা এবং 'ডিপ্লোমা প্রকৌশলী' হিসেবে বিবেচিত করার দাবি সরকার মেনে নিয়েছিল। শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তোলেন, "ডিপ্লোমাদের দাবি অযৌক্তিক হলেও সরকার যদি তা মেনে নেয়, তাহলে আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো কেন উপেক্ষা করা হচ্ছে?"
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, "আমারা নাকি কুলাঙ্গার, ১০ম গ্রেড কি তোর বাপ দাদার?", "সবার মুখে এক বয়ান, ডিপ্লোমারা টেকনিশিয়ান", এবং "প্রকৌশল খাতের আগাছা, ডিপ্লোমা তুই ক্ষমা চা"।
প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন, শাবিপ্রবির আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মাছুদ অভিযোগ করেন, "১৩তম গ্রেডের ব্লক সুপারভাইজার, টেকনিশিয়ান বা মেকানিক থেকে ১০০% কোটায় ১০ম গ্রেড দখল করা হচ্ছে। এমনকি বিসিএস ক্যাডারের মতো মর্যাদাপূর্ণ ৯ম গ্রেডের প্রথম শ্রেণির পদেও ৬০-৭০% বা তারও বেশি ডিপ্লোমা কোটা দিয়ে ভরে দেওয়া হচ্ছে। অথচ যাদের ১৫তম গ্রেডের আবেদনের যোগ্যতা নেই, তারা কোটার জোরে ৯ম ও ১০ম গ্রেডে প্রবেশ করছে।"
বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করেন। শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়েছেন, তাদের সকল দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে তারা সারা দেশের প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের একত্রিত করে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
এসডি/